Advertisement
E-Paper

প্রতিবাদী উত্তাপে বইমেলাকে বিদায়

বিকেলে লিটল ম‍্যাগাজ়িন প‍্যাভিলিয়ন তল্লাটে ব‍্যাগে খাবারের বাক্স বা ভারী জলের বোতলের নীচ থেকে বেরোল প্রতিবাদের পোস্টার।

সরব: আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ বইমেলায়। রবিবার।

সরব: আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ বইমেলায়। রবিবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

ঋজু বসু

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:৫৪
Share
Save

শেষ দিনে কিছু একটা ঘটতে চলেছে, খবরটা পেয়ে সতর্ক হয়ে গিয়েছিলেন পুলিশ বা গিল্ডকর্তারা। সেই মতো রবিবার দুপুর থেকেই বইমেলার গেটে কড়াকড়ি শুরু হয়ে যায়। কিন্তু যাঁদের নিয়ে এত সতর্কতা, তাঁরাও কম যান না। তাই বিকেলে লিটল ম‍্যাগাজ়িন প‍্যাভিলিয়ন তল্লাটে ব‍্যাগে খাবারের বাক্স বা ভারী জলের বোতলের নীচ থেকে বেরোল প্রতিবাদের পোস্টার। প্রতিবাদের সেই বার্তাই শেষ দিনে বাঙালির বই উৎসবের একটি চিরকালীন চরিত্র মেলে ধরেছে।

আর জি কর-কাণ্ডে নিহত চিকিৎসক-ছাত্রীর জন্মদিন এবং বইমেলার শেষ দিন, দুটো মিলে গিয়েছে কাকতালীয় ভাবেই। যাঁরা মিছিলে হাঁটলেন, তাঁরা অনেকেই শ‍্যামবাজার থেকে সল্টলেকমুখো হয়েছেন। পাবলিশার্স অ‍্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের দুই কর্তা ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ‍্যায় এবং সুধাংশুশেখর দে ধারাবাহিক ভাবে বলে আসছিলেন, বইমেলা প্রতিবাদের জায়গা নয়। বইয়ে যা খুশি লেখা গেলেও মিছিল, সভা করে প্রতিবাদ তাঁরা মানবেন না। কিন্তু প্রতিবাদীরা অন‍্য ধাঁচের বিশ্বাস মেলে ধরেছেন। শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রতিবাদও যে বইমেলার ঐতিহ‍্য, তা মনে করিয়েই সরব হন তাঁরা।

সল্টলেকে বইমেলার স্থায়ী মাঠ করে দেওয়া থেকে শুরু করে এত বড় কর্মযজ্ঞ আয়োজনে মুখ‍্যমন্ত্রী মমতা বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়ের সহায়তার কথা পাঁচ মুখে বলে থাকেন গিল্ডকর্তারা। আর জি কর-কাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদের ছাপ যাতে বইমেলার মাঠে না-পড়ে, বিশেষ সতর্ক ছিলেন তাঁরা। বইমেলার মুক্তমঞ্চটি এ বার প্রতিবাদের ভয়ে রাখা হয়নি বলে অভিযোগ। এমনকি, সাহিত‍্য উৎসবেও স্পর্শকাতর বিষয়ে আলোচনা রাখা হয়নি। তবু শেষরক্ষা কার্যত হল না। লিটল ম্যাগাজ়িন প‍্যাভিলিয়নের পিছনে ত্রিভুজাকৃতি একটি অংশের নাম কেউ কেউ দিয়েছিলেন ‘অভয়া চত্বর ত্রিকোণ পার্ক’! সেই তল্লাটই বইমেলার শেষ সন্ধ‍্যায় ঘটনাবহুল হয়ে ওঠে।

ধর্ষণ সংস্কৃতি বন্ধের দাবিতে স্লোগান ওঠে। সিবিআই বা নবান্নের ১৪তলার ভূমিকা নিয়েও স্লোগানে অসন্তোষ। রাত দখল ঐক‍্য মঞ্চের তরফে গত ১৪ অগস্ট রাতের অনেক প্রতিবাদীই এ দিন কার্যত বইমেলার ‘মাঠ দখল’ করেন। তাঁরা মনে করিয়েছেন, অতীতে কানোরিয়া চটকলের প্রতিবাদ থেকে শুরু করে বাবরি মসজিদের ঘটনার পরে সম্প্রীতির বার্তা দিতে বইমেলার মাঠ সমাজসচেতন চরিত্রের পরিচয় রেখেছে। মাইক বাজিয়ে গান, নাচ, কুইজ় হলে প্রতিবাদী স্লোগান কী দোষ করল?

পাঁচ বছর আগে নাগরিকত্ব আইন বিরোধী প্রতিবাদেও বইমেলার মাঠে নির্বিচারে পুলিশি লাঠিতে নিন্দার ঝড় উঠেছিল। এ দিন পুলিশের ভূমিকা পরিণত। নজর রাখলেও পুলিশ সংঘাতে যায়নি। লিটল ম্যাগাজ়িন চত্বর এবং ছাত্রসংগ্রামের স্টলের পাশে প্রতিবাদ দেখা যায়। সন্ধ‍্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত চলেছে প্রতিবাদ।

শেষ দিনের আড্ডা, গল্প, বই কেনার মেজাজটাও একই রকম। গিল্ডকর্তারা জানান, গত বারের থেকে এক দিন কম হলেও ২৭ লক্ষ জনতা এসেছেন। কেনাকাটার হার গত বারের থেকে ৫-১০ শতাংশ বেশি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

RG Kar Protest Kolkata Book Fair 2025

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}