Advertisement
E-Paper

শ্বাসনালিতে আটকে বাদাম, রেফার করতেই ন’দিন পার

এসএসকেএম সূত্রে খবর, ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ইভানাকে ইএনটি বহির্বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। দ্রুত তাকে সেখানে ভর্তি করে নেওয়া হয়।

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৮ ০২:২৭
হাসপাতালে ইভানা। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালে ইভানা। নিজস্ব চিত্র

শহরের এক সরকারি হাসপাতাল থেকে আর এক সরকারি হাসপাতালে ‘রেফার’ করতেই পেরিয়ে গেল পাক্কা ন’দিন! আর এই ক’দিনে দু’বছরের অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে পিংপং বলের মতোই এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে দৌড়ে বেড়ালেন মা-বাবা! কখনও বক্ষ বিভাগ, তো কখনও কার্ডিওভাস্কুলার। সমস্যা ধরতেই পারেননি কেউ। মেয়ের বুকে কান পাতলেই পাওয়া যাচ্ছিল অদ্ভুত আওয়াজ। যন্ত্রণায় চোখ-মুখ লাল হয়ে উঠছিল একরত্তি শিশুটির। ন’দিন পরে শিশুটিকে রেফার করা হয় অন্য হাসপাতালে। সেখানে পরীক্ষায় জানা যায়, ফুসফুসে বাদাম আটকে রয়েছে। ব্রঙ্কোস্কোপি করে তা বার করার পরে শিশুটি এখন সুস্থ। কুড়ি দিনের মাথায় ফের বুক ভরে শ্বাস নিতে পারল সে।

বাদুড়িয়ার বাসিন্দা মনসুর আলি মণ্ডলের দু’বছরের মেয়ে ইভানা খাতুন দিন কুড়ি আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার বুকের কাছে কান পাতলেই অদ্ভুত আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। ঠিক মতো খেতেও পারছিল না মেয়েটি। বসিরহাট হাসপাতালে ক’দিন চিকিৎসার পরে তাকে আর জি করে রেফার করা হয়।

মনসুর জানান, ১৯ ফেব্রুয়ারি আর জি করে নিয়ে আসার পরে ইভানাকে প্রথমে শিশু বিভাগে পাঠানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এক্স-রে, সিটি স্ক্যান-সহ একাধিক পরীক্ষা হয়। রিপোর্ট পাওয়ার পরে প্রথমে তাকে বক্ষ রোগের বহির্বিভাগে দেখানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা আবার জানান, তাকে কার্ডিওভাস্কুলার বিভাগে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু সেখানেও কোনও চিকিৎসা মেলেনি। এর পরে তাকে পিজি-তে রেফার করা হয়।

এসএসকেএম সূত্রে খবর, ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ইভানাকে ইএনটি বহির্বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। দ্রুত তাকে সেখানে ভর্তি করে নেওয়া হয়। সন্ধ্যায় তার ব্রঙ্কোস্কোপির পরে চিকিৎসকেরা জানান, শ্বাসনালিতে বাদাম আটকে গিয়েছিল। বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে তা বার করা হয়। কিন্তু এত দিন ধরে শ্বাসনালিতে তা আটকে থাকায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে।

এসএসকেএম হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের প্রধান অরুণাভ সেনগুপ্ত জানান, শ্বাসনালিতে খাবার আটকে থাকলে তা দ্রুত বার করা জরুরি। ইভানার ক্ষেত্রে সেটা হয়নি বলে সমস্যা জটিল হয়ে ফুসফুসে সংক্রমণ ছড়ায়। তাঁর কথায়, ‘‘বাদাম ভেঙে গিয়েছিল। সেটিকে টুকরো টুকরো করে বার করতে হয়। আটকে গেলে মৃত্যুও হতে পারত। তবে এখন ইভানা ভাল আছে।’’

এসএসকেএম পারলে আর জি কর ব্রঙ্কোস্কোপি করতে পারল না কেন? ইভানার রিপোর্ট দেখে আর জি করের চিকিৎসকেরা প্রথমেই ইএনটি বিভাগে না পাঠিয়ে অন্য বিভাগে পাঠালেন কেন? আর জি কর কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই হেনস্থার কথা স্বীকার করতে নারাজ। তাঁদের দাবি, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। প্রথমে ইএনটি দরকার হয়নি বলেই সেখানে পাঠানো হয়নি।

আর জি কর-এর রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান, চিকিৎসক শান্তনু সেন বলেন, ‘‘আর জি করের ইতিহাসে এমন হয়নি। এখানে সব পরিকাঠামো রয়েছে। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখব।’’

Hospitals Nut Respiratory Child
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy