Advertisement
E-Paper

কোকেন-চক্রে জড়িয়ে যাচ্ছেন নাইজিরীয়রা

এক গ্রাম কোকেন বিক্রি করতে পারলে লাভ থাকে হাজার টাকা মতো। মাত্র দশ গ্রাম কোকেন বিক্রি করতে পারলেই উঠে আসে সারা মাসের পড়াশোনার টাকা-সহ হাতখরচ। পুলিশ সূত্রে খবর, এই হাতখরচের টাকা তুলতেই অনেক নাইজিরীয় ছাত্র-ছাত্রী জড়িয়ে যাচ্ছেন কোকেন পাচার চক্রে। 

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৪৯

এক গ্রাম কোকেন বিক্রি করতে পারলে লাভ থাকে হাজার টাকা মতো। মাত্র দশ গ্রাম কোকেন বিক্রি করতে পারলেই উঠে আসে সারা মাসের পড়াশোনার টাকা-সহ হাতখরচ। পুলিশ সূত্রে খবর, এই হাতখরচের টাকা তুলতেই অনেক নাইজিরীয় ছাত্র-ছাত্রী জড়িয়ে যাচ্ছেন কোকেন পাচার চক্রে।

কোকেন বিক্রির সঙ্গে বারবার নাইজিরীয় তরুণ-তরুণীদের জড়িয়ে পড়ার ঘটনার তদন্তে নেমে এ রকমই তথ্য উঠে আসছে গোয়েন্দাদের কাছে। পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতার পানশালাগুলিতে কোকেন সরবরাহ চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার

অভিযোগে যে সব নাইজিরীয় তরুণ-তরুণী ধরা পড়েছেন, তাঁদের অনেকেই এ দেশের পড়ুয়া। এরা বেশির ভাগই বিভিন্ন কোর্স করতে শহরের নানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেন। পড়াশোনার খরচ ও হাতখরচ জোগাড় করতে অনেকেই জড়িয়ে পড়ছেন এই কোকেন বিক্রি চক্রের সঙ্গে। শহরের বিভিন্ন ক্লাবে ফুটবল খেলতে আসা বহু নাইজিরীয় খেলোয়াড়েরাও জড়িয়ে যাচ্ছেন কোকেন-চক্রে। এক তদন্তকারী অফিসার জানান,

শহরের পানশালাগুলিতে এক-এক জন সারা মাসে ১০ গ্রাম কোকেন বিক্রি করলেই ১০ হাজার টাকা হাতে চলে আসে। অনেকে আবার মাসে ১০ গ্রামেরও বেশি কোকেন বিক্রি করে ফেলেন। লালবাজারের এক গোয়েন্দা কর্তার কথায়, ‘‘নাইজিরিয়া থেকে যাঁরা ভারতে পড়াশোনা করতে আসেন, তাঁরা বেশির ভাগই সে দেশের গরিব বা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্য। ভারতে কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার পরে তার খরচ চালানোর জন্য আর্থিক সাহায্য তাদের পরিবার থেকে বেশির ভাগ সময়েই পান না। নিজেকেই উপার্জন করতে হয়। সহজে বেশি টাকা উপার্জনের জন্য অনেক সময়ে তাঁরা এই কোকেন পাচারের চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।’’

তদন্তে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন ই এম বাইপাসের পঞ্চসায়র, দক্ষিণ শহরতলির গড়িয়া, যাদবপুর, গরফা, সন্তোষপুর, নেতাজিনগর এলাকায় এঁরা অনেকে মিলে একসঙ্গে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন। সেই বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা কেমন এবং টাকার উৎস কী, তা খতিয়ে দেখতে ওই এলাকায় টহল শুরু করেছে স্থানীয় থানার পুলিশ। সেই সঙ্গে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদেরও সচেতন করা হয়েছে, যাতে নাইজিরীয়দের ঘর ভাড়া দেওয়ার আগে তাঁরা সব দিক খতিয়ে দেখেন। ভাড়াটেদের মধ্যে কোনও অস্বাভাবিক আচরণ খেয়াল করলেও পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বলা হয়েছে সেই এলাকার বাসিন্দাদের।

পুলিশ জানিয়েছে, এই কোকেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, চিলে, ব্রাজিলের মতো দেশে উৎপন্ন হয়। তা সরাসরি ভারতে আসে না। দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলি থেকে প্রথমে নাইজিরিয়া বা আফ্রিকার অন্য দেশগুলিতে যায়। সেখান থেকে ‘কেরিয়ারের’ মাধ্যমে ভারতে ঢোকে এই সব মাদক। কোকেন কার্বন পেপার দিয়ে মোড়া থাকলে বেশির ভাগ সময়েই বিমানবন্দরে তল্লাশির সময়ে ধরা পড়ে না। নার্কোটিক্স কন্ট্রোল বিভাগের এক অফিসার জানিয়েছেন, সম্প্রতি এক নাইজিরীয় তরুণী কোকেন-সহ ধরা পড়েন। দিল্লি থেকে রাঁচী হয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে নামলে প্রথমে

তল্লাশির সময়ে তাঁর কাছে থাকা কোকেনেরও হদিস মেলেনি। কারণ তাঁর কাছে থাকা কোকেনও কার্বন পেপারে মোড়া ছিল। কিন্তু বিশেষ সূত্রে খবর এসেছিল, ওই তরুণীর কাছে কোকেন আছে। তাই তাঁকে ধরার জন্য বিমানবন্দরে ওত পেতে ছিলেন গোয়েন্দারা। ফলে ধরা

পড়ে যান তিনি।

Cocaine Nigerian Students Kolkata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy