ধারের টাকা শোধ না করা নিয়ে দুই ব্যবসায়ীর বিবাদ। যার জেরে এক ব্যবসায়ীকে ডেকে এনে কাটারি দিয়ে কুপিয়ে খুন করে অপর ব্যবসায়ী। তার পরে সেই কাটারি নিয়ে মোটরবাইকে করে বৌবাজার থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে। ২০১৬ সালে বিপ্লবী অনুকূলচন্দ্র স্ট্রিটের সেই ঘটনায় খুনিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিল কলকাতা নগর দায়রা আদালত। সেই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে, যে টাকা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। শুক্রবার বিচারক রোহন সিংহ এই সাজা শুনিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামির নাম রামেশ্বর সাহানি ওরফে পাইলট। আদতে বিহারের বাসিন্দা রামেশ্বর থাকত বৌবাজার থানা এলাকার অভয় হালদার লেনে।
আদালত সূত্রের খবর, ব্যবসায়িক কারণে নিউ মার্কেট থানা এলাকার বাসিন্দা, নির্মাণ ব্যবসায়ী বুদ্ধদেব সাহা ওরফে বাবুলালকে কয়েক কোটি টাকা ধার দিয়েছিল ৬৩ বছরের রামেশ্বর। সেই টাকা ফেরত না দেওয়ায় দু’জনের মধ্যে বিবাদ চলছিল। সেই বিবাদ চরমে উঠলে নিউ মার্কেট থানা এলাকার বাসিন্দা, ধারালো অস্ত্র তৈরির এক কারবারির কাছ থেকে একটি কাটারি কেনে রামেশ্বর। ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি কথা বলার নাম করে বৌবাজার থানা এলাকার বিপ্লবী অনুকূলচন্দ্র স্ট্রিটে বুদ্ধদেবকে ডেকে আনে সে। দোকানের একটি টুলে বসতে বলে তাঁকে। তার পরে কাছেই নিজের বাইকের মধ্যে লুকিয়ে রাখা কাটারি এনে প্রকাশ্য রাস্তায় বুদ্ধদেবকে পিছন থেকে কোপাতে থাকে রামেশ্বর।
কাটারির এলোপাথাড়ি কোপে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন ক্ষতবিক্ষত বুদ্ধদেব। তাঁকে উদ্ধার করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনার পরে কাটারি নিয়েই বাইকে করে বৌবাজার থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে রামেশ্বর। তাকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার রামেশ্বরকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত। শুক্রবার সাজা ঘোষণা হয়।
মামলার সরকারি কৌঁসুলি টুলটুল দে বলেন, ‘‘রামেশ্বর জামিন পায়নি। খুনে ব্যবহৃত কাটারি আদালতে জমা দেওয়া হয়। ওই অস্ত্র প্রস্তুতকারী-সহ ২৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)