ধর্ষণের জেরে এক নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে, এই অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে বন্দর অঞ্চলের একটি থানা এলাকায়। ধৃতের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম কুতুবউদ্দিন শাহ ওরফে রোহিত। সোমবার দুপুরে তাকে গার্ডেনরিচ থানার শ্যামলাল লেন থেকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতকে সোমবার আলিপুরের বিশেষ পকসো আদালতে তোলা হলে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারক। সরকারি আইনজীবী শুভাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওই নাবালিকাকে ফুসলিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। কলকাতা এবং দিঘার বিভিন্ন হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাকে। দ্রুত তদন্ত করার জন্য অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে হবে।’’
আদালত সূত্রের খবর, নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি গ্রহণ করার আবেদন মঞ্জুর হওয়ায় এ দিনই তা গ্রহণ করা হয়েছে। নির্যাতিতার মেডিকো-লিগাল পরীক্ষারও আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদনও বিচারক মঞ্জুর করেছেন বলে আদালত সূত্রের খবর। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই নাবালিকার বয়ান লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতার বয়স বছর পনেরো। গত ২৮ সেপ্টেম্বর সে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। নাবালিকা লিখিত অভিযোগে পুলিশকে জানিয়েছে, কয়েক মাস আগে বছর উনিশের কুতুবউদ্দিন তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল। এর পরে সেই বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়ে অভিযুক্ত জোর করে নাবালিকাকে শহরের একাধিক হোটেলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। নাবালিকার সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, হোটেলে নিয়ে গিয়ে প্রথমে তার ব্যক্তিগত ছবি ক্যামেরাবন্দি করে রেখেছিল অভিযুক্ত। পরে সেই ছবি দেখিয়েই শহরের বিভিন্ন হোটেলে নাবালিকাকে যেতে বাধ্য করে সে। সেখানে নিয়ে গিয়ে তাকে একাধিক বার ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। বাড়িতে না জানানোর জন্য ওই কিশোরীকে বিভিন্ন ভাবে ভয় দেখানো হয় বলেও অভিযোগ। সেই ভয়েই নাবালিকা বাড়িতে কিছু জানায়নি। কিন্তু সম্প্রতি সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ায় বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা শুরু হয়। পরিবারের সদস্যেরা নাবালিকাকে চাপ দিলে তখন ধর্ষণের ঘটনার কথা পরিবারকে জানায় সে।
পরিবারের সদস্যেরা বিষয়টি জানার পরেই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে পকসো আইনে মামলা রুজু করে পুলিশ। নাবালিকা লিখিত অভিযোগ দায়ের করতেই বাড়ি ছেড়েছিল অভিযুক্ত। একাধিক বার তার খোঁজে তল্লাশি চালানো হলেও খোঁজ মেলেনি। দিন দুই আগে সে বাড়ি ফেরে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে বাড়ির সামনে থেকেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)