লড়াই: শীতের রাতে অবস্থান পার্ক সার্কাস ময়দানে। নিজস্ব চিত্র
শীতের হঠাৎ বৃষ্টিতে মাথার উপরে ছাদ নেই। কনকনে জানুয়ারিতেও হিমঝরা আকাশের নীচে রাত্রিবাস। নয়া নাগরিকত্ব আইন বিরোধী প্রতিবাদে কলকাতার কেন্দ্র পার্ক সার্কাস ময়দানে অবস্থানকারীদের জন্য তাই তাঁবু খাটানোর অনুমতি আদায় করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় স্বাক্ষর করে আর্জি জানাতে শুরু করেছেন নাগরিকেরা।
বেলুড় বিদ্যামন্দির কলেজের দর্শনের অধ্যাপক শামিম আহমেদ ফেসবুকে তুলে ধরেছিলেন অবস্থানকারীদের এই লড়াই। তিনি বলছেন, ‘‘অবস্থানকারীদের সহ-নাগরিকেরা, যাঁরা শীতের রাতে কম্বলমুড়ি দিয়ে ঘুমোন, তাঁরাই এই দাবি তুলেছেন। মনে রাখতে হবে, যাঁরা রাস্তায় নেমেছেন তাঁরা কিন্তু সবার জন্য, দেশের সংবিধান রক্ষার জন্য প্রতিবাদ করছেন।’’
এই দাবি ওঠার পরে বার্তার নীচে নিজের নাম যোগ করে অনেকেই সেটি সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে দেওয়ালে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। পার্ক সার্কাস, রিপন স্ট্রিটের কয়েক জন প্রবীণা, যাঁরা ইচ্ছে থাকলেও বয়সের জন্য সচরাচর রাজপথের মিছিলে হাঁটতে পারেন না, প্রতিবাদের শরিক হওয়ার ইচ্ছেয় তাঁরাই পার্ক সার্কাসের ময়দানে অবস্থানে যেতে চেয়েছিলেন। এখন দিল্লির শাহিনবাগের মতো কলকাতার পার্ক সার্কাসও সবার প্রতিবাদের মাঠ হয়ে উঠেছে। যাঁরা বসে থাকছেন বা রাত জাগছেন তাঁদের জন্য থার্মোকল, শতরঞ্চি পাতার ব্যবস্থা করেছে স্থানীয় কয়েকটি ক্লাব। কম্বলও এনে দিচ্ছেন সেখানকার সদস্যেরা। কয়েক জন প্রতিবাদী অবশ্য মাঠের গুমটিতে ঢুকতে পারছেন। কিন্তু বেশির ভাগেরই সেখানে ঢোকার জো নেই। রাতের হিম পড়ে শতরঞ্চি, কম্বল ভিজে যায়। তবু বসে-দাঁড়িয়ে চলছে গান ও স্লোগান। প্রতিবাদের অন্যতম নেপথ্য কারিগর, সমাজকর্মী আব্দুল জামিল বলছিলেন, ‘‘পুরসভার কাছে এখনও অনুমতি পাইনি।’’ কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার কিন্তু বলছেন, ‘‘কাউকে না-জানিয়ে পার্কে বসে পড়াটা বেআইনি। ওঁরা কোনও অনুমতি চাননি। এই অবস্থায় তাঁবু খাটানোর অনুমতি কী করে দিই?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy