E-Paper

তেইশটি প্রয়োজনীয় ওষুধের সর্বোচ্চ দাম বেঁধে দিল এনপিপিএ, কবে থেকে নতুন দামে বাজারে মিলবে?

ওষুধ সংস্থাগুলি সূত্রের খবর, গত মে মাসে এনপিপিএ-র বার্ষিক সভাতেই সিদ্ধান্ত হয়, ওই ২৩টি ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সেই মতো শুক্রবার গেজ়েট নোটিফিকেশন প্রকাশ করেছে এনপিপিএ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২৩ ০৯:১৩
medicine

—প্রতীকী ছবি।

নিত্য প্রয়োজনীয়, অথচ সেই ওষুধের দামই এক সময়ে মারাত্মক হারে বেড়ে যায়। যার ফলে চরম সমস্যায় পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। চিকিৎসকেরাও এক-এক সময়ে চিন্তায় পড়ে যান প্রেসক্রিপশন লিখতে গিয়ে। খুচরো বাজারে দাম বৃদ্ধির তালিকায় রয়েছে উচ্চ রক্তচাপ ও সুগারের ওষুধও।

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, একটি নির্দিষ্ট বয়সের পরে, বিশেষত বয়স্কদের বেশি মাত্রায় উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবিটিসে ভুগতে দেখা যায়। যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিন নিয়ম করে ওষুধ খেয়ে যেতে হয় দীর্ঘ সময় ধরে। এই সমস্ত ওষুধের দাম হঠাৎ বেড়ে গেলে বিপাকে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। এ বার তাই ওই দু’টি রোগ-সহ ব্যথা, অ্যান্টি-অ্যালার্জিক ও মাল্টিভিটামিন মিলিয়ে মোট ২৩টি ওষুধের সর্বোচ্চ দাম বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ‘ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটি’ (এনপিপিএ)। ওষুধ সংস্থাগুলি সূত্রের খবর, গত মে মাসে এনপিপিএ-র বার্ষিক সভাতেই সিদ্ধান্ত হয়, ওই ২৩টি ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সেই মতো শুক্রবার গেজ়েট নোটিফিকেশন প্রকাশ করেছে এনপিপিএ।

সেই গেজ়েটে প্রতিটি ওষুধের ক্ষেত্রেই একটি ট্যাবলেট কিংবা এক মিলিলিটার পরিমাণের সর্বোচ্চ দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যেমন, গ্লিক্লাজ়াইড ইআর এবং মেটফর্মিন হাইড্রোক্লোরাইড, অর্থাৎ ডায়াবিটিসের ট্যাবলেটের দাম ১০ টাকা ৩ পয়সা, ব্যথার ওষুধ ট্রিপসিন, ব্রোমেলেন, রুটোসাইড ট্রাইহাইড্রেট এবং ডিক্লোফেনাক সোডিয়াম ট্যাবলেটের দাম ২০ টাকা ৫১ পয়সা, উচ্চ রক্তচাপের জন্য ক্লোরথালিডন, সিলনিডিপিনের একটি ট্যাবলেটের দাম ১৩ টাকা ১৭ পয়সা, বিলাসটাইন অ্যান্ড মন্টেলুকাস্ট ওরাল সাসপেনশনের এক মিলিলিটারের দাম ১ টাকা ৭১ পয়সা করা হয়েছে। ‘ইন্ডিয়ান ফার্মাসিউটিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’ (আইপিএ)-এর পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। অত্যন্ত আবশ্যিক ওষুধের দাম যাতে আমজনতার নাগালের মধ্যে থাকে, সেটা বার বারই আমরা বলি। এ বার সে দিকেও নজর দেওয়ায় খুবই ভাল হল।’’

শেষ কয়েক বছর ধরে খুচরো বাজারে, অর্থাৎ আমজনতা যেখান থেকে ওষুধ কেনেন, সেখানে ওষুধের দাম মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়ে চলেছে। প্রতি বছরই ওষুধের দাম নিয়ে পর্যালোচনা করে এনপিপিএ। প্রয়োজন মতো ওষুধের দাম বেঁধেও দেয় তারা। এ বারও সেটাই করা হয়েছে। ‘বেঙ্গল কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি শঙ্খ রায়চৌধুরীর কথায়, ‘‘ওষুধের দাম কমানো অবশ্যই উচিত। ওষুধের উপরে কর থাকবে কেন? তবে, দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনের তরফে একটি দাবি জানাচ্ছি যে, দাম কমানোর বিষয়টি যে ওষুধের পরবর্তী ব্যাচ থেকে প্রযোজ্য, এটা উল্লেখ করা প্রয়োজন।’’

তিনি জানান, সরকার ঘোষণা করা মাত্রই কম দামে ওষুধ মিলবে বলে সাধারণ মানুষ মনে করেন। কিন্তু বিষয়টি তেমন নয়। ওষুধ সংস্থা পুরনো দাম ছাপানো ওষুধগুলি পরিবর্তন করে দিলে তবেই নতুন দামে ওষুধ পাওয়া যাবে। এই প্রক্রিয়ার জন্য একটু অপেক্ষা করতে হয়। জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলেন, ‘‘কিছু ওষুধ নতুন কম্পোজ়িশনে বাজারে এসেছে। মানুষ ব্যবহারও শুরু করেছেন। সেই সমস্ত জীবনদায়ী ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব ভাল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কিন্তু বিশেষ কয়েকটি সংস্থার ক্ষেত্রে ওই দাম ঠিক করে দেওয়াটা তাদের একচেটিয়া সুবিধা পাইয়ে দেওয়া না হয়, সে দিকেও সরকারকে লক্ষ রাখতে হবে। না হলে গুণগত মান নিয়ে সংশয় তৈরি হতে পারে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

medicine

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy