প্রতীকী ছবি।
কাউন্সিলরের ছেলে বলে কথা! পাড়ায় দাপট কম নয়। বয়সে ছোটই হোক বা বড়, কথা না শুনলে কারও রেহাই নেই। মারধর করতেও পিছপা হয় না। মদ, গাঁজা থেকে শুরু করে কী নেই তাঁর নেশার তালিকায়!
পাড়া-প্রতিবেশীর অভিযোগে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন কলকাতা পুরসভার ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাধনা বসু। শেষ পর্যন্ত নিজেই থানায় অভিযোগ করলেন ছেলের বিরুদ্ধে। শুধু কথার কথা নয়। লোক দেখানোর অভিযোগ নয়। রীতিমতো এফআইআর করে বসলেন কাউন্সিলর। বলেন, “আমার ছেলেকে গ্রেফতার করুন। এমন ছেলে থাকার থেকে মরে যাওয়া ভাল।” তাঁর অভিযোগ পাওয়ার পরই আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার পুলিশ অভীককে গ্রেফতার করে। এলাকায় চ্যাং নামেই সবাই চেনেন তাঁকে।
শুক্রবার কালীদাস সিংহ লেনের এক কিশোরকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে অভীকের বিরুদ্ধে। ওই দিন পাড়ায় ফুটবল খেলা দেখতে গিয়েছিল বছর বারোর অঙ্কিত সিংহ। খেলা দেখতে বসে বেশি কথা বলায় আচমকাই তার উপর চড়াও হয় অভীক। তাঁর হাত থেকে ওই কিশোরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর যায় সাধনাদেবীর কাছেও। এর পরেও চুপ থাকেননি চ্যাং। অভিযোগ, ওই কিশোরের পরিবারকে হুমকি দিতে থাকেন তিনি। অঙ্কিতের পরিবার তখন কাউন্সিলরের দ্বারস্থ হন। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, চ্যাং প্রায়ই এলাকায় গোলমাল পাকায়। কোনও কারণ ছাড়াই তাঁদের বিরক্ত করেন।
আরও পড়ুন: ফেরাতেই হবে প্রবেশিকা,যাদবপুরে অনশন শুরু পড়ুয়াদের
অভীককে পুরসভায় চুক্তিভিত্তিক কাজে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন মা। মাধ্যমিক পাশ করা ছেলে তাতেও শুধরায়নি। এই অভিযোগ খোদ মায়েরই। সাধনা দাস বলেন, “ছেলেকে নিয়ে আর পারা যাচ্ছে না। বন্ধুবান্ধবের পাল্লায় পড়ে নেশা করে। পুরসভায় কাজ পেয়েছিল। কিন্তু তার পরেও যে কে সেই! কাউন্সিলর বলেন, “মারধরের ঘটনা জানতে পরে আমি নিজে পুলিশকে বলেছি ওকে গ্রেফতার করতে। কতটা বিরক্ত হলে তবে একজন মা এই কাজ করতে পারে।”
সাধনাদেবীর অক্ষেপ, “কিছু দিন আগে নাতিকে ছুড়ে ফেলে দিতে যাচ্ছিল ছেলে। ভাগ্যিস আমার চোখে পড়েছিল। না হলে কি যে হত, তা ভেবেই আঁতকে উঠছি।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, কাঁচা টাকা হাতে পেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন চ্যাং। মা ওকে কিছু দিন নেশা ছাড়ানোর সেন্টারে পাঠিয়ে ছিলেন। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি। ফের এলাকায় উৎপাত শুরু করেছিলেন তিনি। তবে কাউন্সিলরের ভূমিকায় রীতিমতো খুশি এলাকাবাসীরা। তাদের বক্তব্য, কিছু দিনের জন্য আপাতত রেহাই মিলল।
আরও পড়ুন: বিমার ফাঁদে পুলিশের প্রাক্তন কর্তাই
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy