Advertisement
১৯ মে ২০২৪

জমা জল সর্বত্রই, ভাসছে লার্ভাও

একাধিক বার বলা সত্ত্বেও এবং বিশেষ আর্থিক অনুদান দেওয়ার পরেও কেন তারা আশানুরূপ কাজ করল না, তার জন্য কৈফিয়ত তলব করেছে পুর দফতর। দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ওই সাত পুরসভার চেয়ারম্যানকে চিঠি লিখেছেন।

কাজল গুপ্ত
শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৭ ০০:৫৬
Share: Save:

ডেঙ্গি ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে রাজ্য সরকার নির্দেশ দিলেও বিধাননগর, দমদম, কামারহাটি, বরাহনগর, দক্ষিণ দমদম, রিষড়া ও শ্রীরামপুর পুরসভা এ ব্যাপারে সন্তোষজনক কাজ করতে পারেনি বলে মনে করছে প্রশাসন। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের আধিকারিকেরা ওই সব পুর এলাকায় পরিদর্শন করতে গিয়ে বহু জায়গায় জমা জল দেখতে পেয়েছেন। মিলেছে লার্ভাও। একাধিক বার বলা সত্ত্বেও এবং বিশেষ আর্থিক অনুদান দেওয়ার পরেও কেন তারা আশানুরূপ কাজ করল না, তার জন্য কৈফিয়ত তলব করেছে পুর দফতর। দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ওই সাত পুরসভার চেয়ারম্যানকে চিঠি লিখেছেন।

এ দিকে, সোজা আঙুলে ঘি না ওঠায়, এ বার তা বাঁকাতে হল দক্ষিণ দমদম পুরসভাকে। দেরিতে হলেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া রোধে মশার লার্ভা খোঁজার কাজ শুরু করেছে ওই পুরসভা। কিন্তু কয়েকটি বাড়িতে পুরকর্মীরা ঢোকার অনুমতি পাননি বলেই অভিযোগ। শুক্রবার তাই সেই বাড়িগুলিতে পুলিশ নিয়ে হাজির হন পুরকর্মীরা। বাড়ির সামনে পুলিশ দেখে দরজা খুলে গেলে নিজেদের কাজে ভিতরে ঢুকে পড়েন পুর কর্মীরা।

পুলিশ দিয়ে দরজা খুলিয়ে এ দিন এমনই একটি বাড়ির সরু সিঁড়ি দিয়ে পারিষদদের সঙ্গে নিয়ে ছাদে উঠে যান দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান। সেখানে পৌঁছেই চক্ষু চড়কগাছ। ছাদের উপরে টবে সার দিয়ে রাখা গাছ। চার দিকে ছড়িয়ে ডাবের খোলা। টবের জলে, ডাবের খোলার জমা জলে কিলবিল করছে মশার লার্ভা।

ছাদে এত ডাবের খোলা কেন?

এক পুরকর্তার মন্তব্য, রাস্তা থেকে ওই ডাবের খোলা কুড়িয়ে এনে ছাদে রাখেন বলে দাবি গৃহকর্ত্রীর। সেগুলি নাকি তাঁর কাজে লাগে।

ওই বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নিল পুরসভা? পরকর্তরা জানাচ্ছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি ছাদ পরিষ্কার করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন গৃহকর্ত্রী। চেয়ারম্যান তাঁকে স্পষ্ট জানিয়েছেন, এক সপ্তাহ পরে তিনি ফের ওই বাড়ির অবস্থা দেখতে যাবেন। তার পরে যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেওয়া হবে।

দিনভর এ ভাবেই দক্ষিণ দমদমের মধুগড়ে ঘুরে নানা বাড়ির হাল দেখলেন পুরকর্মীরা। কয়েক সপ্তাহ ধরেই দক্ষিণ দমদমের কিছু ওয়ার্ডে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। এর মধ্যে সব থেকে খারাপ অবস্থা মধুগড়ের। তাই এ দিন ওই এলাকায় বিশেষ অভিযান চালায় পুরসভা। পুর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, জমা জল সরানো, মশার তেল স্প্রে করা, জঞ্জাল সাফ করা রোজ চলবে। দমদম রোডের দু’ধারের এলাকাগুলিতে বিশেষত ১২ থেকে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রাথমিক ভাবে এই অভিযান চালানো হবে বলে পুরসভা সূত্রের দাবি।

দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘কিছু বাড়িতে গিয়েছিলাম। মশার আঁতুড়ঘর তৈরি করে রেখেছেন বাসিন্দারা। সচেতনতায় জোর দিচ্ছি। বাসিন্দারা সাড়া না দিলে কঠোর পদক্ষেপ করতে বাধ্য হবে পুর প্রশাসন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Malaria Mosquito Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE