আদিগঙ্গার দূষণ মামলায় এ বার জুড়ে গেল কেন্দ্রও। এর সংস্কার কী ভাবে করা যায়, তা নিয়ে এত দিন রাজ্য ও কলকাতা পুরসভার জবাব তলব করা হয়েছে। সোমবার কলকাতার জাতীয় পরিবেশ আদালতের বিচারপতি এস পি ওয়াংদি ও বিশেষজ্ঞ-সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, মামলায় জাতীয় গঙ্গা অববাহিকা কর্তৃপক্ষ, কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রক এবং কেন্দ্রীয় জলসম্পদ, নদী উন্নয়ন এবং গঙ্গা পুনরুজ্জীবন মন্ত্রককে যুক্ত করতে হবে। কী ভাবে আদিগঙ্গার দূষণ রোখা যায়, সে ব্যাপারে তাদের বক্তব্যও জানতে চাওয়া হয়েছে।
রবিবার আদিগঙ্গা ঘুরে নজরে এসেছিল জলে ও পাড়ে জমে থাকা জঞ্জাল। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তও আদিগঙ্গা পরিদর্শন করে ছবি-সহ রিপোর্ট দেন আদালতে। তার ভিত্তিতে ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, আদিগঙ্গায় নোংরা ফেললে পুরসভার জরিমানা নেওয়া উচিত। আদিগঙ্গার পাড়ের বর্জ্যও রোজ সাফ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ দিনের নির্দেশের পরে পরিবেশকর্মীরা জানান, গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানের দ্বিতীয় দফায় আদিগঙ্গা সংস্কারের কথা বলা হলেও কাজ হয়নি। এ বার জাতীয় গঙ্গা অববাহিকা কর্তৃপক্ষকে যুক্ত করায় সেই কাজ ত্বরান্বিত হবে বলে তাঁদের আশা। সুভাষবাবুর কথায়, ‘‘আদিগঙ্গা কার্যত জাতীয় ইস্যু হয়ে উঠল।’’
বন ও পরিবেশ মন্ত্রককে মামলায় যুক্ত করার নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন পরিবেশকর্মীরা। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন মুখ্য আইন আধিকারিক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় জানান, গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানে অন্যতম বিষয় পরিবেশ দূষণ রোধ। কিন্তু সেই কাজে কখনও পরিবেশ দফতর বা পর্ষদকে যুক্ত করা হয়নি।
আদিগঙ্গার জল পরীক্ষা করে পর্ষদ আদালতে জানিয়েছিল, সেখানে দ্রবীভূত অক্সিজেন প্রায় শূন্য। ব্যাক্টেরিয়াও মাত্রাতিরিক্ত। পরিবেশবিদদের একাংশের ব্যাখ্যা, এর জন্য দায়ী আদিগঙ্গার পাড়ের খাটাল, খামার ও বস্তির খাটা পায়খানা। শহরের নিকাশিও সরাসরি আদিগঙ্গায় পড়ায় দূষণ হচ্ছে। রবিবার আদিগঙ্গায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, বহু পাকা শৌচাগারের নালা দিয়ে মল-মূত্র জলে এসে পড়ছে। ভাসছে প্লাস্টিক-সহ নানা বর্জ্য। আবার জোয়ারের সময়ে আদিগঙ্গার জলেই স্নান, কাপড় কাচছেন লোকজন।
আদিগঙ্গার দূষণ রুখতে কী করা হয়েছে, পুরসভার কাছে জানতে চেয়েছিল পরিবেশ আদালত। সেই রিপোর্ট এ দিন জমা পড়েনি। আদিগঙ্গার দূষণ রুখতে যে বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি হয়েছে, জমা পড়েনি সেটিও। সুভাষবাবু জানান, ২০১৫ সালে মুখ্যসচিব জানিয়েছিলেন, ওই রিপোর্ট তৈরি। এই দুই রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য ফের সময় দিয়েছে আদালত। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৭ জানুয়ারি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy