Advertisement
E-Paper

নজরে মাদার হাউস, বড়দিনের আনন্দ ঘিরে রইল আতঙ্কের রেশ

একে বড়দিন, তায় মাদার হাউস। সামনের ভিড়টা থিকথিকে হওয়ারই কথা ছিল। সান্তা টুপি, নতুন জামা পরে কচি-কাঁচাদের ভিড়। শহরে বেড়াতে আসা বিদেশিনী, প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জ থেকে আসা মাদার টেরিজার একনিষ্ঠ ভক্ত — সব মিলিয়ে একটা মেলানো-মেশানো ভিড়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:৪৩
হাউসের সামনে পুলিশ-প্রহরা। রবিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

হাউসের সামনে পুলিশ-প্রহরা। রবিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

একে বড়দিন, তায় মাদার হাউস। সামনের ভিড়টা থিকথিকে হওয়ারই কথা ছিল।

সান্তা টুপি, নতুন জামা পরে কচি-কাঁচাদের ভিড়। শহরে বেড়াতে আসা বিদেশিনী, প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জ থেকে আসা মাদার টেরিজার একনিষ্ঠ ভক্ত — সব মিলিয়ে একটা মেলানো-মেশানো ভিড়।

যদিও রবিবার দুপুরের পরে মাদার হাউসের সামনের সেই ভিড়ের দখল নিল সাদা, জলপাই পোশাকের পুলিশ। উৎসবের মেজাজের মাঝে আচমকা এই ছন্দপতনে বিস্ময় খেলে গেল অতিথিদের চোখ-মুখে। আচমকা বড়দিনে এত পুলিশ কেন— ছিটকে এল প্রশ্নটা।

পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সকালে খবর আসে সন্দেহভাজন ইসলামিক স্টেট বা আইএস জঙ্গি মহম্মদ মুসাউদ্দিন ওরফে মুসা, যাকে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) সম্প্রতি গ্রেফতার করেছে, সে-ই নাকি বড়দিনে মাদার হাউসের সামনে হামলার ছক কষেছিল। কিন্তু যে হামলার ছক কষেছিল, সে-ই তো জেলে। তা হলে ভয় কীসের? পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, এমনিতেই বড়দিন উপলক্ষে নিরাপত্তার উপরে বিশেষ নজর দেওয়া হয়। তার উপরে নির্দিষ্ট টার্গেট। মুসা ধরা পড়লেও আইএস জঙ্গিদের অন্য কেউ হামলা করে দেবে না, তার কোনও নিশ্চয়তা আছে কি? প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশকর্তারাই।

বিষয়টি এ দিন আরও গুরুত্ব পায় মাদার হাউস থেকে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করার পরে। এ দিন মাদার হাউসে গেলে সেখানকার এক সিস্টার (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, সকালে মুসার হুমকির খবর টিভি মারফত জানতে পেরে আশঙ্কিত হন সিস্টারেরা। তাঁদের বক্তব্য, বড়দিন ও নতুন বছর উপলক্ষে বহু মানুষ মাদার হাউসে আসেন। এই সুযোগে কোনও অবাঞ্ছিত লোক মাদার হাউসে ঢুকে পড়ে নাশকতামূলক কিছু করলে তার প্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁদের আবেদন, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশেষ পুলিশি পাহারার ব্যবস্থা যেন থাকে।

এই আর্জি মেনেই, রবিবার দুপুর থেকে কলকাতা পুলিশের বিশাল বাহিনী মাদার হাউসের সামনে উপস্থিত হয়ে যায়। সাধারণ পুলিশকর্মী ছাড়াও কমব্যাট ফোর্সের কর্মীরাও পাহারায় ছিলেন। তাঁদের সামনে দিয়েই বহু মানুষ মাদার হাউসে যাতায়াত করেছেন।

বর্ধমান স্টেশনে এনআইএ-র হাতে গত ৪ জুলাই মুসা ধরা পড়ে। তাঁকে দীর্ঘ জেরার পরে জানা যায়, মাদার হাউস আক্রমণ করা ছিল তার অন্যতম টার্গেট। ধরা পড়ার মাস তিনেক আগে কলকাতায় এসে, চার দিন থেকে মাদার হাউসে সে ‘রেইকি’ও করেছিল। গত ২৩ ডিসেম্বর কলকাতার এনআইএ আদালতে মুসার বিরুদ্ধে পেশ করা চার্জশিটে মাদার হাউসে হামলা চালানোর বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশের অনুমান, সেই খবরটিই এ দিন ছড়িয়ে পড়ার পরে এই হইচই শুরু হয়।

এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশেষত সাদা চামড়া পশ্চিমী দেশের নাগরিকদের উপরে হামলা চালানোর ভার ছিল মুসার উপরে। তালিকায় ছিল মাদার হাউস। ঠিক ছিল, বড়দিনে সুযোগ বুঝে ছোরা নিয়ে সেখানে অতর্কিতে হামলা চালাবে মুসা। যে বাংলাদেশি নাগরিক আবু সুলেমানের হাত ধরে আইএস জঙ্গি সংগঠনে নাম লিখিয়েছিল মুসা, সেই সুলেমানই মুসাকে মাদার হাউসে হামলা চালানোর দায়িত্ব দিয়েছিল বলে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা জানিয়েছেন।

Mother house IS attack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy