E-Paper

ছটে পুলিশের বাড়তি বাহিনী, বাজির দাপট নিয়ন্ত্রণে থাকবে কি

পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এর সাধারণ সম্পাদক নব দত্ত বলেন, ‘‘শব্দবাজি দিন দিন অভিশাপে পরিণত হচ্ছে। অথচ, এই নিয়ে আমাদের প্রশাসন অদ্ভুত ভাবে নির্লিপ্ত। আদালতের নির্দেশে শুধু সবুজ বাজি পোড়ানোয় দু’ঘণ্টা ছাড় থাকে।

চন্দন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:৫৬
ছটপুজো উপলক্ষে পাড়ায় তৈরি হচ্ছে কৃত্রিম পুকুর। রবিবার, বেলেঘাটার সুভাষ সরোবরের সামনে।

ছটপুজো উপলক্ষে পাড়ায় তৈরি হচ্ছে কৃত্রিম পুকুর। রবিবার, বেলেঘাটার সুভাষ সরোবরের সামনে। —নিজস্ব চিত্র।

সদ্য শেষ হওয়া কালীপুজো এবং দীপাবলিতে শহর জুড়ে দেখা গিয়েছিল শব্দবাজির তাণ্ডব। আদালতের সময়সীমা হেলায় উড়িয়ে গভীর রাত পর্যন্ত অবাধে শব্দবাজি ফেটেছিল বলে অভিযোগ। সেই একই আশঙ্কা ঘুরপাক খাচ্ছে আজ, সোমবার এবং কাল, মঙ্গলবার ছট পুজোকে কেন্দ্র করে। পুলিশের তরফে অতিরিক্ত বাহিনী নামানোর আশ্বাস দেওয়া হলেও কার্যক্ষেত্রে ‘মান’ রক্ষা হবে কিনা, সেই প্রশ্ন থাকছেই।

জানা গিয়েছে, কালীপুজো এবং দীপাবলির মতো ছটপুজোতেও মঙ্গলবার সকালে দু’ঘণ্টার জন্য শুধু সবুজ বাজি ফাটানোয় ছাড় থাকবে। নিয়মভঙ্গ আটকাতে অতিরিক্ত বাহিনী নামানো হচ্ছে বলে লালবাজার জানিয়েছে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, গত বছর যে সব এলাকায় শব্দবাজির দাপট দেখা গিয়েছিল, সেই সব এলাকা চিহ্নিত করে অতিরিক্ত বাহিনী নামানোর তোড়জোড় চলছে। যদিও এই প্রস্তুতির মধ্যে রবিবার থেকেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় শব্দবাজি ফাটতে শোনা গিয়েছে। মূলত গঙ্গার পাড় ছাড়াও কাদাপাড়া সংলগ্ন এলাকায় শব্দবাজি ফেটেছে বলে অভিযোগ। সেই সঙ্গে আরও অভিযোগ, ছটকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর সাউন্ড বক্সের দৌরাত্ম্য বাড়ে। এ বছরও সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এর সাধারণ সম্পাদক নব দত্ত বলেন, ‘‘শব্দবাজি দিন দিন অভিশাপে পরিণত হচ্ছে। অথচ, এই নিয়ে আমাদের প্রশাসন অদ্ভুত ভাবে নির্লিপ্ত। আদালতের নির্দেশে শুধু সবুজ বাজি পোড়ানোয় দু’ঘণ্টা ছাড় থাকে। কিন্তু, সেই ছাড় যে মানা হয় না, তা তো প্রশাসনের অজানা নয়। কালীপুজো শেষ হওয়ার পরেও বাজি ফেটে চলেছে। প্রশাসন কি এর দায় এড়াতে পারে?’’

জানা গিয়েছে, গঙ্গার বিভিন্ন ঘাট ছাড়াও শহরে পুকুর ও কৃত্রিম জলাশয় মিলিয়ে ১৮৮টি জায়গায় ছটপুজোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে গঙ্গার ঘাট ও পুকুর মিলিয়ে ১৫৩টি ঘাটে প্রস্তুতি রাখছে কলকাতা পুরসভা। কেএমডিএ-র তরফে ২৯টি ঘাট তৈরি রাখা হচ্ছে ছটপুজোর জন্য। প্রতিটি জায়গায় কলকাতা পুলিশের তরফে বাহিনী মোতায়েন থাকবে। গঙ্গার ঘাটগুলিতে রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের পাশাপাশি থাকবেন কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা। আজ, সোমবার দুপুর থেকে তাঁরা টহল দেবেন। রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ নামানো হবে বলেও লালবাজার জানিয়েছে। মূলত ধর্মতলা এবং বাবুঘাট সংলগ্ন রাস্তাগুলিতে অতিরিক্ত পুলিশকর্মী রাখা হচ্ছে।

এর পাশাপাশি, আদালতের নির্দেশ মেনে ছটপুজোয় বন্ধ রাখা হবে কলকাতার দুই প্রধান জলাশয়— রবীন্দ্র সরোবর ও সুভাষ সরোবর। রবিবার দুই সরোবর ঘুরে দেখা গেল, বাঁশ বেঁধে আটকে দেওয়া হয়েছে প্রবেশপথ। কেউ যাতে ঢুকতে না পারেন, তার জন্য কেএমডিএ-র তরফে ব্যানার ঝুলিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রবিবার সকাল ১০টা থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দু’টি সরোবরই সর্বসাধারণের জন্য বন্ধ থাকবে। সরোবরের ভিতরে এবং বাইরে থাকছে পুলিশি বন্দোবস্ত। উপ-নগরপাল পদমার্যাদার আধিকারিকেরা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিকল্প একাধিক ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশ শহর জুড়ে কড়া নজর রাখবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Firecrackers Crackers

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy