Advertisement
E-Paper

হঠাৎ হেঁচকা টান, দেখি ফোনটা হাওয়া

লালবাজারের কর্তারা শুধু জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে। ওই এলাকায় সক্রিয় দুষ্কৃতীদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৭ ১১:২০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মঙ্গলবার রাত সওয়া দশটা। অফিসের গাড়িতে বাড়ি ফিরছি। চালকের পাশে আমি। জানলার কাচ নামানো। মহম্মদ আলি পার্কের কাছে যে দমকলকেন্দ্র রয়েছে, তার উল্টো দিকে সিগন্যালে দাঁড়িয়েছে গাড়ি। হঠাৎ পিছন থেকে ইয়ারফোনে হ্যাঁচকা টান! সঙ্গে সঙ্গে পিছনে তাকালাম, কিন্তু কাউকে চিহ্নিত করতে পারলাম না। মুখ ফেরাতে না ফেরাতেই হাতের মোবাইল ইয়ারফোন সমেত কেউ ছিনিয়ে নিয়ে নিল। আমি চেঁচিয়ে উঠলাম। তত ক্ষণে নীল জামা পরা ছেলেটি ফোন নিয়ে প্রাণপণে ছুট দিয়েছে। দেখলাম, দাঁড়ানো গাড়িগুলিকে পাশ কাটিয়ে নিমেষের মধ্যে সে ক্রসিং পেরিয়ে গেল। কী থেকে কী হল, তখনও বুঝে উঠতে পারিনি।

পিছনের আসনে দুই সহকর্মী দিদি। তাঁরাও দেখতে পাননি ছেলেটিকে। এমনকী, চালকও নয়। ট্র্যাফিক পুলিশের পোস্টের সামনে গাড়ি দাঁড় করানো হল। ট্র্যাফিক গার্ডের কাছে পুরো ঘটনার বর্ণনা দিলাম। সেখানকার পুলিশকর্মীরা পায়ে হেঁটেই প্রায় চোর ধরতে যাচ্ছিলেন। এক দিদি বললেন, ‘‘এ ভাবে কি ওকে পাবেন? বরং সিসিটিভি ফুটেজ দেখুন। কিছু সূত্র যদি মেলে।’’ তখন তাঁরা বললেন, ‘‘জোড়াসাঁকো থানায় যান।’’

জোড়াসাঁকো থানায় সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মী সব শুনে বললেন, ‘‘আমাকে আগে স্পটে যেতে হবে।’’

পুলিশের ভ্যানেই ঘটনাস্থলে পৌঁছলাম। অফিসার বারবার জিজ্ঞেস করছিলেন, কোনও দোকান খোলা ছিল না তখন? কেউ কিছু দেখেননি? আমরা জানালাম, না, কোনও দোকান খোলা ছিল না। থানায় ফিরে এফআইআর লিখলাম। ফোনের সব তথ্য দিয়েছিলাম। বাকি ছিল আইএমইআই নম্বর। অফিসার বললেন, ‘‘ওটা বাড়ি গিয়েই দিয়ে দেবেন। না হলে কাজ শুরু হবে না। বুধবার অফিস থেকে ফেরার পথে এফআইআরের কপিটা নিয়ে যাবেন।’’ থানা থেকে বেরিয়ে কিছুটা এগোতেই পিছন থেকে আবার ডাক পড়ল।

শুনলাম, এফআইআরের বয়ানে কিছু ভুল আছে। ঠিক করতে হবে। ফের দরখাস্ত লিখলাম। এর মাঝে এক সন্দেহভাজনকে থানায় ধরে আনা হল। আমি ছিনতাইকারীর মুখ দেখিনি বলে তাকে শনাক্ত করাও আমার পক্ষে সম্ভব নয়। থানায় ধরে আনা ছেলেটি ‘‘আমি কিছু করিনি, আমি এই কাজ করি না’’ বলে কান্না জুড়ে দিল। থানা-পর্ব মিটিয়ে অফিসের গাড়িতেই বাড়ি ফিরলাম। রাত তখন পৌনে বারোটা।

বুধবার সকালে থানা থেকে ফোন। এফআইআরে সই করতে হবে। গেলাম। কিছু খোঁজ পাওয়া গেল? পুলিশকর্তা বললেন, ‘‘কাল রাতে আরও কয়েক জনকে ধরে আনা হয়। তবে এখনও কিছু জানা যায়নি। ঘটনাস্থলের ফুটেজ সিসিটিভি-তে ধরা পড়েনি। তবে অন্য ফুটপাথের ফুটেজ এখনও দেখা হয়নি। সেটা দেখব।’’ কবে? তা অবশ্য তাঁর কথা থেকে বোঝা যায়নি।

লালবাজারের কর্তারা শুধু জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে। ওই এলাকায় সক্রিয় দুষ্কৃতীদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

Police Mobile
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy