Advertisement
E-Paper

মুরারিপুকুরে কলেজছাত্রের রহস্য-মৃত্যু

এ দিন মুরারিপুকুরে গিয়ে দেখা যায়, ছোট এক কামরার ঘরে সৌরভদের সংসার। তাঁর বাবা সুশান্ত মণ্ডল হাটে কাপড় বিক্রি করেন, মা রীতা মণ্ডল গৃহবধূ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৮ ০২:২৪
সৌরভ মণ্ডল

সৌরভ মণ্ডল

ছেলেকে ফোন করে মা বলেছিলেন, তিনি একটু বেরোচ্ছেন। গ্যাসে রান্না বসানো আছে। ছেলে যেন একটু নামিয়ে নেন। ফোনে কথা বলার সময়ে কোনও অস্বাভাবিকতা টের পাননি মা। এর কিছু ক্ষণ পরেই ওই মহিলাকে ফোন করেন প্রতিবেশীরা। জানান, তাঁর ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তড়িঘড়ি বাড়ি ফিরে মা দেখেন, নেতিয়ে পড়েছে ছেলে। দ্রুত আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি ওই তরুণকে।

সোমবার মানিকতলা থানা এলাকার মুরারিপুকুর মেন রোডের এই ঘটনায় রহস্য দেখা দিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সৌরভ মণ্ডল (১৯)। তিনি বিদ্যাসাগর কলেজে স্নাতক স্তরে ভূগোল নিয়ে পড়াশোনা করতেন। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই ছাত্র। সৌরভের ঘর থেকে একটি কীটনাশকের কৌটো উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের দাবি, ওই কীটনাশক সাপ বা পোকামাকড় মারার জন্য ব্যবহার করা হয়। এক তদন্তকারী অফিসার জানিয়েছেন, মায়ের কাছে সম্প্রতি বকুনি খেয়েছিলেন সৌরভ। তার জন্যই তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন কি না, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। ওই ছাত্রের হাতের পাতায় লেখা ছিল, ‘আড়াই হাজার টাকা খাতায় রাখা আছে।’ কেন তিনি হাতের পাতায় এমন লিখে রেখেছিলেন, তা-ও দেখা হচ্ছে।

এ দিন মুরারিপুকুরে গিয়ে দেখা যায়, ছোট এক কামরার ঘরে সৌরভদের সংসার। তাঁর বাবা সুশান্ত মণ্ডল হাটে কাপড় বিক্রি করেন, মা রীতা মণ্ডল গৃহবধূ। বছর দশেকের এক ভাই রয়েছে সৌরভের। তাঁর ঠাকুরমা বিমলা মণ্ডল বলেন, ‘‘পড়াশোনায় খুব মন ছিল নাতির। খালি বলত, ভাল চাকরি পেয়ে সংসারের অভাব ঘোচাবে। সেই ছেলে হঠাৎ কেন এমন করল, বুঝতেই পারছি না।’’

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ছিল সৌরভের ভাই গৌরবের জন্মদিন। সে ওই দিন বিরিয়ানি খাওয়ার জন্য বায়না করছিল। তার জন্য সুশান্তবাবু গৌরবকে বকাবকি করেন। পুলিশ জেনেছে, এর আগে রথের দিনও রথ কেনার জন্য বায়না করে বকুনি খেয়েছিল গৌরব। সৌরভের ঠাকুরমার দাবি, ‘‘ভাই পরপর বকুনি খাওয়ায় মনমরা ছিল বড় নাতি।’’

সৌরভদের এক আত্মীয় জানান, এ দিন ঘটনার কিছু ক্ষণ আগে সৌরভের মোবাইলে একটি ফোন আসে। তার মা রীতাদেবী জানিয়েছেন, ছেলে ফোনে উত্তেজিত হয়ে কথা বলছিল। তিনি বলেন, ‘‘এক বন্ধু কয়েক দিন ধরে ওকে খুব উপেক্ষা করছিল। ও ছিল খুব স্পর্শকাতর মনের ছেলে। কোথা থেকে যে কী হয়ে গেল!’’

Student DEath Mysterious death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy