ন’মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ‘ভয়’ দেখিয়ে বাড়ি পাঠানোর অভিযোগ উঠল এনআরএসের কর্তব্যরত চিকিৎসকদের একাংশের বিরুদ্ধে। আতঙ্কিত প্রসূতি হাসপাতালের বদলে নিজের বাড়িতে ফিরে শৌচাগারে পুত্রসন্তান প্রসব করলেন। যদিও সেই সন্তান বাঁচেনি।
ওই প্রসূতি বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত। এ দিন তিনি জানান, শুক্রবার রাত থেকে তাঁর প্রসব-বেদনা শুরু হয়। তাঁর অভিযোগ, একাধিক বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কেউ সন্তানসম্ভবাকে ভর্তি নিতে চায়নি। পারিবারিক সূত্রে এনআরএসের এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে প্রসূতির যোগাযোগ ছিল। তাঁর পরামর্শ মেনে তিনি শনিবার বিকেলে এনআরএসের জরুরি বিভাগে আসেন। তাঁকে স্ত্রীরোগ বিভাগে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সম্প্রতি এনআরএসে এক প্রসূতির দেহে করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়েছে। তরুণী জানান, স্ত্রীরোগ বিভাগে যাওয়া মাত্র তাঁকে জানানো হয়, ওই ঘটনার জন্য সেখানে রোগী ভর্তি বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি পরিচিত স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানায় ওই প্রসূতির পরিবার। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা কোনও কথা শুনতে রাজি ছিলেন না বলে অভিযোগ। প্রসূতির কথায়, ‘‘প্রতি মুহূর্তে আমাকে বলে যাচ্ছে, এখানে ভর্তির পরে আপনি ও আপনার সন্তানের করোনা হলে আমরা কেউ দায়ী থাকব না। আপনাকে করোনা পজ়িটিভ রোগীর সঙ্গে থাকতে হবে! আমি নিজে স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত। চিকিৎসকেরা যে এত দুর্ব্যবহার করবেন ভাবিনি।’’
তরুণীর দাবি, প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে নানা ভাবে তাঁকে বোঝানো হয়, ওই ওয়ার্ডে ভর্তি হলে করোনা হবেই। শেষ পর্যন্ত মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত প্রসূতি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি চলে আসেন। তরুণী বলেন, ‘‘বাড়িতে পৌঁছনোর পরে শৌচাগারে আমার প্রসব হয়ে গেল। আমার সন্তানকে বাঁচাতে পারলাম না। ওরা হাসপাতালে বারবার বলছিল, আমি, আমার বাচ্চা মরে গেলে কেউ দায়ী থাকবে না। বাচ্চাটা আমার মরেই গেল।’’