Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

পুর অধিবেশনের প্রশ্ন সংখ্যা কমিয়ে দিল ভোট

মাত্র চারটি প্রশ্ন। একটি প্রস্তাব। সোমবার দুপুর পর্যন্ত এই সংখ্যাই জমা পড়েছে। পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, আর প্রশ্ন বা প্রস্তাব জমা পড়ার সম্ভাবনা নেই। শেষ কবে এত কম প্রশ্ন ও প্রস্তাব জমা পড়েছে, তা মনে করতে পারছেন না তাঁরা।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

দেবাশিস ঘড়াই
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৯ ০২:৫৪
Share: Save:

ভোটের গুঁতোয় কমে গেল কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনের প্রশ্ন-সংখ্যা!

মাত্র চারটি প্রশ্ন। একটি প্রস্তাব। সোমবার দুপুর পর্যন্ত এই সংখ্যাই জমা পড়েছে। পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, আর প্রশ্ন বা প্রস্তাব জমা পড়ার সম্ভাবনা নেই। শেষ কবে এত কম প্রশ্ন ও প্রস্তাব জমা পড়েছে, তা মনে করতে পারছেন না তাঁরা।

আজ, মঙ্গলবার কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশন। কিন্তু প্রশ্ন ও প্রস্তাবের এই বহর দেখে স্বাভাবিক ভাবেই চর্চা শুরু হয়েছে, এত দিন রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি চলছিল, এ বার তার প্রভাব পড়ল অধিবেশনের প্রশ্ন-প্রস্তাবের উপরেও। বিরোধীদের অবশ্য অভিযোগ, এমন তাড়াহুড়ো করে অধিবেশনের দিন এগিয়ে আনা হয়েছে যে, প্রশ্ন জমা দেওয়ার সময়ই পাওয়া যায়নি। ফলে পুর পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয়ে মাসে মাত্র এক বার যে প্রশ্নোত্তরের পর্ব বসে, এ বার সেটাও বিফলে গেল।

প্রসঙ্গত, প্রথমে পুর অধিবেশন হওয়ার কথা ছিল ২৭ তারিখ। কিন্তু বৃহস্পতিবার ফল বেরোনোর পরে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কী হবে, তা অনিশ্চিত। সে কারণে পরে অধিবেশনের তারিখ এগিয়ে আনা হয় আজ, মঙ্গলবারে। কিন্তু এই তাড়াহুড়োর ফলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রভাব পড়েছে বিরোধীদের তরফে প্রশ্ন জমা দেওয়ায়। সোমবার দুপুর পর্যন্ত প্রশ্ন ও প্রস্তাব মিলিয়ে মোট পাঁচটি জমা পড়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘আর জমা পড়ার তো সময় নেই। তবে এ বার অনেকগুলি ‘অ্যাজেন্ডা’ রয়েছে।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, এ বারের ‘অ্যাজেন্ডা’ অর্থাৎ আলোচ্য বিষয়ের সংখ্যা ২৩।

কিন্তু এত কম প্রশ্ন ও প্রস্তাব কেন?

বিরোধীদের একাংশ বলছেন, সময় পাওয়া গেল কোথায়? রবিবার ভোট শেষ হয়েছে। আর মঙ্গলবার মাসিক অধিবেশন। এত দিন তো নির্বাচনের কাজেই ব্যস্ত থাকতে হয়েছিল। বাম কাউন্সিলর চয়ন ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘এত অল্প সময়ে কী প্রশ্ন জমা দেব? পুর পরিষেবা সংক্রান্ত কাজের তো একটা নিয়ম থাকবে। সেই নিয়মই মানা হল না। বিরোধীদের যে নিজস্ব অধিকার রয়েছে, নির্বাচনের কথা বলে তাকে খর্ব করা হচ্ছে।’’ বিজেপি কাউন্সিলর মীনাদেবী পুরোহিত প্রস্তাব পাঠিয়েছেন একটা। তবে তাঁরও বক্তব্য, ‘‘নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়েছিল। সময় কম। তবু একটা প্রস্তাব পাঠিয়েছি।’’ তৃণমূলের এক বরো চেয়ারম্যানও বললেন, ‘‘আরও একটু সময় পেলে ভাল হত। কিন্তু তা তো আর হল না।’’

আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, প্রতি মাসে পরিষেবা সংক্রান্ত বিরোধীদের প্রশ্ন আসলে পরিষেবার খামতিগুলোকেই তুলে ধরে। কোথায় পানীয় জলের অভাব রয়েছে, কোথায় নিকাশির সমস্যা, কোথায় জঞ্জাল ঠিক মতো সাফ হচ্ছে না, এমন হাজারো বিষয় অধিবেশনে তুলে ধরার সুযোগ পান কাউন্সিলরেরা। সেখানে যদি কোনও সমস্যা হয়, তা হলে শহরবাসীর সুবিধা-অসুবিধার দিকটাই আসলে উপেক্ষিত হয়। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘অধিবেশনে প্রশ্ন তোলা এবং তার উত্তর দেওয়ার মধ্যেই কিন্তু বিষয়টি সীমাবদ্ধ থাকে না। সেই অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সমস্যা সমাধানেরও চেষ্টা করা হয়। তাই যত বেশি প্রশ্ন জমা পড়ে, ততই ওয়ার্ডভিত্তিক সমস্যাগুলি শোনা এবং সেগুলি সমাধানের সম্ভাবনা থাকে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Question Municipal Session KMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE