Advertisement
০৩ মে ২০২৪

‘নিখোঁজ’ নয়, কেস অপহরণের

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৬ ০২:০১
Share: Save:

নিজস্ব সংবাদদাতা

প্রথমে ছিল একটি নিখোঁজ ডায়েরি। আঠেরো দিন পরে সেই নিখোঁজ যুবকের সিমকার্ড হঠাৎ চালু হয়েছে বলে টের পাওয়া গেল। সেই সূত্র ধরেই শেষমেশ নিখোঁজ ডায়েরি বদলে গেল অপহরণের মামলায়। ঘটনায় ১৮ অগস্ট গ্রেফতার করা হয় নিখোঁজ যুবকের দুই বন্ধু ও এক আত্মীয়কে। ধৃতদের নাম কৌস্তুভ পাল, বিবেক প্রসাদ ও জিতেন্দ্রকুমার সিংহ। জিতেন্দ্র পরিতোষের আত্মীয়। তবে পঞ্চাশ দিন পরে, এখনও নিখোঁজ তিলজলা রোডের পরিতোষকুমার সিংহ। তদন্তকারীদের আশা, জেল হেফাজতে থাকা ওই তিন জনকে জেরা করেই জানা যাবে, পরিতোষের কী হয়েছে এবং এর পিছনে কারণই বা কী।

পার্ক সার্কাস এলাকার একটি শপিং মলের কর্মী, বছর তিরিশের ওই যুবক ৫ জুলাই থেকে নিখোঁজ। পুলিশ জেনেছে, ৪ জুলাই মাঝ রাতে অন্য তিন যুবকের সঙ্গে তিনি চাঁদপাল ঘাটে ঘুরতে গিয়েছিলেন। তার আগে তিলজলা রোডে পরিতোষের বাড়িতে সবাই মিলে মদ্যপান করে। চাঁদপাল ঘাটে বসেও রাতভর চলে মদ্যপান। ওই তিন জনের দাবি, ভোর সাড়ে তিনটের সময় তাঁদের খেয়াল হয়, পরিতোষ নেই, তার মোবাইলও বন্ধ। এরপরেই নিখোঁজ ডায়েরি করা হয় উত্তর বন্দর থানায়।

কিন্তু বাড়ির লোকজন রোজই পরিতোষের মোবাইলে ফোন করতেন। আর রোজই তাঁদের শুনতে হত, ‘সুইচড অফ’। তাও ফোন করা ছাড়েননি তাঁরা। হঠাৎ ২৩ জুলাই মোবাইল বেজে ওঠে। খবর পেয়ে পুলিশ খোঁজ নিয়ে দেখে, পরিতোষের সিমটি ব্যবহার করা হচ্ছে তাঁর নিখোঁজ হওয়ার জায়গা থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে, গঙ্গার অন্য পাড়ে, উলুবেড়িয়ায়। পরিতোষের হদিস কিন্তু মেলেনি। পুলিশ জানতে পারে, সিমটি ব্যবহার করছে বাউড়িয়ার এক কিশোর। সে জানায়, উলুবেড়িয়ার মানিকপুর ঘোলাঘাটের পাশে মাটিতে সিমটি কুড়িয়ে পেয়েছে। সিমটিতে মাটি লেগে থাকার প্রমাণও পায় পুলিশ।

তার পরেই তদন্তকারীদের সন্দেহ হয়, পরিতোষ স্বেচ্ছায় কোথাও চলে যাননি। তার নির্ঘাৎ কোনও বিপদ হয়েছে। ১৪ অগস্ট পরিতোষের বাবা রাম সিংহ উত্তর বন্দর থানায় অভিযোগ করেন, তাঁর ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে এবং এর পিছনে রয়েছে ওই তিন জন, যাঁদের সঙ্গে পরিতোষ ৪ জুলাই রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন।

তবে পরিতোষের বাড়ির লোকজনের দাবি, ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পরেই ওই তিন জনের কথায় নানা অসঙ্গতি পাওয়া যায়। উত্তর বন্দর থানা ও লালবাজারে বার বার জানানো হলেও পুলিশ বিশেষ গুরুত্ব দেয়নি বলে পরিতোষের বাড়ির লোকজনের অভিযোগ। পরিতোষের ভাই সুধীরকুমার সিংহ ইস্ট ট্রাফিক গার্ডে গ্রিন পুলিশ হিসেবে কর্মরত। তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশ শুধু নিখোঁজ ডায়েরি করেই বসে রইল। আমরাই ভাইয়ের ফোনে রোজ ফোন করে যাচ্ছি। তার পর ২৩ জুলাই রিং হতেই পুলিশকে জানাই। কিন্তু এ সব তো পুলিশেরই করার কথা।’’

যদিও তদন্তকারীদের দাবি, নিয়ম মেনেই ঘটনার তদন্ত হচ্ছে, পুলিশি তৎপরতার কোনও অভাব নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

abduction
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE