E-Paper

বদ্ধ ঘরে উনুন জ্বেলে ঘুম, মৃত এক ও অসুস্থ দুই

দু’জনের চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে। পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে নারকেলডাঙা থানা এলাকার বেলেঘাটা রোডের একটি বস্তিতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৫ ০৬:৫৭
কুন্দনকুমার রায়।

কুন্দনকুমার রায়। —নিজস্ব চিত্র।

শীতের রাতে ঠান্ডা থেকে বাঁচতে বদ্ধ ঘরে কয়লার উনুন জ্বালিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তিন জন। তাতেই দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হল এক যুবকের। ঘরে থাকা অন্য দু’জনের চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে। পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে নারকেলডাঙা থানা এলাকার বেলেঘাটা রোডের একটি বস্তিতে। মৃত যুবকের নাম কুন্দনকুমার রায় (২৫)। তাঁর বাড়ি বিহারের সিওয়ানে। যদিও তিনি সপরিবার বেলেঘাটা রোডে থাকতেন। অসুস্থ দুই যুবক, ধীরেন্দ্র রায় (২৮) ও কিশোর রায় (৪০) নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল।

দরজা-জানলা বন্ধ করে ঘরে উনুন জ্বালালে অক্সিজেন ফুরিয়ে যায় ও বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়। তা থেকেই বিপত্তি ঘটেছে বলে অনুমান। ঘরে পোড়া কয়লা-সহ মাটির উনুন মিলেছে। ঘরে একটিমাত্র ছোট জানলা রয়েছে। সেটিও ছিল বন্ধ। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, শ্বাসরোধ হয়েই মৃত্যু হয়েছে কুন্দনের। নারকেলডাঙা থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে পুলিশ। মৃতের পরিবার কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি।

কুন্দনের কাকা প্রমোদ জানান, কুন্দন, ধীরেন্দ্র, কিশোর একই পরিবারের সদস্য। ধীরেন্দ্র ও কিশোরেরও আদি বাড়ি বিহারে। কুন্দন ঝালাইয়ের কাজ করতেন। ধীরেন্দ্র ও কিশোর চানাচুর বিক্রি করেন। একটি ঘরেই তিন যুবক থাকতেন। পাশের একটি ঘরে সপরিবার থাকেন প্রমোদ। আর একটি ঘরে থাকেন কুন্দনের বাবা উমেশ রায়। প্রমোদ বলেন, ‘‘রাতের খাওয়া সেরে কুন্দন, ধীরেন্দ্র এবং কিশোর ১১টা নাগাদ ওই ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। শনিবার সকালে অনেক ডাকাডাকির পরেও কেউ ওঠেনি। বাইরে চেঁচামেচি শুরু হওয়ায় ধীরেন্দ্র দরজা খোলে। তার পরেই জ্ঞান হারায় সে। পাড়ার লোকজন ও আমি ঘরে ঢুকে দেখি, কুন্দন ও কিশোর খাটে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে।’’

পুলিশ জানিয়েছে, তিন জনকে উদ্ধার করে এন আর এসে নিয়ে গেলে কুন্দনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বাকি দু’জনকে ভর্তি করা হয়েছে। এক পুলিশ অফিসার জানান, বন্ধ ঘরে কয়লার উনুন জ্বালালে কার্বন মনোক্সাইডের মতো বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়। তা শ্বাসনালি দিয়ে শরীরে ঢুকলে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে পড়েন মানুষ। এ ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটেছে বলে অনুমান।

কুন্দনের বাবা উমেশও বেলেঘাটায় চানাচুর বিক্রি করেন। কুন্দন আগে গুজরাতে কাজ করতেন। দেড় বছর হল তাঁর বিয়ে হয়েছে। স্ত্রী আছেন বিহারের বাড়িতে। কয়েক মাস আগে কুন্দন কলকাতায় আসেন। এখানেও ঝালাইয়ের কাজ করতেন। ধীরেন্দ্র ও কিশোরও মাসখানেক আগে কলকাতায় এসে চানাচুর বিক্রি করতেন। এ দিন সন্ধ্যায় পাড়ায় আনা হয় কুন্দনের দেহ। স্থানীয় বাসিন্দা জি এন মিশ্র বলেন, ‘‘তিন জনই খুব ভাল ছেলে। ঘটনাটি জেনে মনটা খারাপ হয়ে আছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Death

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy