Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

যুবকের মৃত্যু কি ‘গণপিটুনিতে’, দ্বন্দ্বে পুলিশ ও পরিবার

রবিবার সকালে কালীঘাট থানা এলাকার শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড ও গুরুপদ হালদার রোডের মোড়ে একটি গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় শঙ্করের অচৈতন্য দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

শঙ্কর মণ্ডল

শঙ্কর মণ্ডল

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯ ০০:১৪
Share: Save:

হাজরার বাসিন্দা সেই যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে পার হয়ে গিয়েছে চব্বিশ ঘণ্টা। শঙ্কর মণ্ডল নামে পঁচিশ বছরের ওই যুবকের পরিবারের অভিযোগ, গণপিটুনিতে শঙ্কর মারা গিয়েছেন। তা সত্ত্বেও কালীঘাট থানার পুলিশ অভিযোগ নেয়নি। পুলিশ অসহযোগিতা করছে বলেও অভিযোগ।

রবিবার সকালে কালীঘাট থানা এলাকার শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড ও গুরুপদ হালদার রোডের মোড়ে একটি গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় শঙ্করের অচৈতন্য দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে শঙ্করকে সেখানে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

সোমবার শঙ্করের মা মঙ্গলাদেবী ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হল। চব্বিশ ঘণ্টা পরে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এমনকি আমাদের অভিযোগও পুলিশ নিচ্ছে না।’’ শঙ্করের ভাই শম্ভুর অভিযোগ, ‘‘দাদাকে যারা মেরে ফেলল তাদের বিরুদ্ধে রবিবার রাতে আমরা কালীঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গিয়েছিলাম। পুলিশ অভিযোগ নেয়নি। পুলিশ জানিয়েছিল ময়না-তদন্তের রিপোর্ট না এলে অভিযোগ দায়ের করা যাবে না।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তবে কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) মিরাজ খালিদ বলেন, ‘‘পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করেছে। সেই জন্য আলাদা করে অভিযোগ নেওয়া হয়নি।’’ শঙ্করের গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ তুললেও ঘটনাটিকে গণপিটুনি বলে মনে করছে না পুলিশ। ডিসি (দক্ষিণ) মিরাজ খালিদ বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, মোবাইল চুরির ঘটনায় ৩-৪ জন মিলে শঙ্করকে মারধর করেছিল। এটাকে ঠিক গণপিটুনি বলা যায় না। ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টেও গণপিটুনির বিষয়টি পরিষ্কার নয়।’’

দক্ষিণ কলকাতায় হাজরার সাহেববাগান বস্তির এক চিলতে ঘরে দুই ছেলেকে নিয়ে বসবাস মঙ্গলাদেবীর। বাড়ি বাড়ি পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান তিনি। স্বামী কয়েক বছর আগেই মারা গিয়েছেন। বড় ছেলে শঙ্কর দিনমজুরের কাজ করতেন। সোমবার দুপুরে এসএসকেএমে ময়না-তদন্তের পরে শঙ্করের মৃতদেহ দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার লক্ষ্মীকান্তপুরে তাঁদের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। এ দিন দুপুরে সেখানেই শঙ্করের শেষকৃত্য হয়। শঙ্করের দিদি নীলিমা সর্দার এ দিনও বলেন, ‘‘শনিবার সকাল ও বিকেলে চার যুবক হাজরার বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে গিয়েছিল। ওদের দাবি ছিল আমার ভাই নাকি মোবাইল চুরি করেছিল। আমাদের একটাই প্রশ্ন যে ভাই যদি মোবাইল চুরি করেও থাকে, তবে কেন তা পুলিশকে জানানো হল না? কেন ওরা আইন নিজেদের হাতে তুলে নিল?’’

পুলিশ জানিয়েছে, শঙ্কর মাদকাসক্ত ছিলেন। মোবাইল চুরির ঘটনায় আগে কয়েক বার ধরাও পড়েছে। এক বার কালীঘাট থানাই শঙ্করকে গ্রেফতার করেছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Police Death Youth Confusion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE