Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Fire Cracker

বাজি বাজারে অনুমতি পুলিশের, তবু আশঙ্কা নিষিদ্ধ বাজির রমরমার

আগামী ১৮ থেকে ২৪ অক্টোবর কালীপুজোর দিন পর্যন্ত, সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা শহরের তিন জায়গায় এই বাজার চলবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২২ ০৮:০১
Share: Save:

করোনাকালে দু’বছর বন্ধ থাকার পরে এ বার ফের বসতে চলেছে বাজি বাজার। শুক্রবার বাজি বিক্রেতা-সহ বাজি শিল্পের সঙ্গে জড়িত সব পক্ষকে নিয়ে কলকাতা পুলিশের সমন্বয় বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী ১৮ থেকে ২৪ অক্টোবর কালীপুজোর দিন পর্যন্ত, সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা শহরের তিন জায়গায় এই বাজার চলবে। অন্য একটি বাজার ঘিরে জটিলতা এখনও কাটেনি। তবে এই বাজারগুলিতে শুধু সবুজ বাজিই বিক্রি করা যাবে। উদ্যোক্তাদের রাখতে হবে একাধিক নিরাপত্তার বন্দোবস্ত।

তবে এর মধ্যেই উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। সবুজ বাজি এই রাজ্যের কোথায় তৈরি হয়, সেই সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই কারও। এই রাজ্যের ৩২ জন বাজি ব্যবসায়ী ‘ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ (নিরি) থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ২২ জন সবুজ বাজি তৈরির ছাড়পত্র পেয়েছেন। কিন্তু বারকোড এসে গিয়েছে এবং এখন থেকেই সবুজ বাজি তৈরি শুরু করে দিয়েছেন, এমন ব্যবসায়ীর সংখ্যা মাত্র চার। ফলে রাজ্যে তৈরি সবুজ বাজির জোগান এই মুহূর্তে যথেষ্ট কম। এ বারও ভিন্ রাজ্য থেকে আনা বাজিই যে বিক্রি করা হতে পারে, সেটি এক প্রকার নিশ্চিত। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, সবুজ বাজির আড়ালে দেদার নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি হবে না তো? কারণ বাজি ব্যবসায়ীদের একাংশই জানাচ্ছেন, পুলিশের তত্ত্বাবধানে হওয়া বাজি বাজারগুলিতে মাত্র ১০ শতাংশ বাজি বিক্রি হয়। ৯০ শতাংশ বাজির লেনদেন চলে বৈধ বাজি বাজারের বাইরে। সেখানে বাজার বসার অনুমতি দিয়ে পুলিশ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করলেও তাতে কি আদৌ সুরাহা মিলবে?

বাজি ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এ দিন কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে ওই বৈঠকে পুলিশ, পুরসভা, দমকল এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি ছিলেন নিরি ও পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভ সেফটি অর্গানাইজ়েশন বা পেসো-র আধিকারিকেরা। ছিলেন টালা, শহিদ মিনার, বেহালা এবং কালিকাপুরের বাজি বাজারের প্রতিনিধিরা। অন্যান্য বার বিজয়গড়ে একটি বাজি বাজার বসলেও সেখানকার উদ্যোক্তারা এই বছরে আর এগোননি বলে খবর। শহিদ মিনারে হওয়া বাজারটি বাগবাজারে সরিয়ে নিয়ে আসার কথা থাকলেও এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এ দিন আলোচনার শুরুতেই জানানো হয়, আদালতের নির্দেশ মতো এই বছরে শুধুমাত্র সবুজ বাজি বিক্রিতে ছাড় রয়েছে। সেই সঙ্গে বলা হয়, বাজার তৈরি করতে হবে টিন এবং আগুন ধরে না এমন বিশেষ ধরনের ত্রিপল দিয়ে। বাজার চত্বরে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখার পাশাপাশি দমকলের ইঞ্জিন এবং অ্যাম্বুল্যান্স রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ‘পশ্চিমবঙ্গ বাজি শিল্প উন্নয়ন সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর মান্না বলেন, ‘‘বৈধ বাজি বাজার হওয়ার অর্থ, ব্যবসায়ীদের মধ্যেও দায়বদ্ধতা তৈরি হওয়া। বৈধ বাজারের বাইরে যে কোনও বাজির লেনদেন ধরে ব্যবস্থা নেওয়া পুলিশের পক্ষেও সহজ হবে।’’

এ বার কলকাতা পুলিশের তরফে এক লক্ষ লিফলেট ছাপানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। কালীপুজোর রাতে আটটা থেকে দশটা যে বাজি ফাটানোর ছাড়পত্র রয়েছে, তার পাশাপাশি একমাত্র সবুজ বাজিতে ছাড় থাকার বিষয়ে ওই লিফলেটে প্রচার চালানো হবে। এ নিয়ে পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘সচেতনতার প্রচার ছাড়া শুধুমাত্র কড়া আইন করে বাজির দাপট রোখা যাবে না। কিউআর কোড দেখে নিশ্চিত হয়ে বৈধ বাজারগুলিতে বাজি বিক্রির ছাড়পত্র দেওয়া হবে। এর সঙ্গেই চলবে নিষিদ্ধ বাজির বিরুদ্ধে অভিযান।‘‘ কিন্তু তার পরেও বাজির শব্দ জব্দ হবে তো? উত্তর মিলবে এক সপ্তাহ পরেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fire Cracker police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE