E-Paper

দমদমে লুটের ঘটনায় গ্রেফতারি নেই, আতঙ্কে দরজা খুলছেন না বৃদ্ধা

দাবি, বড় রাস্তায় খানিকটা নজরদারি থাকলেও ওয়ার্ডের ভিতরের রাস্তায় পর্যাপ্ত নজর থাকে না পুলিশের। যদিও প্রশাসনের দাবি, এলাকায় নৈশকালীন নজরদারি রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:২২
রবিবার ওই প্রবীণ দম্পতির দোতলা বাড়ির একতলার পিছনে জানলার গ্রিল কেটে ভিতরে ঢোকে দুষ্কৃতীরা।

রবিবার ওই প্রবীণ দম্পতির দোতলা বাড়ির একতলার পিছনে জানলার গ্রিল কেটে ভিতরে ঢোকে দুষ্কৃতীরা। —প্রতীকী চিত্র।

দমদম পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডে, নলতা স্কুলবাড়ি রোডে রবিবার গভীর রাতে লুটের ঘটনার পরে এলাকায় নজরদারির অভাবের অভিযোগ তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিশেষত, এই ঘটনায় প্রবীণ নাগরিকদের সুরক্ষার অভাবের দিকটি প্রকট হয়েছে বলেই মনে করছেন তাঁরা। তাঁদের আরও দাবি, বড় রাস্তায় খানিকটা নজরদারি থাকলেও ওয়ার্ডের ভিতরের রাস্তায় পর্যাপ্ত নজর থাকে না পুলিশের। যদিও প্রশাসনের দাবি, এলাকায় নৈশকালীন নজরদারি রয়েছে।

পর্যাপ্ত নজরদারি রয়েছে বলে পুলিশের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এলাকার বাসিন্দারা পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, অনেক রাতে ৬-৭ জনের একটি দুষ্কৃতী-দল বেশ কিছুটা সময় নিয়ে জানলার গ্রিল কাটল, তার পরে লুটপাট করে চম্পট দিল। নজরদারি থাকলে বিষয়টি কারও চোখে পড়ল না কেন?

ঘটনার পরে আতঙ্কে রয়েছেন ওই প্রবীণ দম্পতি। ভয়ে বাড়ির দরজা পর্যন্ত খুলতে চাইছেন না তাঁরা। স্থানীয় সাত নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি রবীন বেরিয়া আগেই জানিয়েছেন যে, ওই বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া দেওয়া হয়। কিন্তু ভাড়াটে সম্পর্কে কোনও তথ্য পুলিশ কিংবা পুর প্রশাসনের কাছে পরিবারের তরফে দেওয়া হয়নি।

রবিবার ওই প্রবীণ দম্পতির দোতলা বাড়ির একতলার পিছনে জানলার গ্রিল কেটে ভিতরে ঢোকে দুষ্কৃতীরা। এর পরে দোতলায় গিয়ে বৃদ্ধা পুতুল মজুমদারকে অস্ত্র দেখিয়ে লুটপাট করে তারা। ঘরে শয্যাশায়ী ছিলেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত গৃহকর্তা শঙ্কর মজুমদার। দম্পতির একমাত্র সন্তান কর্মসূত্রে বাইরে বসবাস করেন। লুটের পরে একই পথে চম্পট দেয় দুষ্কৃতী-দলটি। ২৪ ঘণ্টা পেরোলেও এই ঘটনায় গ্রেফতারির সংখ্যা শূন্য। ওই বাড়ির একতলায় থাকা ভাড়াটেদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ইতিমধ্যে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ৬-৭ জনের একটি দুষ্কৃতী-দল এসেছিল বলেই মনে করছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু সূত্র হাতে এসেছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। দমদম থানাকে এ বিষয়ে সহযোগিতা করছে
ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা দফতর। এক ভাড়াটে ঘটনার রাতে ঘরে ছিলেন না। তাঁর গতিবিধি নিয়েও তথ্য সংগ্রহ করছে পুলিশ। ওই বাড়ির একতলায় তিনটি ঘরে চার জন ভাড়ায় থাকেন।

দুষ্কৃতীরা হেলমেট পরে থাকায় শনাক্তকরণে সময় লাগছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, ওই বাড়ি সম্পর্কে সব রকমের তথ্যই হাতে ছিল দুষ্কৃতীদের। তাদের কর্মকাণ্ড এবং গতিবিধি দেখে সেটাই মনে করছেন তদন্তকারীরা। সে ক্ষেত্রে পরিচিতদের যোগসূত্র থাকতে পারে বলেও অনুমান তাঁদের।

এই ঘটনায় নিরাপত্তা এবং নজরদারি নিয়ে জোরদার প্রশ্ন উঠলেও স্থানীয় দমদম পুর প্রশাসনের দাবি, ওই এলাকায় আগে এমন ঘটনা ঘটেনি। একটি ঘটনা দিয়েই নিরাপত্তা নেই বলে অভিযোগ তোলা ঠিক নয়। দিনে-রাতে আগের তুলনায় পুলিশি নজরদারি বেড়েছে। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বরুণ নট্ট জানান, দমদম পুর এলাকায় পুলিশ নজরদারিতে সক্রিয়। তবু এই ঘটনার প্রেক্ষিতে তাঁরা নজরদারি বৃদ্ধির বিষয়ে পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Loot Dumdum Municipality

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy