চলছে কাজ। ফাইল চিত্র।
বর্ষা আসতে এখনও ঢের দেরি। কিন্তু তাতে কী। বর্ষা-নির্দেশিকা জারি হয়ে গেল কলকাতা পুরসভায়! যা নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, মে মাস থেকে পুজো পর্যন্ত নিকাশির কোনও বড় কাজ করা যাবে না। কারণ, গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা বলছে, বর্ষার মরসুমে নিকাশির বড় কাজ হলে নাগরিকদের ভোগান্তির শেষ থাকে না। এক দিকে নিকাশি পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য নর্দমা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলে। অন্য দিকে, বৃষ্টির জল জমে চার দিক একাকার হয়ে যায়। সব মিলিয়ে রাস্তাঘাট একেবারে যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে পড়ে। বর্ষার সেই চেনা ছবিটা পাল্টাতেই নর্দমা খোঁড়াখুঁড়ির কাজের জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিতে চাইছে পুরসভা। তাই নিয়ম করা হয়েছে, নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত নিকাশির কাজ চলবে। এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই পুরসভায় নাগরিকদের তরফে অভিযোগ জমা পড়ছিল যে, বর্ষার সময়ে নিকাশির কাজ হলে যাতায়াত করা যায় না। শেষ পর্যন্ত এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
যদিও এই নির্দেশিকা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। কারণ, নিকাশি দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ তারক সিংহ মে মাস থেকে নিকাশির কাজ বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষপাতী নন। তাঁর যুক্তি, শহরে বর্ষা ঢোকে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে। ফলে জুন মাসে কাজ বন্ধ হলে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তারকবাবুর কথায়, ‘‘কোন কোন মাসে নিকাশির কাজ হবে, তা নিয়ে একটি বৈঠক হয়েছিল। তাতে আমি জুন মাস থেকে কাজ বন্ধের কথা বলেছিলাম। কারণ, কাজগুলো তো করতেই হবে। বর্ষার সময়ে তো এমনিতেই নর্দমার পলি নিষ্কাশনের কাজ বন্ধ রাখা হয়। বিষয়টি নিয়ে আমি কথা বলব।’’
তবে পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ওই সময়ে নিকাশির রুটিন কাজ করার অনুমতি দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বড় কাজ কোনও মতেই নয়। নিতান্তই যদি তা করতে হয়, তা হলে মেয়রের আগাম অনুমতি নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘আপৎকালীন অবস্থা ছাড়া কোনও ভাবেই নর্দমা খোঁড়ার কাজ করা যাবে না বলে দেওয়া হয়েছে।’’
আরও পড়়ুন: গড়িয়ায় বধূর মৃত্যুতে স্বামীর পুলিশি হেফাজত
পুর প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, এমনিতে সারা বছর ধরেই রাস্তা-নর্দমা খোঁড়ার কাজ চলে শহর জুড়ে। তা নিয়ে স্থানীয় স্তরে বিস্তর অভিযোগও রয়েছে। বিশেষ করে পানীয় জল বা নিকাশির পাইপলাইনের জন্য
রাস্তা খুঁড়তেই হয়। এই কাজ যাতে ঠিকমতো হয়, তার জন্য বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয় বৈঠকের কথাও বলা হয়েছে। জলের বা নিকাশির পাইপলাইনের কাজের জন্য রাস্তা দফতরকে আগাম জানানোর কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও দেখা যাচ্ছে, খোঁড়াখুঁড়ির পরে রাস্তা সারাইয়ের কাজে খামতি থেকে যাচ্ছে। ফলে নর্দমার কাজের জন্যও এই সিদ্ধান্ত কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy