Advertisement
E-Paper

শব্দবাজি থামাতে গিয়ে প্রহৃত পুলিশ

বুধবার, দীপাবলির রাতে নিষিদ্ধ শব্দবাজির বিরুদ্ধেই অভিযানে নেমে শহরের দু’প্রান্তে আক্রান্ত হয়েছে পুলিশ

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৮ ০১:১৫

শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পরেও রোখা যায়নি শহরে শব্দবাজির দাপট। বুধবার, দীপাবলির রাতে নিষিদ্ধ শব্দবাজির বিরুদ্ধেই অভিযানে নেমে শহরের দু’প্রান্তে আক্রান্ত হয়েছে পুলিশ। দুই ঘটনায় আদালতের নির্দেশ অগ্রাহ্য করা এবং সরকারি কর্মীকে কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়াও ওই রাতে নিউ মার্কেট এলাকায় তিন মত্ত যুবকের হাতে নিগৃহীত হতে হয়েছে পুলিশকে। সেই ঘটনাস্থল থেকে তিন জনকে গ্রেফতারও করা হয়।

মঙ্গলবার, কালীপুজোর রাতে হেলমেটহীন বাইকচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন হেড কোয়ার্টার্স ট্র্যাফিক গার্ডের এক পুলিশকর্মী। এর এক দিনের মধ্যেই শহরের বুকে ফের আক্রান্ত হয়েছেন পুলিশের কর্মী ও অফিসার। লালবাজার সূত্রে খবর, প্রথমটি ঘটে বুধবার রাতে ভবানীপুর থানা এলাকার হেশ্যাম রোডে। রাত পৌনে দশটা নাগাদ কর্মীদের সঙ্গে এলাকায় টহল দিচ্ছিলেন ভবানীপুর থানার সাব ইনস্পেক্টর বিপ্লব সরকার। হেশ্যাম রোডের একটি বহুতলের ছাদে শব্দবাজি ফাটছে শুনে সোজা ওই আবাসনের ছাদে গিয়ে তাঁরা দেখেন, দুই মহিলাকে নিয়ে অনুপ হুন নামে এক ব্যক্তি নিষিদ্ধ শব্দবাজির সেল ফাটাচ্ছেন। বিনা বাধায় ছাদে উঠতে পারলেও সেখানে গিয়ে বাধা পায় পুলিশ। এমনকি শব্দবাজি পুলিশ বাজেয়াপ্ত করতে চাইলে তিন জনের সঙ্গে বচসা শুরু হয়। অভিযোগ, সেই সময়ে বিপ্লব-সহ দুই মহিলা পুলিশকর্মীদের

ধাক্কাধাক্কি করেন। কিছু ক্ষণ পরে ভবানীপুর থানা থেকে আরও পুলিশকর্মী আবাসনে গিয়ে অনুপবাবুকে গ্রেফতার করেন। বাজেয়াপ্ত করা হয় নিষিদ্ধ শব্দবাজি।

পুলিশ জানিয়েছে, দুই মহিলা অভিযুক্ত অধরা থাকলেও বছর পঁয়ষট্টির অনুপবাবুকে বৃহস্পতিবার আলিপুর আদালতে তোলা হয়। অভিযুক্তের আইনজীবী দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য জানান, বিচারক জাফর পারভেজ অনুপবাবুর শর্তাধীন জামিন মঞ্জুর করেছেন। এ দিন ওই আবাসনে গিয়ে জানা যায়, একতলার ফ্ল্যাটে থাকেন অনুপবাবু। বুধবার রাতে কী হয়েছিল, জানতে চাওয়া হলে পরিবারের এক সদস্য জানান, অনুপবাবুর স্ত্রী বাড়িতে নেই। তিনি কিছু জানেন না।

ভবানীপুরের ওই ঘটনার কিছু পরেই পুলিশ নিগ্রহের দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে শহরের উত্তর প্রান্তে সিঁথি থানা এলাকায়। সেখানেও শব্দবাজি ফাটাতে নিষেধ করায় পুলিশকর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে চার যুবকের বিরুদ্ধে। পরে পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করে এবং পনেরো কেজি নিষিদ্ধ বাজি বাজেয়াপ্ত করে। পুলিশ জানাচ্ছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দিষ্ট করে দেওয়া সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরে পুলিশ জানতে পারে সাউথ সিঁথি রোডের উপরে দেদার শব্দবাজি ফাটছে। তা শুনে সিঁথি থানার অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর উত্তম মাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন, কয়েক জন যুবক রাস্তায় নিষিদ্ধ বাজি ফাটাচ্ছেন এবং আতসবাজি পোড়াচ্ছেন।পুলিশ ওই যুবকদের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ উল্লেখ করে তেমন কিছু করতে নিষেধ করে।

অভিযুক্তেরা জানান, ওই রকম কোনও নির্দেশ তাঁদের জানা নেই। এক তদন্তকারীর কথায়, ‘‘বাধা পেয়ে পুলিশের সঙ্গে অভিযুক্তেরা বচসা শুরু করে। সেই সঙ্গে শুরু হয় গালিগালাজ। অভিযোগ, পুলিশ ওই বাজি বাজেয়াপ্ত করার চেষ্টা করলে তাদের উপরে চড়াও হন অভিযুক্তেরা। পুলিশকে নিগ্রহের পাশাপাশি চলে কিল-চড়-ঘুসি। খবর পেয়ে এলাকায় যায়

বিরাট পুলিশবাহিনী। পরে চার যুবককে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার ধৃত চার জনকে শিয়ালদহ আদালতে তোলা হয়। সরকারি কৌঁসুলি অরূপ চক্রবর্তী জানান, ধৃতদের শর্ত সাপেক্ষে জামিন দিয়েছেন বিচারক।

ওই দুই ঘটনার মাঝেই দীপাবলির রাতে মত্ত যুবকদের হাতে মার খেতে হয়েছে নিউ মার্কেট থানার এক কনস্টেবলকে। লালবাজার জানাচ্ছে, রাত পৌনে দশটা নাগাদ এলাকায় টহল দিচ্ছিলেন কনস্টেবল দিলীপ ঘোষ। মতিলাল শীল

স্ট্রিটে টহল দেওয়ার সময়ে তিনি দেখেন, তিন যুবক রাস্তার ধারে বসে মদ্যপান করছেন। দিলীপবাবু তাঁদের প্রকাশ্যে মদ্যপান করতে নিষেধ করেন। এর পরেই রাহুলকুমার মাহাতো, সত্যকুমার মণ্ডল এবং জিতেন্দ্র পাসোয়ান নামের ওই তিন অভিযুক্ত পুলিশের সঙ্গে বচসা শুরু করেন। অভিযোগ, দিলীপবাবুকে নিগ্রহও করেন তাঁরা। খবর পেয়ে নিউ মার্কেট থানার বিরাট বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে তিন জনকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে। ধৃতদের বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হলে তাঁদের জেল হেফাজত হয়।

Pollution Environment Sound Pollution Air Pollution
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy