ফাইল চিত্র।
করোনা আবহে গঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন করার ভিড় এড়াতে হোসপাইপের মাধ্যমে জল নিয়ে এসে কোনও ফাঁকা জায়গায় প্রতিমা গলিয়ে দেওয়ার প্রাথমিক পরিকল্পনা করেছে কলকাতা পুরসভা। কিন্তু এই প্রকল্প কী ভাবে বাস্তবায়িত করা যাবে, তা নিয়ে এখনও প্রশ্নচিহ্ন রয়ে গিয়েছে। হোসপাইপের মাধ্যমে কোথা থেকে এবং কী ভাবে এই বিপুল পরিমাণ জল নিয়ে আসা হবে, সেটা নিয়েই এখনও প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে। তাই এ নিয়ে পুরসভার জল সরবরাহ দফতরকে পরিকল্পনা করতে নির্দেশ দিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম কেএমডিএ-র সঙ্গেও এই প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেছেন। ফিরহাদের কথায়, “করোনা-কালে গঙ্গায় ভিড় এড়াতে তো বটেই, তা ছাড়াও গঙ্গার দূষণরোধে এই ধরনের পরিকল্পনা করার কথা প্রাথমিক ভাবে ভাবা হয়েছে। পুরসভার জল সরবরাহ দফতরকে বিষয়টি দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
এ ভাবে প্রতিমা গলানোর ক্ষেত্রে কী কী সমস্যা রয়েছে? পুরসভার জল সরবরাহ দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, যে জায়গায় প্রতিমাকে জল দিয়ে ধুয়ে দেওয়ার কথা, সেখানে পাইপের মাধ্যমে জল আনার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হতে পারে। যেখানে এই পদ্ধতিতে প্রতিমা গলানো হবে, তার আশপাশে কোনও জলাশয় বা নদী না-ও থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিকল্প কোনও জায়গা আছে কি না, তা খুঁজে দেখতে হবে। সেই কাজ এখনও শুরু হয়নি। তা না-হলে বড় জলের ট্যাঙ্ক নিয়ে এসে সেই জল দিয়ে প্রতিমা গলানো যায় কি না, সে ব্যাপারেও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন পুর আধিকারিকেরা।
অন্য দিকে, কেএমডিএ সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহেই ফিরহাদ কেএমডিএ আধিকারিকদের নিয়ে এই বিষয়ে আলোচনা করেন। হোসপাইপ দিয়ে প্রতিমা গলিয়ে সেই জল পরিশোধিত করে কী করে গঙ্গায় ফেলা যায়, তা নিয়ে সেই বৈঠকে পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে খবর। আগামী বছর পুজোর আগেই যাতে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা যায়, তার উপরে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
আপাতত কোন কোন ফাঁকা জায়গায় এই ধরনের প্রকল্প করা যেতে পারে, তা স্থির করতে জমি চিহ্নিত করা বেশি প্রয়োজন। সেই বিষয়টি বিভিন্ন পুজো কমিটির সঙ্গে কথা বলে পুরসভা এবং কেএমডিএ যৌথ ভাবে স্থির করতে পারে। এমনকি শহরের কোনও একটি স্থানেই সমস্ত প্রতিমা নিয়ে এসে হোসপাইপ দিয়ে গলিয়ে দেওয়ার কাজ করা যেতে পারে বলেও জানাচ্ছেন পুর এবং কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ।
তবে এ ভাবে প্রতিমা গলাতে যে বিপুল পরিমাণ জলের জোগান প্রয়োজন তা কথা থেকে আসবে, তা চিন্তায় রেখেছে পুর কর্তৃপক্ষকে। পুরসভা সূত্রের খবর, ছটপুজোর সময়ে শহরে যে সমস্ত অস্থায়ী জলাধার তৈরি করা হয়েছিল তাতে জলের পরিমাণ ছিল প্রায় ২০ লক্ষ লিটার। পুর এলাকায় অন্তত ২০টি জায়গায় আশপাশের এলাকার জলাশয় থেকে নিয়ে এই জলাধার তৈরি করা হয়েছিল। ফলে সমস্যা হয়নি। কিন্তু দুর্গা বা কালীপ্রতিমার মতো বড় বড় মাটির প্রতিমা গলাতে বিপুল পরিমাণ জল লাগবে। সে ক্ষেত্রে সেই পরিমাণ জলের জোগান নিশ্চিত করতে কোথা থেকে সেই জল আনা হবে, তা চিহ্নিত করা প্রয়োজন বলে দাবি পুর কর্তৃপক্ষের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy