ভাঙা হবে বিমানবন্দরের পুরনো এই টার্মিনাল। নিজস্ব চিত্র
ভেঙে ফেলা হচ্ছে কলকাতা বিমানবন্দরের পুরনো ডোমেস্টিক বিল্ডিং।
আপাতত কলকাতায় আরও বেশি পার্কিং বে এবং এরোব্রিজ প্রয়োজন। বিশ্বের তাবড় দেশের বিমানবন্দরে ৯০ শতাংশ উড়ানের ক্ষেত্রেই এরোব্রিজ ব্যবহার করা হয়। টার্মিনাল থেকে ওই এরোব্রিজ দিয়ে সরাসরি বিমানে ওঠানামা করেন যাত্রীরা। কিন্তু কলকাতায় সেই এরোব্রিজের সংখ্যা মাত্র ১৮!
ঠিক হয়েছে, ২৬ হাজার বর্গমিটার জায়গা জুড়ে থাকা পুরনো ওই ডোমেস্টিক বিল্ডিং ভেঙে সেখানে বেশ কয়েকটি এরোব্রিজ বানানো হবে। বিমানবন্দরের বর্তমান টার্মিনাল থেকে ইংরেজি ‘ইউ’-এর মতো দেখতে একটি উইং বেরোবে। তার সঙ্গে লাগানো থাকবে ওই এরোব্রিজ। বর্তমান টার্মিনাল থেকে উইংয়ের মধ্য দিয়ে এরোব্রিজে পৌঁছে সরাসরি বিমান উঠে যেতে পারবেন যাত্রীরা।
পাশাপাশি বাড়ছে পার্কিং বে-র সংখ্যাও। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, কলকাতা থেকে সম্প্রতি ‘তাই স্মাইলি’ নামে একটি সংস্থা ব্যাঙ্ককের উড়ান চালু করেছে। স্পাইসজেট শুরু করেছে কলকাতা থেকে ঝাড়সুগুদার পরিষেবা। জুম এয়ার আবার মিজোরামের উড়ান চালু করবে বলে জানিয়েছে। এখন প্রতি দিন কলকাতা থেকে অন্য শহরে উড়ে যান গড়ে ৩০ হাজার যাত্রী। উড়ান-সংখ্যা বেড়ে দিনে হয়েছে ২২২। কিন্তু, পার্কিং বে সীমিত।
কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত এমন ঘটেনি যে, কোনও সংস্থা পার্কিং বে চেয়েছে কিন্তু আমরা দিতে পারিনি।’’ তবে আশঙ্কা, আগামী দিনে পার্কিং বে বাড়ানো না হলে সমস্যা বাড়বে।
কলকাতায় এখন ১৮টি এরোব্রিজ ছাড়াও ৪৫টি পার্কিং বে আছে। আরও দু’টি নতুন পার্কিং বে তৈরি হয়েছে। সেগুলি চালুর অনুমতি অবশ্য এখনও এসে পৌঁছয়নি। চলতি বছরের মধ্যে তৈরি হবে আরও দু’টি পার্কিং বে। মূলত ছোট বিমান এখানে দাঁড় করানো হয়। অন্য দিকে এয়ারবাস ৩২০, বোয়িং ৭৩৭-এর বড় বিমানকে চেষ্টা করা হয় এরোব্রিজে দাঁড় করাতে। কিন্তু পর্যাপ্ত এরোব্রিজও না থাকায় কলকাতায় বড় বিমানকেও দূরের পার্কিং বে-তে দাঁড় করিয়ে যাত্রীদের টার্মিনাল থেকে বাসে পৌঁছে দেওয়া হয়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সীমিত পার্কিং বে-র সমস্যার জন্য জেট-এর দু’টি এবং স্পাইসজেটের একটি বিমান তিনটি পার্কিং বে-তে আটকে রয়েছে। আর্থিক কারণে ভাড়া না মেটানোর ফলে প্রচুর বিমান বসিয়ে দিতে হয়েছে জেট-কে। তার মধ্যে কলকাতায় বসে দু’টি। আর স্পাইসজেট যে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান চালায়, সম্প্রতি সেই বিমান দু’বার দুর্ঘটনার মুখে পড়ায় ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ)-এর নির্দেশে তা-ও আপাতত বসিয়ে দিতে হয়েছে। এমনই একটি ম্যাক্স বিমান কলকাতায় একটি পার্কিং বে দখল করে আছে।
কৌশিকবাবু জানিয়েছেন, নির্ধারিত সূচি মেনে কলকাতায় যে বিমানগুলি ওঠানামা করছে, তার বাইরেও মাঝেমধ্যে বিমান চলে আসে। সম্প্রতি ঢাকা ও ভুবনেশ্বরে আবহাওয়া খারাপ থাকায় সেখানে নামতে না পেরে কলকাতায় এসেছে বিমান। কাঠমান্ডুতে পার্কিং-বে কম থাকায় সেখানে নামতে না পেরেও কলকাতায় নেমেছে বিমান।
পুরনো যে ডোমেস্টিক বিল্ডিং ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেটি তৈরির কাজ শেষ হয় ১৯৯৪ সালের ডিসেম্বরে। পরের বছরের জানুয়ারিতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নামে চালু হয় নতুন ডোমেস্টিক ও আন্তর্জাতিক বিল্ডিং। তখন কলকাতা থেকে বিভিন্ন রুটে উড়ান চালু করেছিল একাধিক সংস্থা। কিন্তু, যাত্রী ও উড়ান সংখ্যা আরও বেড়ে যাওয়ায় ২০১৩ সালে চালু হয় নতুন টার্মিনাল। তার পর থেকে খালিই পড়ে রয়েছে পুরনো সেই বাড়ি।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, আগামী অগস্ট মাস থেকে শুরু হতে চলেছে ডোমেস্টিক বিল্ডিং ভেঙে ফেলার কাজ। তা শেষ হলেই শুরু হবে এরোব্রিজ তৈরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy