Advertisement
E-Paper

বিস্ফোরণ প্রশ্ন তুলে দিল উড়ালপুলের সুরক্ষা নিয়েও

দমদমের কাজিপাড়ায় যে বোমাটি ফেটেছে, সেটিকে ‘লো ইন্টেনসিটি ক্রুড সকেট বম্ব’ বলছেন বিশেষজ্ঞেরা। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেখে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক পুলিশকর্তার অভিমত, নামে ‘লো ইন্টেনসিটি’ হলেও বোমার অভিঘাত ছিল যথেষ্ট শক্তিশালী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:৪২
নাগেরবাজার উড়ালপুল। ফাইল চিত্র

নাগেরবাজার উড়ালপুল। ফাইল চিত্র

গাঁধী জয়ন্তীর দিন সাতসকালে দমদমের কাজিপাড়ায় বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল আশপাশের সমস্ত বাড়ি। প্রায় সব বাড়িতেই ভেঙেছে দরজা-জানলার কাচ, কোথাও ভেঙেছে আলমারির পাল্লা। ঘটনাস্থল থেকে মেরেকেটে ৫০ ফুট দূরে নাগেরবাজার উড়ালপুল। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, বিস্ফোরণের অভিঘাতে সেটির কোনও ক্ষতি হয়নি তো? বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, বোমার অভিঘাত এতই তীব্র ছিল যে উড়়ালপুলের কোনও ক্ষতি হয়েছে কি না দেখতে সেটিকে সেতু বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করানো প্রয়োজন।

সম্প্রতি মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরে অভিযোগ উঠেছিল, ওই এলাকায় মেট্রো রেলের স্তম্ভ বসানোর সময়ে কম্পনের চোটে সেতুটি সামগ্রিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। যা থেকে ঘটে বিপর্যয়। যদিও এখনও পর্যন্ত সেই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।

দমদমের কাজিপাড়ায় যে বোমাটি ফেটেছে, সেটিকে ‘লো ইন্টেনসিটি ক্রুড সকেট বম্ব’ বলছেন বিশেষজ্ঞেরা। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেখে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক পুলিশকর্তার অভিমত, নামে ‘লো ইন্টেনসিটি’ হলেও বোমার অভিঘাত ছিল যথেষ্ট শক্তিশালী। যার জন্য বিস্ফোরণস্থল থেকে ২৭ ফুট দূরের দোকানের শাটার দুমড়ে বেঁকে গিয়েছে। ওই জায়গা থেকে বেশ কিছুটা দূরে থাকেন গোপাল কর্মকার নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘‘কানফাটানো আওয়াজের সঙ্গে সঙ্গে বাড়িটা এমন কেঁপে উঠেছিল যে প্রথমে ভেবেছিলাম ভূমিকম্প হয়েছে।’’

কাজিপাড়ার ঘটনাস্থল থেকে গোপালবাবুর বাড়ির দূরত্ব প্রায় ১০০ ফুট। তার থেকে অনেক কম দূরত্বে নাগেরবাজার উড়ালপুল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, উড়ালপুলের কোনও ক্ষতি হয়েছে কি না, সেটা সাধারণত নির্ভর করে বিস্ফোরণের তীব্রতার উপরে। কোথাও জোরালো বিস্ফোরণ হলে তার কম্পন মাটির নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতা বেশি হলে সেই কম্পন ভূগর্ভ দিয়ে অনেক বেশি দূরত্বে ছড়িয়ে পড়ে। তাই কম্পনের মাত্রা কতটা, সেটা পরিমাপ করা প্রাথমিক ভাবে জরুরি। বুধবার সারা দিন কাজিপাড়ায় ছিলেন সিআইডির বম্ব স্কোয়াড ও কেন্দ্রীয় সরকারের ফরেন্সিক দলের বিশেষজ্ঞেরা। সিআইডি-র এক কর্তা বি কে খান বলেন, ‘‘কম্পনটি কতটা ছড়িয়েছে, তা আমরা
পরীক্ষা করে দেখছি। আরও কিছু পর্যবেক্ষণ দরকার।’’

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেটিরিয়াল বিশেষজ্ঞ সোমনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘নাগেরবাজার উড়ালপুলে কোনও ফাটল দেখা দিয়েছে কি না অথবা কোথাও কোনও চাঙড় খসে পড়েছে কি না, তা আগে খালি চোখে ভাল করে দেখা দরকার। যদি এমন কিছু ক্ষতি হয়ে থাকে, তা হলে নন-ডেস্ট্রাকটিভ টেস্ট যেমন ‘আল্ট্রাসাউন্ড পাল্স ভেলোসিটি টেস্টের’ মাধ্যমে তার পরিমাপ করতে হবে।

কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়ারেরা অবশ্য জানিয়েছেন, শহরের সব উড়ালপুলেরই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার কাজ শুরু হয়েছে। নাগেরবাজার উড়ালপুলেরও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। সেটির কোনও ক্ষতি হয়েছে কি না, তা তখনই দেখে নেওয়া হবে।

Nagebazar Blast Flyover Damage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy