Advertisement
E-Paper

থ্যালাসেমিয়া নির্মূলে সচেতন হোক নয়া প্রজন্ম

বছর সাতেক আগে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে থ্যালাসেমিয়া সংক্রান্ত একটি আলোচনা সভা করতে চেয়েছিল। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরেও ছাত্রছাত্রীদের দেখা মেলেনি।

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:১০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বছর সাতেক আগে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে থ্যালাসেমিয়া সংক্রান্ত একটি আলোচনা সভা করতে চেয়েছিল। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরেও ছাত্রছাত্রীদের দেখা মেলেনি। চিকিৎসকেরা জানান, সেই ছবি এখনও খুব একটা বদলায়নি। তাই রাজ্যকে থ্যালাসেমিয়া মুক্ত করতে সবার আগে শিক্ষাঙ্গনের সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন।

এনআরএসের হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান প্রান্তর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এ রাজ্যে এখন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ২৫-৩০ হাজার। এর উপরে প্রতি বছর হাজার পাঁচেক থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত বাচ্চা জন্মায়।’’ স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, আগামী বছরের মধ্যে থ্যালাসেমিয়া চিহ্নিতকরণ কেন্দ্র ২৬টি থেকে বাড়িয়ে ৪০টি করা হচ্ছে। এর ফলে বছরে অন্তত ৮ লক্ষ ‘স্ক্রিনিং’ সম্ভব হবে।

থ্যালাসেমিয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজ্য থেকে এই রোগকে বিদায় করতে হলে থ্যালাসেমিয়া বাহকের সঙ্গে যাতে কোনও ভাবেই আরেক জন বাহকের বিয়ে না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। সে জন্য স্কুল ও কলেজ স্তরের ছাত্রছাত্রীদের রক্তে থ্যালাসেমিয়ার বাহক রয়েছে কি না, তা জানা দরকার। স্বাস্থ্যভবনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কলেজের ছাত্রছাত্রীদের বোঝানো যায় না। থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করাতে ছাত্রছাত্রীদের রীতিমতো অনুনয়-বিনয় করতে হয়। তাই আমরা এখন সরকারি স্কুলের নবম ও দশম শ্রেণিদের ছাত্রছাত্রীদের থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করাতে জোর দিচ্ছি। রাজ্যের সব স্কুলে থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করানো সম্ভব হলে আগামী ১০ বছরে আশানুরূপ সাফল্য পাওয়া সম্ভব।’’

চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ২০০২ সালে ‘জয় বিজ্ঞান মিশন’ নামে একটি প্রকল্পের সমীক্ষায় দেখা যায়, এ রাজ্যে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা দেশের তুলনায় অনেক বেশি। তখনই রাজ্য নিজস্ব বাজেটে কাজ শুরুর সিদ্ধান্ত নিলে এনআরএস এবং কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে— এই দু’টি হাসপাতালে দু’টি নোডাল সেন্টার তৈরি হয়। রাজ্যের কাজের তিনটি মূল লক্ষ্যের অন্যতম ছিল, সচেতনতা বৃদ্ধি।

এনআরএসের হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান প্রান্তর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সচেতনতার মূলত দু’টি দিক। বিয়ের আগে পাত্র এবং পাত্রী— দু’জনেই থ্যালাসেমিয়া বাহক কি না, তা পরীক্ষা করা জরুরি। একই সঙ্গে দু’জনের মধ্যে এক জন যদি থ্যালাসেমিয়া বাহক না হন, তাহলে সুস্থ দাম্পত্য জীবন এবং সন্তানধারণে যে কোনও সমস্যা নেই তা প্রচার করা।’’

থ্যালাসেমিয়া নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে গৌতম গুহ বলেন, ‘‘বিয়ের রেজিস্ট্রির সময়ে থ্যালাসেমিয়া ক্যারিয়ার টেস্টের সার্টিফিকেট জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হোক।’’ থ্যালাসেমিয়া বিশেষজ্ঞ প্রশান্ত চৌধুরী বলেন, ‘‘স্কুলস্তরে থ্যালাসেমিয়া নিয়ে বিশদে পাঠ্যক্রম থাকা উচিত। স্ক্রিনিংয়ের কাজ আরও পরিকল্পনামাফিক করতে হবে।’’

স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘স্কুল-কলেজে কর্মসূচি নিয়ে থাকি। সচেতনতার কাজ চলছে।’’

Health New Generation Thalassemia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy