Advertisement
E-Paper

পুলিশ ‘মুক্ত’ করেছে মন্ত্রীর পথ, অন্যত্র অটোই রাজা

ভাগ্যিস মন্ত্রীর সামনে পড়েছিল! তাই রাতারাতি অন্তত খাদ্যভবনের সামনের জায়গাটুকুতে বন্ধ হল ‘অটোরাজ’। কিন্তু ব্যস, ওই পর্যন্তই। বাকি রুটে অটোর বেপরোয়া দৌরাত্ম্যের চিত্রটা রয়ে গেল আগের মতোই। সোমবার ধর্মতলায় ২১ জুলাইয়ের জনসভা সেরে ফিরছিলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। খাদ্যভবনের সামনে মন্ত্রীর গাড়ি আটকে যায়। সেখানে তখন দু’টি অটো রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৪ ০১:৪৩
খাদ্য ভবনের সামনে ব্যারিকেড দিল পুলিশ

খাদ্য ভবনের সামনে ব্যারিকেড দিল পুলিশ

ভাগ্যিস মন্ত্রীর সামনে পড়েছিল!

তাই রাতারাতি অন্তত খাদ্যভবনের সামনের জায়গাটুকুতে বন্ধ হল ‘অটোরাজ’। কিন্তু ব্যস, ওই পর্যন্তই। বাকি রুটে অটোর বেপরোয়া দৌরাত্ম্যের চিত্রটা রয়ে গেল আগের মতোই।

সোমবার ধর্মতলায় ২১ জুলাইয়ের জনসভা সেরে ফিরছিলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। খাদ্যভবনের সামনে মন্ত্রীর গাড়ি আটকে যায়। সেখানে তখন দু’টি অটো রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে। মন্ত্রীর গাড়ির চালক বারবার বললেও রাস্তা ছাড়েনি সে দু’টি। বাধ্য হয়ে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটেই খাদ্যভবনে ঢোকেন জ্যোতিপ্রিয়বাবু।

এর পরেই সক্রিয় হয়ে ওঠে পুলিশ। কিছুক্ষণের মধ্যেই গ্রেফতার হন অটো দু’টির দুই চালক। পরে অবশ্য থানা থেকেই জামিন পান তাঁরা। রাতারাতি খাদ্যভবনের সামনেও পুলিশের ব্যারিকেড দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। বাড়ানো হয় পুলিশি প্রহরাও। খাদ্যভবনের সামনে এ দিন একটি অটোও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়নি।

তা বলে কি পার্ক সার্কাস-চাঁদনি চক রুটে অটো দৌরাত্ম্য কমল?

এক কথায় উত্তর, একেবারেই না।

খাদ্যভবন পেরোলেই অটোর বেপরোয়া ভাবমূর্তি একেবারে অটুট। মঙ্গলবারও খাদ্যভবনের গেট থেকে একটু এগিয়ে অটো ঠিক আগের মতোই রাস্তা আটকে যাত্রী তোলা-নামানো চালিয়ে যাচ্ছে। এ দিনই ইলিয়ট রোডে ওই রুটেরই একটি অটো ওভারটেক করতে গিয়ে ধাক্কা মারে কলকাতা পুলিশের এক কর্তার গাড়িতে। ওই কর্তা অবশ্য অটোচালকের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি।

ফ্রি-স্কুল স্ট্রিটে তখন এ ভাবেই চলছে অটোর দৌরাত্ম্য। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

এ দিনই ফ্রি-স্কুল স্ট্রিট এবং লিন্ডসে স্ট্রিটের মোড়ে গিয়ে দেখা গেল, সেখানেও একই ভাবে রাস্তা আটকে যাত্রীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে চার-পাঁচটি অটো। চালকদের মুখে সোমবারের ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য নেই। তাঁরা উল্টে পুলিশি ব্যবস্থায় ক্ষুব্ধ। তাঁদের বক্তব্য, পুলিশ ব্যারিকেড করে দেওয়ায় রাস্তা ছোট হয়ে যাচ্ছে। আখেরে ক্ষতি হচ্ছে নিত্যযাত্রীদেরই।

এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ ইলিয়াসের বক্তব্য, “অটোকে কিছুতেই কিছু করা যাবে না। মন্ত্রীর ধমকানিতে তো উল্টো বিপত্তি হল। যে ভাবে খাদ্যভবনের সামনে পুলিশের ব্যারিকেড বসানো হয়েছে, তাতে ওখানে দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বেড়ে গেল।” আবার ওই এলাকারই বাসিন্দা শেখ জাহাঙ্গিরের কথায়, “এখানে অতীতে অনেক বারই অটোকে শাসনে রাখার চেষ্টা করেছে পুলিশ। কিন্তু লাভ হয়নি। বেপরোয়া অটোই এখানে নিয়ম হয়ে গিয়েছে। আমরাও তাতেই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি।”

পার্ক সার্কাস-ধর্মতলা রুটে অটোর দৌরাত্ম্য নতুন ঘটনা নয়। চলতি বছরেরই ২০ জানুয়ারি এই রুটেরই এক অটোচালকের হাতে আক্রান্ত হন মৌসুমী কর্মকার নামের এক মহিলা। অটোচালক ওই মহিলার কাছে বেশি ভাড়া চেয়েছিলেন। তা দিতে চাওয়ায় ওই মহিলাকে লোহার রড দিয়ে মারেন অভিযুক্ত চালক।

দক্ষিণ কলকাতার রানিকুঠি, যাদবপুর, গড়িয়াহাট, রাসবিহারী থেকে শুরু করে উত্তরের উল্টোডাঙা, শোভাবাজার, বাগুইআটি, কাঁকুড়গাছি সর্বত্র ঘুরেই দেখা গেল এক ছবি। রাস্তা আটকে সব জায়গাতেই চলছে বেপরোয়া ‘অটোরাজ’। শোভাবাজার মোড়ে তো আবার চোঙা নিয়ে অটোর লাইনে যেতে অনুরোধ করা হচ্ছে। কিন্তু অনিয়মই ওখানে নিয়ম। রাস্তা জুড়ে সার দিয়ে দাঁড়ানো অটোতেই উঠছেন নিত্যযাত্রীরা।

এ সব শুনে অবশ্য অটোচালকদের কোনও হেলদোল নেই। প্রশ্ন শুনলেই ঠোঁট উল্টে তাঁরা উত্তর দিচ্ছেন, “যত নিয়ম শুধু অটোর বেলায়!”

inactive police kolkata auto problem
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy