চুরি হয়ে যাচ্ছে পার্কিং থেকে বাইক। নাগেরবাজারে। নিজস্ব চিত্র
একটু অন্যমনস্ক হলেই হল, চোখের পলক ফেলতে না ফেলতে উধাও হয়ে যাচ্ছে মোটরবাইক। তার পরে হাত ঘুরে চলে যাচ্ছে পাচারকারীর হাতে। ভোল বদলে সেই চোরাই মোটরবাইকের ইঞ্জিন লাগানো হচ্ছে ভ্যানরিকশা বা নৌকায়। যে সব জায়গায় মানুষ একটু অসতর্ক থাকেন, যেমন হাসপাতাল, নার্সিংহোম, ডায়াগনস্টিক সেন্টার— সেই সব এলাকা থেকে নিমেষে উধাও হয়ে যাচ্ছে মোটরবাইক। দমদম থানা এলাকায় একের পর এক এমন চুরির ঘটনা ঘটলেও ধরা পড়েনি এক জনও।
দিন কয়েক আগে স্ত্রীর রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট নেওয়ার জন্য নাগেরবাজারের কাছে কাজিপাড়ায় উড়ালপুলের নীচে মোটরবাইক রেখে গিয়েছিলেন কদমতলার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ সাহা। বাইকটি তালা দেওয়াও ছিল। বিশ্বজিৎবাবুর কথায়, ‘‘মিনিট দুই পরেই দেখি মোটরবাইকটি নেই। খোঁজাখুঁজি করেও কোনও লাভ হয়নি।’’ পরে নাগেরবাজার ট্র্যাফিক পুলিশে বিষয়টি জানান বিশ্বজিৎবাবু। দমদম থানায় অভিযোগ জানান। কিন্তু মোটরবাইক উদ্ধার হয়নি।
নাগেরবাজার সংলগ্ন ওই এলাকায় মোটরবাইক চুরি নিয়ে খোঁজ নিতে গেলে ঘিরে ধরলেন এলাকার দোকানি ও বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, প্রায়ই কেউ না কেউ এসে অভিযোগ করছেন, তাঁদের মোটরবাইক বা সাইকেল চুরি হয়ে গিয়েছে। এক ট্যাক্সিচালকের কথায়, ওই এলাকায় বিভিন্ন নার্সিংহোম, রক্ত পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। অনেক সময়েই রোগীর আত্মীয়েরা মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন। সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়ে চুরি হচ্ছে। আরও অভিযোগ, সামনেই ট্র্যাফিক পুলিশের অফিস এবং কামারডাঙা ফাঁড়ি রয়েছে। কিন্তু নজরদারি নেই।
পুলিশ সূত্রের খবর, মোটরবাইক চুরি চক্রের একটি দল কিছু দিন পরপর জায়গা বদলে এ কাজ করে। এমনই একটি চক্র এখন দমদমে কাজ করছে। কৈখালির একটি জায়গায় চোরাই বাইক জড়ো করা হচ্ছে। সেখান থেকে রাজারহাট, বারাসতের মাকড়সাপুকুর হয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট কিংবা বনগাঁর দিকে চলে যায়। তার পরে সেই ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ আলাদা করা হয়। বেআইনি ভ্যানো (মোটরচালিত ভ্যান রিকশা) কিংবা নৌকায় সেই মোটর লাগিয়ে নেওয়া হয়। অন্য যন্ত্রাংশও বিক্রি হয়ে যায়। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, একটি চক্র সম্প্রতি ধরাও পড়েছে। তাদের কাছ থেকেই এই তথ্য মিলেছে। দমদমের চক্রটিরও খোঁজ চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy