Advertisement
E-Paper

পথভোলা বৃদ্ধাকে ঘরে ফেরাল পুলিশ

বিকেল সাড়ে ৫টা। ডোরিনা ক্রসিংয়ের কাছে মেট্রো প্রকল্পের পাশে এক বৃদ্ধা অসহায় ভাবে দাঁড়িয়েছিলেন। কোথায় যাবেন, তা মনে করতে পারছিলেন না। এক যুবক বারবার তাঁর কাছ থেকে ঠিকানা জানার চেষ্টা করে চলেছিলেন।

রণজিৎ নন্দী

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৯ ০০:৫৩
রীতা পাণ্ডে। নিজস্ব চিত্র

রীতা পাণ্ডে। নিজস্ব চিত্র

বিকেল সাড়ে ৫টা। ডোরিনা ক্রসিংয়ের কাছে মেট্রো প্রকল্পের পাশে এক বৃদ্ধা অসহায় ভাবে দাঁড়িয়েছিলেন। কোথায় যাবেন, তা মনে করতে পারছিলেন না। এক যুবক বারবার তাঁর কাছ থেকে ঠিকানা জানার চেষ্টা করে চলেছিলেন।

খোঁজ নিতে গেলে যুবকটি জানান, ওই বৃদ্ধা কার্জন পার্ক থেকে তাঁর পিছন পিছন আসছিলেন। সে সময়ে বৃদ্ধা একাধিক বার হিন্দিতে বলতে থাকেন, ‘আমাকে ঘরে পৌঁছে দিন।’ কিন্তু ওই যুবক যত বার তাঁর ঠিকানা জানতে চাইছিলেন, তত বারই বৃদ্ধার উত্তর ছিল –ইলাহাবাদ। বিষয়টি ওই এলাকায় কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীকে জানানো হয়। এর পরেই ট্র্যাফিক পুলিশের কর্মীরা তাঁর সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। বৃদ্ধা জানান, বাবুঘাট থেকে আসছেন। কখনও জানান হেঁটে, কখনও জানান ট্রেনে এসেছেন তিনি। তত ক্ষণে মানুষের ভিড় জমে গিয়েছে। ভিড় থেকেই বৃদ্ধার ছবি তুলতে থাকেন অনেকে। কেউ বলেন, ‘ফেসবুকে দাও।’

তত ক্ষণে বৃদ্ধা রীতিমতো ভেঙে পড়েন। অঝোরে কাঁদতে থাকেন। তাঁকে ধাতস্থ করতে চা-বিস্কুট এবং রুটি-আনাজ খাওয়ান পুলিশকর্মীরা। ধর্মতলা এলাকার কর্তব্যরত ট্র্যাফিক সার্জেন্ট সুমন পালের তত্ত্বাবধানে গোটা বিষয়টি চলতে থাকে। তিনিই খবর পাঠান লালবাজারে। এ দিকে, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বৃদ্ধা জানান, তাঁর ছেলে-নাতনি রয়েছে। তাঁকে শোভাবাজার পর্যন্ত পৌঁছে দিলে তিনি বাড়ি চলে যেতে পারবেন। কথাবার্তার মাঝে এক বার তিনি বাংলায় কথা বলেন। পুলিশ নিশ্চিত হয় যে, বৃদ্ধা এই শহরের বাসিন্দা।

খবর পেয়ে লালবাজার থেকে দুই অফিসার ঘটনাস্থলে পৌঁছন। ঘটনাচক্রে তাঁদের এক জন বৃদ্ধাকে দেখেই চিনতে পারেন। তিনি জানান, ওই বৃদ্ধা এবং তাঁর পরিবারকে তিনি চেনেন। জানা যায়, বৃদ্ধার নাম রীতা পাণ্ডে (৬৩)। ধর্মতলার মোড়ের কাছেই থাকেন তিনি। ডোরিনা ক্রসিংয়ের অদূরে তাঁকে বাড়ির সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। বাড়ি থেকে নাতনিকে ডাকা হয়। নাতনি জানায়, ওই বৃদ্ধা তাঁর দিদিমা। এর পরেই বড় ছেলে সুরেশ পাণ্ডে এবং বৃদ্ধাকে নিয়ে পুলিশ স্থানীয় থানায় যায়। সুরেশবাবু জানান, তাঁর মায়ের মানসিক সমস্যা রয়েছে। চিকিৎসাও চলছে। বাড়ির সামনের ফুটপাত ধরে হাঁটাচলা করেন তিনি। মাঝেমধ্যে পথ ভুলে যান। বিশেষত, আলো কমে গেলে সমস্যা বাড়ে। আগেও দু-তিন বার পথ ভুলে অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন। পুলিশের সাহায্যেই তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছিল।

এ দিনও তিনি বাড়ির বাইরের ফুটপাতেই হাঁটছিলেন। সামনেই তাঁর ছোট ছেলের চায়ের দোকান। ফলে অন্য দোকানিরাও তাঁকে চেনেন। তাঁরাই জানান, খদ্দেরের চাপে এ দিন কেউ খেয়াল করেননি বৃদ্ধাকে।

Police Old Woman Esplanade
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy