Advertisement
E-Paper

রাতে উদ্ধার তরুণী, বাড়ি ফেরাল পুলিশ

পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাত দেড়টা নাগাদ দেশপ্রিয় পার্কের কাছ থেকে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান লেক থানার দুই সাব-ইনস্পেক্টর অভিষেক রায় এবং রাহুল অধিকারীর নেতৃত্বাধীন পুলিশকর্মীরা। সেখানে তাঁর প্রাথমিক শুশ্রূষা করেন মহিলা পুলিশকর্মীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৪৬
উদ্ধার হওয়ার পরে বাবার সঙ্গে নাজমা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

উদ্ধার হওয়ার পরে বাবার সঙ্গে নাজমা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

রাস্তার এক পাশে দাঁড়িয়ে ঠান্ডায় কাঁপছেন বছর উনিশের এক তরুণী। তাঁকে একা দেখে কোনও মোটরবাইক বা ছোট গাড়ি গিয়ে সামনে দাঁড়াচ্ছে। এবং উত্ত্যক্ত করছে ওই তরুণীকে। দূর থেকে ঘটনাটি নজরে পড়েছিল টহলদার পুলিশ অফিসারদের। গাড়ি ঘুরিয়ে তাঁরা সোজা হাজির হলেন ওই তরুণীর কাছে। পুলিশের গাড়ি দেখেই এলাকা ছেড়ে পালাল উত্ত্যক্তকারীরা। অফিসারেরা গাড়ি থেকে নেমে তরুণীর সঙ্গে কথা বললেও তিনি নিজের নাম ছাড়া আর কিছুই বলতে পারছিলেন না।

পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাত দেড়টা নাগাদ দেশপ্রিয় পার্কের কাছ থেকে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান লেক থানার দুই সাব-ইনস্পেক্টর অভিষেক রায় এবং রাহুল অধিকারীর নেতৃত্বাধীন পুলিশকর্মীরা। সেখানে তাঁর প্রাথমিক শুশ্রূষা করেন মহিলা পুলিশকর্মীরা। কিন্তু গোলমাল দেখা দেয় তরুণীর ঠিকানা নিয়ে। কারণ, তিনি নাম ছাড়া প্রথমে কিছুই বলতে পারেননি। পুলিশ জানিয়েছে, পরের দিন জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে একটি জায়গার নাম বলেন ওই তরুণী। সেই সূত্র ধরেই লেক থানার তৎপরতায় বুধবার রাতে নিজের পরিবারের কাছে ফিরে গিয়েছেন তিনি।

লালবাজার জানিয়েছে, নাজমা খাতুন (নাম পরিবর্তিত) নামে ওই তরুণীর বাড়ি হাওড়ার জগৎবল্লভপুরে। মা-বাবা এবং চার ভাই-বোনের সংসারে তিনি সবচেয়ে ছোট। রবিবার দুপুরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় তিনি। রাতে আর ফেরেননি। কোথাও খোঁজ না পেয়ে পরিবারের সদস্যেরা ঘটনাটি জানান জগৎবল্লভপুর থানায়। সেখানকার পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে বুধবার বিকেলে নাজমার বাবা লেক থানায় এসে মেয়েকে নিয়ে যান। মেয়েকে ফিরে পাওয়ার পরে পুলিশ অফিসারদের জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

কী ভাবে ওই তরুণীর পরিবারের খোঁজ মিলল?

তদন্তকারীরা জানান, টহলদার অফিসারদের প্রাথমিক কাজ ছিল ওই তরুণীকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা। সেটা করার পরেই তাঁরা স্থানীয় মহিলাদের সাহায্যে তাঁকে নিয়ে হাজির হন থানায়। এক অফিসার জানান, নাজমা মানসিক ভাবে সুস্থ ছিলেন না। ওই রাতে বিভিন্ন থানায় যোগাযোগ করা হলেও তাঁর ঠিকানার সন্ধান পাওয়া যায়নি। কিন্তু, সারা রাত ধরে থানার পুলিশকর্মীরা কথা বলার পরে নাজমা নিজের নামের সঙ্গে ‘নরেন্দ্রপুর’ বলে একটি জায়গার নাম বলেন। এর পরেই ভোটার তালিকা এবং ইন্টারনেট ঘেঁটে ওই জায়গা এবং তরুণীর নাম খোঁজা শুরু করেন লেক থানার অফিসারেরা। বিভিন্ন জায়গায় ফোন করার পরে জগৎবল্লভপুর থানা এলাকায় ওই জায়গা এবং এক তরুণীর নিখোঁজ হওয়ার খবর পান তাঁরা।

এর পরেই বুধবার জগৎবল্লভপুর থানার পুলিশ নাজমার গ্রামে যায়। সেখান থেকে নাজমার একটি ছবি পাঠানো হয় লেক থানার তদন্তকারীদের কাছে। দুই ছবি মিলে যাওয়ার পরে রাতেই লেক থানায় এসে উপস্থিত হন নাজমার বাবা। পরিবারের সদস্যদের থেকে পুলিশ জেনেছে, কয়েক বছর ধরে মানসিক রোগের চিকিৎসা চলছে ওই তরুণীর। কিন্তু অভাবের সংসারে সেই চিকিৎসা অনিয়মিত হয়ে গিয়েছে। রবিবার সবাইকে এড়িয়ে বেরিয়ে পড়েন নাজমা। উদ্ধারকারী এক পুলিশকর্মীর কথায়,‘‘রাতের শহরে যে ভাবে ওই তরুণী দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাতে যে কোনও কিছু ঘটতে পারত। কিন্তু আমরা সময়ে পৌঁছনোয় তা হয়নি।’’

Missing Rescue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy