Advertisement
E-Paper

রড বোঝাই গাড়িতে বিপদ, নিয়ন্ত্রণে নির্দেশ কমিশনারের

গভীর রাতের চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ। দ্রুত গতিতে যেতে যেতে আচমকা ব্রেক কষেছিল লোহার র়ড বোঝাই একটি লরি। পিছনে থাকা একটি ছোট গাড়ির চালকও ব্রেক কষেছিলেন। দু’টি গাড়ির মাঝের দূরত্ব কম ছিল না। তবুও বরাতজোরে প্রাণে বেঁচেছিলেন ছোট গাড়িটির চালক। কেন?

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৫৭
এ ভাবেই বিপজ্জনক যাতায়াত। — ফাইল চিত্র

এ ভাবেই বিপজ্জনক যাতায়াত। — ফাইল চিত্র

গভীর রাতের চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ। দ্রুত গতিতে যেতে যেতে আচমকা ব্রেক কষেছিল লোহার র়ড বোঝাই একটি লরি। পিছনে থাকা একটি ছোট গাড়ির চালকও ব্রেক কষেছিলেন। দু’টি গাড়ির মাঝের দূরত্ব কম ছিল না। তবুও বরাতজোরে প্রাণে বেঁচেছিলেন ছোট গাড়িটির চালক। কেন?

ওই গাড়িতে থাকা আরোহীরা জানান, সেটির চাকা সামনে আর একটু গড়ালেই লরি থেকে বেরিয়ে থাকা লোহার রড উইন্ডস্ক্রিন ভেঙে ওই গাড়ির চালকের বুকে গেঁথে যেত!

কলকাতার রাস্তায় সে দিন দুর্ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু শনিবার ভোরে উলুবেড়িয়ায় অনেকটা একই কায়দায় দুর্ঘটনা ঘটেছে । মারা গিয়েছেন চার জন বাসযাত্রী। খাস কলকাতায় রাতের শহরে বিপজ্জনক ভাবে লোহার রড ভর্তি ট্রাক চললেও পুলিশ এত দিন ব্যবস্থা নিত না বলেই মানুষের অভিযোগ। এমনকী, অনেক ক্ষেত্রে শহরের অলিগলিতেও সাইকেল ভ্যানে করে বিপজ্জনক ভাবে নিয়ে যাওয়া হয় লোহার রড। তা থেকেও ঘটে দুর্ঘটনা। লালবাজারের খবর, শনিবার ভোরে উলুবেড়িয়ার ঘটনা দেখে নড়ে বসেছেন পুলিশকর্তারা। ট্রাক-লরি থেকে মালপত্র বা লোহার রড বিপজ্জনক ভাবে বেরিয়ে থাকলেই মামলা-জরিমানা করতে বলেছেন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার।

পুলিশ সূত্রের খবর, মূলত লোহার রড, পাত কিংবা বাঁশ নিয়ে চলাচলকারী ট্রাক এবং লরির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রতিটি ট্র্যাফিক গার্ডকে। রাতের অন্ধকারে বেপরোয়া, দ্রুত গতির ওই লরি বা ট্রাকের বিরুদ্ধে ট্র্যাফিক আইন ভঙ্গের মামলা রুজু করার কথা বলা হয়েছে। এ জন্য রাতে ডিউটিতে থাকা প্রতিটি গার্ডের সার্জেন্টদের নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করতে বলা হয়েছে।

লালবাজার জানিয়েছে, লরি বা ট্রাকের পিছনের ডালা থেকে বিপজ্জনক ভাবে লোহার পাত বা রড বেরিয়ে থাকলে পরিবহণ আইনের ১৯০ (৩) ধারায় মামলা করতে হবে। ওই ধারায় অন্তত তিন হাজার টাকা জরিমানা বা এক বছরের জেল হতে পারে আইনভঙ্গকারী চালকের।

ট্র্যাফিক পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, দিনের বেলায় নির্দিষ্ট সময় ছাড়া শহরের রাস্তায় মালবাহী বড় গাড়ি চলাচল করতে পারে না। তা ছাড়া সেই সময়ে রাস্তায় সার্জেন্ট, ইনস্পেক্টর রাস্তায় থাকায় তাঁদের চোখ ফাঁকি দেওয়া সম্ভব হয় না। কিন্তু রাতের অন্ধকারে রাস্তায় পর্যাপ্ত পুলিশ থাকে না। ফলে আইন ভেঙে লোহার রড, বাঁশ নিয়ে গেলেও জরিমানা হয় না ট্রাকের। লালবাজার সূত্রের খবর, বি টি রোড, এ পি সি রোড, যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউ, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, ইএম বাইপাসের একাংশ এবং বন্দর এলাকা-সহ কয়েকটি রাস্তায় চলাচলকারী ট্রাক এবং লরির পিছনের ডালা থেকে বিপজ্জনক ভাবে লোহার পাত কিংবা বাঁশ বেরিয়ে থাকতে দেখা যায়। যদিও পুলিশেরই অনেকে ইঙ্গিত দিচ্ছেন, রাতেও নজরদারির ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু কর্তব্যরত পুলিশের একাংশের গাফিলতি ও ট্রাক চালকদের সঙ্গে ‘দহরম-মহরমের’ সুযোগে অন্যায়ের শাস্তি হয় না। ‘‘এ বার তাই নির্দেশিকা জারি করে সেই রীতি বন্ধ করতে চাইছেন উপরওয়ালারা’’—বলছেন এক ট্র্যাফিক সার্জেন্ট।

police commissioner
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy