বেড়াতে নিয়ে যাওয়া এবং কেনাকাটা করার কথা বলে স্ত্রীকে রাজি করিয়ে নিউ টাউনে তাদের চেনা অতিথিশালায় উঠেছিল অভিযুক্ত স্বামী। মঙ্গলবার ওই অতিথিশালায় এক তরুণী গৃহবধূকে খুনের ঘটনায় তাঁর স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনই তথ্য প্রাথমিক ভাবে জেনেছেন তদন্তকারীরা। তবে ওই ব্যক্তি পরিকল্পনা করে স্ত্রীকে খুন করেছে কিনা, সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
মঙ্গলবার নিউ টাউনের ওই অতিথিশালা থেকে ইতিকা মণ্ডল নামে এক গৃহবধূর দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। তাঁকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় স্বামী বিশ্বজিৎ মণ্ডলকে। ঘটনার পরে সে-ই পুলিশে খবর দিয়েছিল। বুধবার বিশ্বজিৎকে বারাসত আদালতে তোলা হলে সাত দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। পুলিশ সূত্রের খবর, ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, শ্বাসরোধ হয়ে ওই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশের দাবি, জেরায় স্ত্রীকে খুনের কথা স্বীকার করেছে বিশ্বজিৎ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা আরও জেনেছেন, দিল্লিতে আগে রাজমিস্ত্রির কাজ করত সে। নিউ টাউনের ওই অতিথিশালায় আগেও উঠেছিলেন ইতিকা ও বিশ্বজিৎ। সেই কারণে এ বারও সেখানেই ঘর বুক করা হয়। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ওই গৃহবধূ এবং তাঁর স্বামী দু’টি আলাদা জায়গা থেকে নিউ টাউনে এসেছিলেন। সেই তথ্য যাচাই করা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, বিশ্বজিৎ জেরায় দাবি করেছে, সে ইতিকার মোবাইলের সূত্রে সন্দেহ করত, তাঁর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। যা নিয়ে ওই দম্পতির মধ্যে অশান্তির সূত্রপাত। অভিযুক্তের আরও দাবি, সে তার স্ত্রীকে সতর্ক করা সত্ত্বেও তিনি নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন। যদিও এর পরেও বিশ্বজিৎ সম্পর্কের টানাপড়েন মিটিয়ে ফের সংসার করার চেষ্টা করছিলেন।
বিশ্বজিৎ আরও দাবি করেছে, অতিথিশালায় ওঠার পরেও সে নানা ভাবে ইতিকাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ইতিকা রাজি হননি। হাতখরচ বাবদ প্রতি মাসে কয়েক হাজার টাকা দেওয়ার প্রস্তাবও স্ত্রীকে দিয়েছিল অভিযুক্ত, এমনই দাবি তার। বিশ্বজিৎ জেরায় এ-ও জানিয়েছে, ইতিকা না শোধরালে তাঁকে খুনের হুমকি পর্যন্ত দেয় সে। এই নিয়ে দু’জনের বাদানুবাদের মধ্যেই সে বেল্ট দিয়ে পেঁচিয়ে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে।
যদিও পুলিশ সূত্রের খবর, খুনের ঘটনাক্রম এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে অভিযুক্তের সব দাবি যাচাই করা হচ্ছে। ঘটনাটি উত্তেজনার বশে ঘটেছে, না কি এর পিছনে পরিকল্পনা ছিল, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)