Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

এটিএম-কাণ্ডে এ কোন কর্নেল! পরিচয় জেনে পুলিশের চোখ কপালে

গত মে মাসে দক্ষিণ দিল্লির মেহরৌলি থানা করনেল এবং তার সঙ্গী লুলিয়ান দুমব্রাভাকে গ্রেফতার করেছিল এটিএম ক্লোনিং বা স্কিমিংয়ের অভিযোগেই। দক্ষিণ দিল্লির এমবি রোড থেকে করনেলকে গ্রেফতার করার পর তার সঙ্গীর হদিশ পায় পুলিশ। তাদের কাছে প্রায় ৪৮টি ক্লোন কার্ড পাওয়া গিয়েছিল।

এটিএম ক্লোনিং বা স্কিমিংয়ের অভিযোগে তিহাড় জেলে বন্দি করনেল এবং তার সঙ্গী লুলিয়ান। ছবি: সংগৃহীত।

এটিএম ক্লোনিং বা স্কিমিংয়ের অভিযোগে তিহাড় জেলে বন্দি করনেল এবং তার সঙ্গী লুলিয়ান। ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৮ ২১:৪০
Share: Save:

এটিএম তদন্তে ভ্রান্তিবিলাস! দিল্লি থেকে ধৃত দুই রোমানীয় নাগরিককে গ্রেফতার করার পর জেরাতে তারা বলেছিল এক কর্নেলের নাম।

সেই কর্নেল নাকি বন্দি আছেন তিহাড় জেলে! ধৃতদের জেরা করে তদন্তকারীদেরও ধারণা হয়, ওই ‘সেনা আধিকারিক’ই হয়তো গোটা চক্রের অন্যতম মূল মাথা। সেই মতো তাঁরা সেই ‘কর্নেল’কে জেরা করার প্রস্তুতি নেন।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত জানা গেল, যে কর্নেলের নাম বার বার জেরায় উঠে এসেছে প্রথমত সে ভারতীয় নয়। আর কোনও দিনই সেনা বাহিনীতে কাজ করেনি। এই রোমানীয় নাগরিকের নামই করনেল ট্রাইয়ান মিরি। তবে এটা ঠিক যে, এই করনেল এখন তিহাড় জেলে বন্দি। গত মে মাসে দক্ষিণ দিল্লির মেহরৌলি থানা করনেল এবং তার সঙ্গী লুলিয়ান দুমব্রাভাকে গ্রেফতার করেছিল এটিএম ক্লোনিং বা স্কিমিংয়ের অভিযোগেই। দক্ষিণ দিল্লির এমবি রোড থেকে করনেলকে গ্রেফতার করার পর তার সঙ্গীর হদিশ পায় পুলিশ। তাদের কাছে প্রায় ৪৮টি ক্লোন কার্ড পাওয়া গিয়েছিল।

দিল্লি থেকে এটিএম প্রতারণায় ধৃত দুই রোমানীয়। এদের জেরা করেই করনেলের কথা জেনেছিল পুলিশ। —ফাইল চিত্র।

প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা অনেকাংশেই নিশ্চিত যে, এই করনেলের সঙ্গে কলকাতার এটিএম প্রতারণায় ধৃতদের যোগাযোগ রয়েছে। কারণ, করনেল এবং এই দিমিত্রু কলিন এবং অভিদিউ সিমিয়নের অপারেশনের কায়দা অনেকটাই এক। করনেলও মূলত দক্ষিণ দিল্লি থেকে ক্নোন কার্ড দিয়ে টাকা তুলত। এরাও দক্ষিণ দিল্লি থেকেই টাকা তুলেছে। করনেল এবং ধৃত দুমিত্রু— মুখোশ পরে বা চোখে গগলস্ পরে এটিএমে ঢুকত যাতে কোনও ভাবে তাদের পরিচয় না জানা যায় বা এটিমে থাকা ক্যামেরায় তাদের মুখ না ধরা পড়ে।

আরও পড়ুন: আঁধার ঘনালেই হোমের সামনে দাঁড়াত সাদা-কালো গাড়ি, তার পর…

করনেল এবং কলকাতার ঘটনায় অভিযুক্তদের নেপাল যোগাযোগ পাওয়া গিয়েছে। করনেল এবং তাঁর সঙ্গী চার বছর আগে ভারতে এসেছিল। সেই সময় থেকে তারা দিল্লির বিভিন্ন হোটেলে থাকত। জেরায় করনেল জানিয়েছিল, নেপালে বসেই তারা মূল অপারেশন চালাত। ভারতে প্রায়শই আসত তারা কার্ড ক্নোন করার ব্ল্যাঙ্ক প্লাস্টিক কার্ড কেনার জন্য।

দুমিত্রু এবং সিমিয়ন— বার বার নেপালে গিয়েছে, সেই প্রমাণ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সেখান থেকেই তদন্তকারীদের ধারণা, ওরা একই গ্যাং-এর। নেপালেই বসে আছে মূল পাণ্ডা। সেই পাণ্ডার পরিচয় জানতে ইতিমধ্যেই করনেলকে জেরা করার জন্য আদালতের অনুমতি চেয়েছে পুলিশ। অন্য দিকে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের আরও তিন সঙ্গীর পরিচয় জানা গিয়েছে। তারা ধৃতদের সঙ্গে কলকাতায় এসেছিল। তারা যাতে দেশ ছেড়ে না পালাতে পারে, সে জন্য লুক আউট নোটিস ইস্যু করছে পুলিশ।

কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী সোমবার বলেন, ‘‘কসবার বেসরকারি ব্যাঙ্কে পাওয়া যন্ত্র স্কিমার কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ, স্কিমারে ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ থাকা আবশ্যক। ওই স্ট্রিপেই তথ্য রেকর্ড হয়।’’ তিনি এটাও বলেন যে, ‘‘এটিএমের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা গিয়েছে স্থানীয় কিছু যুবক ওই যন্ত্র লাগিয়েছে। সেটা কোনও অপরাধের উদ্দেশ্যে না আতঙ্ক ছড়াতে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।’’ কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, রোমানীয় গ্যাং-এর অনেকেরই পরিচয় জানা গিয়েছে। তবে তাদের কতটা নাগাল পাওয়া যাবে সে নিয়ে সংশয়ে গোয়েন্দারা।

কলকাতার ঘটনা এবং দুর্ঘটনা, কলকাতার ক্রাইম, কলকাতার প্রেম - শহরের সব ধরনের সেরা খবর পেতে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE