Advertisement
E-Paper

ডেসিবেল নিয়ে বিভ্রান্তি, বাজি আটক নিয়ে ধন্দে পুলিশই

একশো-দু’শো নয়, একেবারে দেড় হাজার কেজি! সম্প্রতি ওই পরিমাণ শব্দবাজি অবৈধ বলে আলিপুর এলাকায় আটক করেছিল পুলিশ। কারণ, ওই সব বাজির শব্দসীমা ১২৫ ডেসিবেল। তবে বাজি আটক করতে গিয়ে পুলিশ বিরোধিতার মুখেও পড়েছিল।

শিবাজী দে সরকার ও কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৫ ০১:২৮

একশো-দু’শো নয়, একেবারে দেড় হাজার কেজি! সম্প্রতি ওই পরিমাণ শব্দবাজি অবৈধ বলে আলিপুর এলাকায় আটক করেছিল পুলিশ। কারণ, ওই সব বাজির শব্দসীমা ১২৫ ডেসিবেল। তবে বাজি আটক করতে গিয়ে পুলিশ বিরোধিতার মুখেও পড়েছিল।

বাজি নিয়ে যাওয়া ব্যবসায়ীরা জানান, শব্দসীমা ৯০ ডেসিবেল রাখতে চেয়ে রাজ্যের আবেদন আদালতে খারিজ। কাজেই, অন্য রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেও বাজির শব্দসীমা ১২৫ ডেসিবেল। আর পুলিশের যুক্তি ছিল, শব্দসীমা ১২৫ ডেসিবেল জানিয়ে কোনও সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি।

তা হলে এখন পশ্চিমবঙ্গে বাজির শব্দমাত্রা কত? এর উত্তর নিয়ে ধন্দে পুলিশও।

বাজির শব্দসীমা ৯০ ডেসিবেল থাকার অর্থ শব্দবাজি নিষিদ্ধ হওয়া। কারণ, ওই শব্দসীমার মধ্যে খেলনা পিস্তলে ফাটানোর ক্যাপ ছাড়া কোনও শব্দবাজি তৈরি সম্ভব নয় বলে বিশেষজ্ঞদের মত। অথচ এই ব্যাপারে অবস্থান পরিষ্কার করে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বা রাজ্য পরিবেশ দফতর কেউই বিজ্ঞপ্তি জারি করছে না। পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘বিষয়টি এখনও বিচারাধীন। তাই মন্তব্য করব না।’’ তবে তাঁর দাবি, যতক্ষণ না বাজির শব্দমাত্রা ১২৫ ডেসিবেল জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হচ্ছে, ততক্ষণ ৯০ ডেসিবেল শব্দমাত্রাই বহাল থাকবে।

কল্যাণবাবু এমন দাবি করলেও প্রথমে পর্ষদের আবেদন খারিজ করে ১৯ মে জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় ডি‌ভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, দেশের অন্য জায়গার মতো পশ্চিমবঙ্গেও বাজির শব্দমাত্রা ১২৫ ডেসিবেল ধার্য করে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। কিন্তু তা না করে পরিবেশ আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। ২১ অগস্ট সুপ্রিম কোর্ট পর্ষদের আর্জি খারিজ করে দিয়ে জানায়, তাদের কিছু বলার থাকলে নতুন করে পরিবেশ আদালতেরই দ্বারস্থ হতে হবে। কিন্তু এখনও পরিবেশ আদালতের দ্বারস্থ হয়নি তারা। পুলিশের বক্তব্য, আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ীই তাঁদের পদক্ষেপ করতে হয়।

সারা বাংলা আতসবাজি উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান বাবলা রায় বলছেন, ‘৯০ ডেসিবেল খারিজ হয়ে যাওয়ায় ১২৫ ডেসিবেলই এখন বৈধ। কিন্তু সে সব নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি না করে পুলিশ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আমাদের হেনস্থা করছে। এ নিয়ে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব।’’

পর্ষদ সূত্রের খবর, পরিবেশ আদালতে যাওয়া নিয়ে টালবাহানা করে আসলে সময় নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের ২১ অগস্টের নির্দেশে একটি তথ্যগত বিভ্রান্তি নিয়ে ফের শীর্ষ আদালতে আর্জি জানিয়েছে পর্ষদ। শীর্ষ আদালতে ওই বিভ্রান্তি সংশোধন করা হয়। বাজি প্রস্তুতকারকদের আইনজীবী শুভাশিস ভৌমিক বলেন, ‘‘তারিখ সংক্রান্ত ওই বিভ্রান্তি সংশোধন করা হয়েছে। কিন্তু ডেসিবেল মাত্রার জন্য কলকাতার পরিবেশ আদালতেই যেতে হবে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে।’’

এই পরিস্থিতিতে তারাই সমস্যায় পড়ছে বলে অভিযোগ পুলিশের। লালবাজার সূত্রের খবর, ২০১৩ সালেও এমনই পরিস্থিতিতে পড়েছিল পুলিশ। সে বারও ৯০ ডেসিবেলের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে দেরি হওয়ায় শহরে আটকানো যায়নি নিষিদ্ধ বাজির অনুপ্রবেশ। ফল ভুগেছিলেন বাসিন্দারা। কালীপুজোর রাতে তাণ্ডব চালিয়েছিল শব্দদৈত্য।

shivaji de sarkar kuntak chattopadhyay firecrackers decibel firecracker decibel police confused seized firecracker confusion
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy