বরাহনগরের বাসিন্দা, পরিবহণকর্মী বিকাশ মজুমদারের স্ত্রীকে আটক করল পুলিশ। শুক্রবার সকালে ওই প্রৌঢ়কে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল দুই দুষ্কৃতী। অল্পের জন্য তিনি প্রাণে বেঁচে যান। তদন্তে নেমে প্রথম থেকেই পুলিশের সন্দেহ ছিল, নেপথ্যে রয়েছেন নিকট কোনও আত্মীয়। তিনিই দুষ্কৃতীদের ভাড়া করেছিলেন।
ওই দিন সকালে ফ্ল্যাটের অদূরে ভ্যাটে আবর্জনা ফেলে ফিরছিলেন বিকাশ। সেই সময়ে বাইক নিয়ে অপেক্ষায় থাকা দুই দুষ্কৃতী তাঁকে লক্ষ্য করে পাইপগান থেকে গুলি ছোড়ে। মাথা নিচু করে প্রাণে বাঁচলেও ছররায় গলা ও হাতে আঘাত পান বিকাশ। কেউ কেন তাঁর মতো ছাপোষা সরকারি কর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়বে, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন ওই প্রৌঢ়। তদন্তকারীরাও বিষয়টি নিয়ে ধন্দে পড়েন বলে খবর। তবে গোপন সূত্রে পারিবারিক একটি সমস্যার কথা তদন্তকারীরা জানতে পারেন। বরাহনগর থানা ও ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বাহিনী তদন্ত শুরু করে। বিকাশ ও তাঁর স্ত্রী রেখা মজুমদারকে থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, দফায় দফায় দু’জনকেই আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাতে রেখার কথায় কিছু অসঙ্গতি মেলে বলে খবর। তার পরেই তাঁকে আটক করে পুলিশ। সূত্রের আরও খবর, রেখার পরিচিত এক ব্যক্তিকেও আটক করা হয়েছে। ঘটনায় তাঁর কোনও ভূমিকা রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ আধিকারিকেরা।
অন্য দিকে, বরাহনগরের নর্দার্ন পার্কে গুলি চালিয়ে গলির রাস্তা ধরে ওই দুই দুষ্কৃতীর বাইক নিয়ে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার ফুটেজ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, ওই দুই দুষ্কৃতী এসেছিল হাওড়ার দিক থেকে। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে উঠে তারা ফের সেই দিকেই চলে গিয়েছিল। ব্যারাকপুরের নগরপাল মুরলীধর শর্মা বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। বাকি দিকও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, রোজ সকাল সওয়া ৬টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে যে বিকাশ আবর্জনা ফেলতে যান এবং তখন এলাকা কার্যত ফাঁকা থাকে, সেই খবর অতি সহজে একমাত্র জানা সম্ভব পরিজনদের। সেই মতোই দুষ্কৃতীদের পাঠানো হয়েছিল। তবে গলির ভিতরে ঠিক কোন জায়গায় অপেক্ষা করতে হবে, তা দুষ্কৃতীরা আগে দেখে গিয়েছিল কিনা এবং কে সেই জায়গা দেখিয়ে দিয়েছিল, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা। এক কর্তার কথায়, ‘‘দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের পরে বিষয়টি আরও স্পষ্ট করা সম্ভব হবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)