দিন দশেক আগে গুলিবিদ্ধ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছিল নারকেলডাঙার যুবক মহম্মদ দানিশ। সেই ঘটনায় এ বার তার বিরুদ্ধেই পাল্টা অভিযোগ দায়ের করল পুলিশ। লালবাজার সূত্রে খবর, বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোকজনদের ফাঁসাতে দানিশ মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করেছিল। পুলিশের খাতায় তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ইতিমধ্যেই তোলাবাজি ও বেআইনি অস্ত্র মামলায় দানিশকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই মামলাটির সঙ্গে মিথ্যে অভিযোগ দায়েরের মামলা জুড়ে দেওয়া হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
শিয়ালদহ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি মৃন্ময় মিত্র জানান, মিথ্যে মামলা করায় অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দায়ের করার অনুমতি চেয়েছিল পুলিশ। শিয়ালদহের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক শুভজিৎ রায় সেই আর্জি মঞ্জুর করেছেন। প্রসঙ্গত, এর আগে এন্টালিতে একই ধরনের আর একটি মামলাতেও অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেছিল পুলিশ। সেই ঘটনায় অভিযোগকারীর সাজাও হয়েছে। এমনকি, ওই ঘটনাতেও মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করে বিরুদ্ধ গোষ্ঠীকে ফাঁসানোর ছক ছিল।
কলকাতা পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, বেনিয়াপুকুর, নারকেল়ডাঙা, এন্টালিতে প্রোমোটিং এবং সিন্ডিকেটের ব্যবসা ঘিরে দুষ্কৃতীদের দ্বন্দ্ব নতুন নয়। যে গোষ্ঠী এলাকা দখলে রাখতে পারবে, তারাই ওই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করবে। এলাকা দখল করতে গুলি-বোমা চালানোর অভিযোগ যেমন ওঠে, তেমনই মিথ্যে মামলা করে বিরুদ্ধ দলকে ফাঁসিয়ে রাস্তা সাফ করার পন্থাও নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা।
পুলিশের কাছে দানিশ অভিযোগ করেছিল, দুই যুবক এসে গুলি চালিয়েছে। কিন্তু, জিজ্ঞাসাবাদে দানিশের বক্তব্যে বেশ কিছু অসঙ্গতি পান তদন্তকারী অফিসারেরা। সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করেও
সেই অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি। দানিশ আরও দাবি করেছিল, যে তার ডান উরুতে গুলি লেগেছে। তার পায়ের ওই ক্ষতচিহ্ন দেখে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করেছিল, খুব কাছ থেকে গুলি চালানো হয়েছে। কারণ, জখমের জায়গায় পুড়ে যাওয়ার চিহ্ন রয়েছে।
কিন্তু পরবর্তী কালে ফরেন্সিক বিভাগের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে তদন্তকারী অফিসারেরা জানতে পারেন, দানিশের ওই আঘাত পুরনো এবং সেটি আদৌ গুলি চালানোর জন্য হয়নি। এমনকি ওই যুবক যে বোমা মারার কথাও বলেছিল, প্রমাণ মেলেনি তারও। এই পর্বেই দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়ে দানিশ। তার বিরুদ্ধে তোলাবাজি ও বেআইনি অস্ত্র রাখার প্রমাণও পেয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, তোলাবাজির মামলায় আপাতত সাত দিন পুলিশি হেফাজতে রয়েছে দানিশ। আগামী হাজিরার দিন নতুন মামলায় তাকে ফের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy