Advertisement
E-Paper

TMC: শব্দবাজি, আবিরে রাঙা করোনাকালের বিজয় উৎসব

ভোটের ফল ঘোষণা হওয়ার পরেই যদুবাবুর বাজার লাগোয়া এলাকায় দেদার ফেটেছে শব্দবাজি। কালীঘাট এলাকাতেও ফেটেছে পর পর কালীপটকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২১ ০৬:৫৯
উদ্‌যাপন: ভবানীপুরের উপনির্বাচনের ফল ঘোষণার পরে উল্লাস তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের। রবিবার।

উদ্‌যাপন: ভবানীপুরের উপনির্বাচনের ফল ঘোষণার পরে উল্লাস তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের। রবিবার। ছবি: সুমন বল্লভ।

ভরা শরতে কলকাতায় যেন বসন্তোৎসব।

ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেকর্ড ভোটে জয়লাভ করার পরে রবিবার শহরের ছবিটা ছিল এমনই রঙিন। নির্বাচনী ফলাফল যত স্পষ্ট হয়েছে, ততই রাস্তায় ভিড় বেড়েছে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের। চলেছে আবির খেলা, বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে নাচ। আবিরে রাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে বাসচালক, এমনকি বাসযাত্রীদেরও। দলীয় পতাকা উড়িয়ে পথে নামা বাইকবাহিনীর অনেকের মুখেই মাস্কের বালাই ছিল না।

ভোটের ফল ঘোষণা হওয়ার পরেই যদুবাবুর বাজার লাগোয়া এলাকায় দেদার ফেটেছে শব্দবাজি। কালীঘাট এলাকাতেও ফেটেছে পর পর কালীপটকা। যা দেখে অনেকেরই প্রশ্ন, বাঁধ-ভাঙা উল্লাসে করোনা-বিধি আদৌ মানা হল কি?

নির্বাচন কমিশন আগেই ঘোষণা করেছিল, করোনা-বিধি উড়িয়ে কোনও বিজয় মিছিল বা বিজয় উৎসব করা যাবে না। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফেও বিজয় মিছিল বা জমায়েত না করার নির্দেশই দেওয়া হয়েছিল কর্মী-সমর্থকদের। কিন্তু বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই সব নির্দেশ আর কাউকে মানতে দেখা যায়নি বলেই দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। যা নিয়ে তৃণমূল নেতা মদন মিত্র বলেছেন, ‘‘জোর করে কি আর মানুষের আবেগ আটকানো যায়? করোনার জন্য না হয় বিজয় উৎসব করব না। কিন্তু নাচ-গান হবে না, একটু জলসা হবে না— তা-ও কি হয়!’’

জলসা না হলেও বিজয় উৎসব এ দিন দেখা গিয়েছে শহরের মোড়ে মোড়ে। সব চেয়ে বেশি ভিড় হয় কালীঘাটে তৃণমূলের একটি কার্যালয়ের সামনে। সেখানে বর্ধমান থেকে হেঁটে আসা যুবক সুকান্ত সেন বললেন, ‘‘দিদির জন্য এসেছি। এই জয় শুধু ভোটে জয় নয়, এ জয় আত্মমর্যাদার।’’ পাশেই গানের তালে তালে নাচতে ব্যস্ত আর এক দলীয় কর্মী সুলেখা ঘোষ বললেন, ‘‘দিদির হার হয়নি। দিদির রেকর্ড হবে বলে নন্দীগ্রামে ফলাফল অন্য রকম হয়েছে।’’ এর পরে আরও দুই মহিলাকে নিয়ে নাচতে নাচতেই মাটিতে প্রায় শুয়েই পড়লেন তিনি। তাসা, ব্যান্ড নিয়ে তখন সেখানে হাজির আরও কয়েক জন যুবক। সকলেরই জামায় মমতার ছবি।

এর মধ্যেই শুরু হল কয়েক পশলা বৃষ্টি। দলীয় পতাকা হাতে নাচতে নাচতে অত্যুৎসাহী এক যুবক বললেন, ‘‘সকাল থেকে স্নান হয়নি। এই জলে হয়ে যাবে। এ আসলে দাড়িওয়ালা দাদার কান্না!’’ মন্তব্য শুনে হাসতে হাসতে আর এক যুবক বললেন, ‘‘৫৬ ইঞ্চির ছাতি তো এখন আর শোনা যায় না। দিদিও তো বোধহয় ৫৬ হাজারে এগিয়ে!’’ শেষ পর্যন্ত সেই ভোট ব্যবধান গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় ৫৮ হাজারে। সেখানেই এর পরে পৌঁছে গেল কয়েক প্যাকেট মিষ্টি। কিছু ক্ষণ আগেই মমতার মন্তব্যের রেশ ধরেই দল বেঁধে সুর উঠল— ‘‘এক-দুই-তিন, মানুষকে ধন্যবাদ দিন।’’

তবে এর মধ্যেও যদুবাবুর বাজার সংলগ্ন এলাকায় শব্দবাজি ফাটানোর ঘটনায় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমনকি, আশুতোষ মুখার্জি রোডের এক দিক আটকে রেখে কালীপটকা ফাটাতে দেখেও পুলিশ কোনও বাধা দেয়নি বলে অভিযোগ প্রত্যক্ষদর্শীদের। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে কলকাতা পুলিশের দক্ষিণ শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তা শুধু বলেন, ‘‘করোনা-বিধি মানাতেই কালঘাম ছুটছে। বাজি নিয়ে পরে ভাবব।’’

কালীঘাটেই অবশ্য দেখা গেল, মমতার ছবি লাগানো ফেসশিল্ড পরে এসেছেন এক ব্যক্তি। উপরের দিকের অংশে লেখা— ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’। এ ভাবে দেখতে সমস্যা হচ্ছে না? ওই ব্যক্তির উত্তর, ‘‘দিদির ছবি সামনে আছে, করোনা আর ছোঁবে বলে মনে হয়?’’

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy