বড়বাজারের অগ্নিকাণ্ডে ঋতুরাজ হোটেলের মালিক আকাশ চাওলা এবং ম্যানেজার গৌরব কপূরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার রাতে এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করে দমকল। পাশাপাশি, পুলিশও সুয়ো মোটো (স্বতঃপ্রবৃত্ত) অভিযোগ দায়ের করে। সেই দুই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের হয়। ম্যানেজার গৌরবকে বুধবারই জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে গিয়েছেন দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু এবং নগরপাল মনোজ পন্থ। বড়বাজারের ওই হোটেলে গিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও।
পুলিশ জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডে মৃত ১৪ জনের মধ্যে ১২ জনের পরিচয় জানা গিয়েছে। তাঁরা প্রায় সকলেই ভিন্রাজ্যের বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে খবর, ছ’তলা ওই হোটেলের ছাদে এবং ছাদের কাছে পড়ে ছিল দু’টি দেহ। এ ছাড়া, দোতলা থেকে তিন তলায় ওঠার সিঁড়িতে ছিল এক জনের দেহ। বাকি ১০টি দেহ পাওয়া গিয়েছে হোটেলের বিভিন্ন ঘর থেকে।
আরজি করে যে সমস্ত দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে, তার রিপোর্ট বলছে, অধিকাংশের মৃত্যুর কারণ বিষাক্ত ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে যাওয়া। এনআরএস হাসপাতালের দেহগুলির ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কোনও পোড়া ক্ষতের উল্লেখ নেই। সেখানে যাঁদের ময়নাতদন্ত হয়েছে, মূলত শ্বাসরুদ্ধ হয়েই তাঁদের মৃত্যু হয়েছিল। যিনি ঝাঁপ দিয়েছিলেন, মেডিক্যাল কলেজের কাছে পুলিশ মর্গে তাঁর দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, তাঁর মৃত্যুর কারণ একটি নির্দিষ্ট উচ্চতা থেকে পতন।
অগ্নিকাণ্ডের পরেই হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফলতির অভিযোগ উঠেছে। বুধবার ঘটনাস্থলে যান দমকলের ডিজি রণবীর কুমার। তিনি জানান, ওই হোটেলের ‘ফায়ার লাইসেন্স’-এর মেয়াদ শেষ হয়েছিল তিন বছর আগেই। তার পর তা আর নবীকরণ করাননি কর্তৃপক্ষ। হোটেলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকলেও অগ্নিকাণ্ডের সময় তা কাজ করেনি। হোটেল মালিক আকাশ এবং অতুলের খোঁজ শুরু করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, হাওড়ার গোলাবাড়ি থানা এলাকার অন্তর্গত সাবার্বান পার্ক রোডের বাসিন্দা দু’জনে। সেখানে একটি আবাসনে থাকেন তাঁরা। বুধবার সেখানেই যায় লালবাজারের একটি দল। যদিও সেখানে দুই ভাইকে পাওয়া যায়নি। তবে আকাশ এবং অতুলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশ আধিকারিকেরা। বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হল আকাশকে।