হরিদেবপুর থানা এলাকার কৈলাস ঘোষ রোডের ভাড়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল মাম্পি দাস নামে এক গৃহবধূর দেহ। প্রতীকী ছবি।
গত বৃহস্পতিবার সরস্বতী পুজোর সন্ধ্যায় হরিদেবপুর থানা এলাকার কৈলাস ঘোষ রোডের ভাড়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল মাম্পি দাস (২৪) নামে এক গৃহবধূর দেহ। রবিবার মালদহ থেকে তাঁর মা মালা দাস দাবি করলেন, সরস্বতী পুজোর আগের দিন স্বামীর মোবাইল ঘেঁটে তাঁর সঙ্গে এক মহিলার ‘ঘনিষ্ঠতার’ একাধিক প্রমাণ পেয়েছিলেন মাম্পি। সে কথা ফোন করে মাকে জানিয়েও ছিলেন তিনি। মালার আরও দাবি, পণের দাবিতে অত্যাচারের পাশাপাশি স্বামীর অবৈধ সম্পর্কের বিষয়ে জেনে ফেলাতেই তাঁর মেয়েকে ‘মেরে ফেলা’ হয়েছে। মাম্পির বিয়ের সময়ে দেওয়া কয়েক ভরি সোনার গয়না অভিযুক্তেরা বিক্রি করে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন মালা।
এই ঘটনায় মৃতের পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে শুক্রবার মাম্পির ননদাইকে প্রথমে গ্রেফতার করেছিল হরিদেবপুর থানার পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় মৃতার স্বামী প্রণয় চন্দ্র-সহ বাকি তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের রবিবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। মাম্পির ননদাই বিশ্বজিৎ মণ্ডলকে শনিবারই আদালত ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল।
মেয়ের রহস্য-মৃত্যুতে শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনেছেন মাম্পির পরিজনেরা। রবিবার মালদহ থেকে ফোনে মালা জানান, তিনি মেয়ের বিয়েতে ছ’ভরিরও বেশি সোনা দিয়েছিলেন। পরবর্তী কালে আরও সোনা দেওয়া হয়। কিন্তু সমস্ত কিছু মাম্পির থেকে কেড়ে নিয়ে প্রণয় বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ মালার। তাঁর কথায়, ‘‘মেয়ের সংসারের কথা ভেবেই কিছু বলতাম না। সব মেনে নিয়েছিলাম।’’ মাসখানেক আগে মালদহের বাড়িতে মাম্পি এসেছিলেন। সেই সময়েও তাঁরা বেশ কয়েকটি আংটি গড়িয়ে দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন মালা। তাঁর দাবি, কয়েক দিন আগে ওই আংটিগুলিও প্রণয় বিক্রি করে দেন।
ওই গৃহবধূর পরিজনদের আরও দাবি, এক মহিলার সঙ্গে স্বামীর ঘনিষ্ঠতার কথা জেনে ফেলাও তাঁর মৃত্যুর কারণ হতে পারে। মাম্পির মা বলেন, ‘‘সরস্বতী পুজোর আগের দিন প্রণয়ের মোবাইল ঘেঁটে একাধিক তথ্য পেয়েছিল মেয়ে। সেখান থেকেই জানতে পারে, এক মহিলার সঙ্গে সব সময়ে প্রণয়ের কথা বলার বিষয়টি। সে কথা ও আমাকে জানিয়েছিল। মেয়েটির সম্পর্কে প্রণয়কে জিজ্ঞাসা করেছিল মাম্পি। তার পরেই প্রণয় বিবাহবিচ্ছেদের জন্য ওকে চাপ দিতে থাকে।’’ মাম্পির শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ পুলিশ খতিয়ে দেখছে। তদন্তকারী এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে একাধিক প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy