মুখ্যমন্ত্রীর চালু করা লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা প্রতি মাসে পৌঁছে যায় উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। কিন্তু সম্প্রতি পুলিশের কাছে অভিযোগে মুচিপাড়া থানা এলাকার এক গ্রাহকের স্বামী জানিয়েছিলেন, তাঁর স্ত্রী এবং এক আত্মীয়ের অ্যাকাউন্টে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা ঢুকছে না। সেই অভিযোগের সূত্র ধরে তদন্তে নেমে সোমবার রাতে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম উমেশকুমার দাস। সে কলকাতা পুরসভার পাঁচ নম্বর বরোর কর্মী। উমেশকে মঙ্গলবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে বিচারক চার দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, লক্ষ্মীর ভান্ডারের যে দুই গ্রাহকের তরফে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল, তাঁদের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, দুয়ারে সরকার শিবিরে ওই গ্রাহকদের বলা হয়েছিল, তাঁদের নাম লক্ষ্মীর ভান্ডারে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এর জন্য তাঁদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নথি নিয়েছিল অভিযুক্ত উমেশ। এর পরে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। কিন্তু তার পরেও সেই অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট টাকা ঢোকেনি। তখন অভিযোগকারীরা কলকাতা পুরসভা ও ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, দীর্ঘদিন ধরে উমেশের অ্যাকাউন্টে ঢুকছে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা।
তদন্তকারীদের অনুমান, লক্ষ্মীর ভান্ডারের জন্য অ্যাকাউন্ট খোলার সময়ে উপভোক্তাদের নথি সংগ্রহ করে তাতে কারচুপি করত উমেশ। যার ফলে ওই টাকা সরাসরি তার অ্যাকাউন্টে আসত। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, প্রায় তিন বছর ধরে এই কৌশলে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা তুলেছে উমেশ। তার সঙ্গে আর কেউ এই প্রতারণায় জড়িত কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা আসত, সেই ব্যাঙ্কের কোনও কর্মী জড়িত কিনা, তা-ও তদন্তে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই গিরিশ পার্ক থানায় এই একই কায়দায় লক্ষ্মীর ভান্ডারের উপভোক্তাদের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ মনে করছে, অভিযুক্ত উমেশ ওই প্রতারণার ঘটনাতেও জড়িত থাকতে পারে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)