Advertisement
E-Paper

ঝাঁপের ফুটেজ না পেয়ে ফাঁপরে পুলিশ

মল্লিকবাজারের বাসিন্দা যুগলের গঙ্গায় ঝাঁপ দেওয়ার তদন্তে নেমে এই কারণেই ফাঁপরে পড়েছে পুলিশ। ঘটনার চার দিন পরে শুক্রবার গঙ্গার ধারে লাগানো বেশ কিছু সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে বসে উত্তর বন্দর থানার তদন্তকারীরা দেখেন, ওই যুগল যে গঙ্গায় ঝাঁপ দিচ্ছেন, এমন কোনও প্রমাণ অন্তত সেই সব ফুটেজে নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৩৬
সুজাতা বাজপেয়ী ও অভিষেক সাউ।

সুজাতা বাজপেয়ী ও অভিষেক সাউ।

তাঁরা হাত ধরে মিলেনিয়াম পার্কে হাঁটছেন। ফুটপাত লাগোয়া দোকানের সামনে দাঁড়াচ্ছেন। টিকিট কেটে বাকিদের সঙ্গেই লাইন দিয়ে লঞ্চে উঠছেন। এ সবই রয়েছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে। নেই শুধু গঙ্গায় তাঁদের ঝাঁপ দেওয়ার কোনও দৃশ্য!

মল্লিকবাজারের বাসিন্দা যুগলের গঙ্গায় ঝাঁপ দেওয়ার তদন্তে নেমে এই কারণেই ফাঁপরে পড়েছে পুলিশ। ঘটনার চার দিন পরে শুক্রবার গঙ্গার ধারে লাগানো বেশ কিছু সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে বসে উত্তর বন্দর থানার তদন্তকারীরা দেখেন, ওই যুগল যে গঙ্গায় ঝাঁপ দিচ্ছেন, এমন কোনও প্রমাণ অন্তত সেই সব ফুটেজে নেই। মিলেনিয়াম পার্ক থেকে হাওড়ার ঘাট পর্যন্ত বিভিন্ন দৃশ্য দেখেও তা মেলেনি। ফলে আপাতত ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের উপরেই নির্ভর করতে হচ্ছে তদন্তকারীদের।

গত ১৮ ডিসেম্বর বিকেলে পুলিশ জানায়, অভিষেক সাউ নামে এক যুবক তাঁর প্রেমিকা সুজাতা বাজপেয়ীর সঙ্গে মাঝগঙ্গায় ঝাঁপ দিয়েছেন। সহযাত্রীরা পুলিশকে জানান, ঝাঁপ দেওয়ার সময়ে তাঁরা হাত ধরে ছিলেন। তদন্তে জানা যায়, সুজাতা অন্তিম পর্যায়ের মস্তিষ্কের ক্যানসারে ভুগছিলেন। একসঙ্গে থাকা হবে না বুঝেই সুজাতা তিন বছরের মেয়েকে বাড়িতে রেখে প্রেমিকের সঙ্গে গঙ্গায় ঝাঁপ দেন বলে জানতে পারে পুলিশ। শনিবার রাত পর্যন্ত অতাঁদের কোনও খোঁজ মেলেনি। এ দিনও দফায় দফায় গঙ্গায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। সন্ধ্যায় একটি দেহ উদ্ধারের পরে অভিষেকের বাবা ওমপ্রকাশ সাউকে ডেকে পাঠানো হয়। তিনি জানিয়েছেন, ওই দেহ তাঁর ছেলের নয়।

পুলিশের সঙ্গেই শুক্রবার ওই ফুটেজ দেখেছেন অভিষেকের বাবা। শনিবার তিনি বলেন, ‘‘সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখাতে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। কই, ওদের তো ঝাঁপ দিতে দেখা যাচ্ছে না! দেখলাম, হাঁটছে, লঞ্চে উঠছে। লঞ্চ হাওড়াতেও পৌঁছল। কিন্তু ঝাঁপ যে দিয়েছে, তার প্রমাণ কী?’’ কেউ ঝাঁপ দিলে লঞ্চের তো থামার কথা। তা-ও হয়নি বলে তাঁর দাবি। সেই সঙ্গে ওমপ্রকাশবাবুর প্রশ্ন, ‘‘চার দিন বাদেও ছেলের কোনও খোঁজ পেল না পুলিশ। এত দেরিতে কেন ফুটেজ দেখতে বসলেন তদন্তকারীরা?’’

উত্তর বন্দর থানার তদন্তকারীরা অবশ্য জানাচ্ছেন, রিভার ট্র্যাফিকের সুবিধার্থে গঙ্গার ধারে এবং মিলেনিয়াম পার্ক সংলগ্ন এলাকায় লাগানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজই খতিয়ে দেখা হয়েছে তদন্তের জন্য। ওই সমস্ত ক্যামেরা যতটা জায়গা ‘কভার’ করে, সেটুকুই দেখা গিয়েছে। হাওড়ার দিকের ফুটেজও খতিয়ে দেখা হবে। যুগলকে চিহ্নিত করতে তাঁদের আত্মীয়দের ডাকা হয়েছিল। কিন্তু এত দিন পরে কেন ফুটেজ দেখা হচ্ছে? উত্তর বন্দর থানার এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘ফুটেজ পেতে সময় লাগে। তা ছাড়া, নিখোঁজদের খুঁজে পাওয়াই আমাদের প্রথম লক্ষ্য।’’ পুলিশ যদিও এখনও নিশ্চিত, মাঝগঙ্গায় ঝাঁপই দিয়েছেন ওই যুগল।

Death Suicide CCTV Footage Police Ganges
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy