গরমে সুখবর নতুন অতিথিদের জন্য! বাংলা মুলুকে পা রাখা মাত্রই তাদের স্বাগত জানাচ্ছে এসি-র আরাম। ব্যারাকপুরে পুলিশ ট্রেনিং কলেজের ডগ স্কোয়াডে সেজে উঠেছে আনকোরা স্পেশাল কেয়ার ইউনিট।
গত সোমবারই হায়দরাবাদ থেকে রাজ্য পুলিশের সারমেয় বাহিনীর জন্য ১৯ জন নতুন সদস্যকে নিয়ে আসা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১০টি ল্যাব্রাডর এবং ৯টি জার্মান শেফার্ড। সেগুলির বয়স ৩ থেকে ৬ মাস। একদম খুদেগুলির ওজন ৪-৫ কেজি, আর যারা বয়সে একটু বড়, সেগুলির ওজন মেরেকেটে ২০ কেজি। কয়েক মাস একটু খাপ খাইয়ে নেওয়া। তার পরেই শুরু হবে তাদের কড়া তালিম। তবে পুলিশ কুকুরদের পোক্ত করতে স্বাচ্ছন্দ্যে ফাঁক রাখা যাবে না, তাতে একমত রাজ্যের পুলিশকর্তারা।
ঠিক কী ভাবে এই শর্ত রক্ষা হচ্ছে?
ব্যারাকপুরের সরকারি কুকুরদের পরিচর্যার জন্য নিয়োগ করা হয়েছে তিন জন সারাক্ষণের ভেটেরিনারি নার্সিং অ্যাসিস্ট্যান্টকে। মধ্যপ্রদেশে গ্বালিয়রের টেকানপুরের ‘ন্যাশনাল ট্রেনিং সেন্টার ফর ডগ’ থেকে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন
তাঁরা। কুকুরদের যত্নে এয়ার কন্ডিশন ছাড়াও স্পেশাল কেয়ার ইউনিটে বিস্তারিত পরিকাঠামো গড়ে উঠেছে। প্রবল গরমে হা-ক্লান্ত কুকুরদের শরীরে আর্দ্রতার মাপ ঠিক রাখতে প্রয়োজন হলে স্যালাইন দেওয়া হবে। তাদের শ্বাসকষ্ট হলে থাকছে নেবুলাইজেশনের ব্যবস্থা। এ সব ছাড়াও দুপুর বেলা ভিআইপি ডিউটি অথবা তালিম পর্ব থেকে ফেরার পরে টক দই, গ্লুকোজেরও ঢালাও ব্যবস্থা। নবাগত সারমেয়দের ধাতস্থ করার পর্বে কেনা ডগফুড বা রেড মিট বিশেষ দেওয়া হচ্ছে না। মুরগির মাংস-ভাত-ডাল-সয়াবিনের স্বাদু খানাই প্রধানত এখন বরাদ্দ তাদের মেনুতে।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘এই কুকুরগুলিকে আস্তে আস্তে অপরাধীকে খোঁজা (ট্র্যাকিং) এবং বিস্ফোরক উদ্ধারের (স্নিফিং) কাজে পোক্ত করা হবে।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, কোন কুকুরগুলি ‘ট্র্যাকিং’ আর কোনগুলি ‘স্নিফিং’-এর কসরত রপ্ত করবে, তা ক্রমশ তালিমের মাধ্যমেই ঠিক হবে। সচরাচর বছর দশেক বয়স অবধি পুলিশ কুকুরেরা বাহিনীতে কাজ করতে পারে। ৮-৯ বছর বয়স থেকে ক্রমশ দক্ষতা কমতে থাকে তাদের। এই সব কারণেই কিছু দিন অন্তর নতুন পুলিশ-কুকুরের দরকার হয়। গত বছরও ২৪টি নতুন পুলিশ কুকুর এসেছিল রাজ্য পুলিশে। নতুন কুকুরগুলির বেশ কয়েকটি রেলপুলিশের বাহিনীতে যোগ দিতে পারে বলে সরকারি সূত্রের খবর।
তবে কুকুরদের বসবাসের পরিকাঠামোও যে সমান ভাবে জরুরি, তা মনে করছেন খোদ পুলিশকর্তারাই। তবে এই দরকারটা অনেক আগেই টের পেয়েছিল কলকাতা পুলিশ। রেসকোর্সের কাছে পুলিশ ট্রেনিং কলেজে সেই মতো ব্যবস্থাও করা হয়। এ বার ব্যারাকপুরের ডগ স্কোয়াডও একই ভাবে ঢেলে সাজা হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy