Advertisement
E-Paper

দুর্ঘটনাগ্রস্তের শুশ্রূষা, প্রশিক্ষণ নিচ্ছে পুলিশ

রেড রোড দিয়ে মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন এক যুবক। হঠাৎ উল্টো দিক থেকে আসা গাড়ির ধাক্কায় ছিটকে পড়লেন তিনি। আশপাশের লোকজন ছুটে গেলেন। এলেন ডিউটিতে থাকা ট্র্যাফিক সার্জেন্টও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:৩২

রেড রোড দিয়ে মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন এক যুবক। হঠাৎ উল্টো দিক থেকে আসা গাড়ির ধাক্কায় ছিটকে পড়লেন তিনি। আশপাশের লোকজন ছুটে গেলেন। এলেন ডিউটিতে থাকা ট্র্যাফিক সার্জেন্টও। খবর দিলেন অ্যাম্বুল্যান্সে। রক্তাক্ত যুবককে কিছুক্ষণের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হল এসএসকেএম হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানালেন, তাঁর মৃত্যু হয়েছে। সেই সঙ্গে অবশ্য জানালেন, দুর্ঘটনার পরেও কিছুক্ষণ ওই যুবকের দেহে প্রাণ ছিল এবং প্রাথমিক কিছু শুশ্রূষা দেওয়া গেলে হয়তো বেঁচেও যেতেন।

অথচ ছোটখাটো কিছু জিনিস মাথায় রাখলে, কিছু শুশ্রূষার কায়দা জানলে, কিছু সতর্কতা নিলে এমন পরিস্থিতিতে পুলিশও মুমূর্ষুর ত্রাতা হয়ে উঠতে পারে। অন্তত যতক্ষণ না অ্যাম্বুল্যান্স পৌঁছচ্ছে, ততক্ষণ।

তা হলে এমন অবস্থায় দুর্ঘটনাগ্রস্তকে যতটা সম্ভব সাহায্য করতে পুলিশদের কী কী শেখা উচিত? তারই পাঠ কলকাতা পুলিশকে দিল দিল্লির এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। দিল্লির ওই সংস্থাটি পথ নিরাপত্তা ও আপৎকালীন চিকিৎসার বিষয়ে গোটা দেশ জুড়ে কাজ করে। প্রশিক্ষণটি হল গোর্কি টেরাস তল্লাটের একটি নার্সিংহোমে। প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগেই নগদ টাকা না দিতে পারায় দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম এক শিশুকে ফেরানোর অভিযোগ নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিল এই নার্সিংহোম। গত আট দিন ধরে সেখানেই কলকাতা পুলিশের ২৫টি ট্র্যাফিক গার্ডের প্রায় ২০০ জন সার্জেন্টকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। দেড় দশক ধরে ভারতের একাধিক শহরে সংস্থাটি কাজ করলেও কলকাতায় এই প্রথম তারা সামিল হল।

সংস্থাটির কর্তারা ও কলকাতার নার্সিংহোমের ডাক্তারেরা এ দিন জানান, দুর্ঘটনায় এক জন আহত হলে অ্যাম্বুল্যান্স আসার আগে তাঁর হার্ট পাম্প করা, নাড়ি পরীক্ষা করা, প্রয়োজনে মুখে মুখ দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস চালু রাখা— এগুলি করতে হবে। আবার আহতকে স্ট্রেচারে তোলার সময়ে সতর্কতা নেওয়া হয় না বলে তাঁর শারীরিক সমস্যা বেড়ে যেতে পারে, দুর্ঘটনায় পাওয়া আঘাতের পাশাপাশি নতুন কোনও চোটও লাগতে পারে। তাই মাথার পিছনে ও কোমরের কাছে নির্দিষ্ট জায়গা ধরে আহতকে প্রথমে তুলে ধরতে হবে এবং তার পরে স্ট্রেচার ঠিক তাঁর শরীরের নীচে এনে তাতে ওই ব্যক্তিকে তুলতে হবে।

এমনকী, দুর্ঘটনাগ্রস্ত লোকের সংখ্যা বেশি হলে ঘটনাস্থলে পৌঁছনো স্থানীয় মানুষজনকে পুলিশ প্রয়োজন মতো নির্দেশ দিয়ে একই কাজ করিয়ে নিতে পারে। আবার অনেক সময়ে মহিলা জখম হলে পুরুষ পুলিশকর্মীরা তাঁকে ছুঁতে সঙ্কোচ করেন। সে ক্ষেত্রেও দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছনো কোনও মহিলাকে পুলিশ প্রয়োজন মতো নির্দেশ দিতে পারে আহতের প্রয়োজনীয় শুশ্রূষা করার।

শুধু পথ দুর্ঘটনা নয়, বিস্ফোরণ ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জখম, ডুবে যাওয়া ব্যক্তিকে উদ্ধারের পরেও এই ধরনের শুশ্রূষা দেওয়া ও সতর্কতা অবলম্বন করা পুলিশের উচিত বলে পাঠ দেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বিশেষজ্ঞেরা ও ডাক্তারেরা। তাঁদের কাছে পাঠ নেওয়া একাধিক সার্জেন্টের কথায়, ‘‘এ সব শিখে বিপন্ন মানুষকে বাঁচাতে যদি ন্যূনতম অবদান থাকে, তা হলে নিজেরই ভাল লাগবে।’’

accident Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy