Advertisement
E-Paper

সভা-শব্দে ‘নিয়ম’ ভাঙছে শহর, জেলা

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের জারি করা নির্দেশিকার ‘ফাঁক’-কে কাজে লাগিয়ে এই সভা করছেন রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা। 

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২০ ০১:৩১
সম্প্রতি ময়দানে একটি সভার জন্য আনা চোঙা। ফাইল চিত্র

সম্প্রতি ময়দানে একটি সভার জন্য আনা চোঙা। ফাইল চিত্র

আসন্ন পুর নির্বাচনের আগে পরীক্ষার মরসুমের মাঝেই মাইক লাগিয়ে সভা শুরু হয়েছে শহর থেকে জেলায়। সভার আয়োজকদের মধ্যে রয়েছে রাজ্য এবং কেন্দ্রের দুই ক্ষমতাসীন দলও। এ বার তারই প্রতিবাদে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হতে চলেছেন পরিবেশকর্মীদের একাংশ।

তাঁদের বক্তব্য, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের জারি করা নির্দেশিকার ‘ফাঁক’-কে কাজে লাগিয়ে এই সভা করছেন রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা।

পরীক্ষার মরসুম শুরুর তিন দিন আগে থেকে তা শেষ হওয়া পর্যন্ত, খোলা জায়গায় মাইক বা অন্য অডিয়ো ব্যবহার করে সভা করা যাবে না বলে ২০০৯ সালে নির্দেশিকা জারি করেছিল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। ২০১৩ সালে তাতে সামান্য পরিবর্তন এনে বলা হয়, বসতি এলাকা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে, এমন খোলা জায়গায় পরীক্ষার মরসুমে মাইক লাগিয়ে সভা করা যাবে না। পাশাপাশি, জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মতো সেই মাইক বা অডিয়ো ব্যবস্থায় বাধ্যতামূলক ভাবে সাউন্ড লিমিটার লাগাতে হবে।

সম্প্রতি কলকাতার শহিদ মিনার চত্বরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় বিজেপি জানিয়েছিল, ওই জায়গা বসতি এলাকা নয় এবং আশপাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও নেই। সঙ্গে বিজেপি এ-ও দাবি করেছিল, কলকাতা পুলিশ তাদের মৌখিক অনুমতি দিয়েছিল। পরিবেশকর্মীদের প্রশ্ন, যদি কোনও নিয়ম ভঙ্গের ঘটনাই না ঘটে, তবে লিখিত অনুমতি না দেখিয়ে মৌখিক অনুমতির কথা বলছে কেন বিজেপি? তা ছাড়া জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মতো ওখানকার অডিয়ো ব্যবস্থায় সাউন্ড লিমিটার লাগানো ছিল কি না, সে ব্যাপারেও কোনও উত্তর দেয়নি পুলিশ-প্রশাসন।

একই ভাবে এ বার তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জেলায় বক্স বাজিয়ে একাধিক সভা করেছেন বলে অভিযোগ পরিবেশকর্মীদের। দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুর এবং উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে সভার জন্য আলাদা করে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি বলেই সূত্রের খবর। পরিবেশকর্মীদের আরও বক্তব্য, পরীক্ষার মরসুমে এই সভা রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলের থেকে প্রত্যাশিত নয়। কারণ, তারা নিয়ম ভাঙলে অন্যেরা তো তা করবেই। যদিও তৃণমূলের দাবি, নেত্রী কোনও বসতি এলাকার আশপাশে সভা করেননি। ঘেরা জায়গায় বক্স লাগানোর ফলে তার আওয়াজও বাইরে থেকে শোনা যায়নি। যদিও স্থানীয় সূত্রের খবর, একমাত্র কালিয়াগঞ্জের প্রশাসনিক বৈঠকটিই ঘরে হয়েছে। বাকিগুলি খোলা জায়গা ঘিরে হলেও সাউন্ড লিমিটার লাগানো ছিল না। ফলে প্রায় সব ক্ষেত্রেই জনবসতি দূরে থাকলেও আওয়াজ শোনা গিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘পরীক্ষার মরসুমে বাম বা কংগ্রেস সভা করতে চাইলে প্রশাসন-পুলিশ কি তার অনুমতি দিত? তা হলে সেটা বিজেপি বা তৃণমূলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না কেন?’’ পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলছেন, ‘‘নির্বাচনের সময়ে বা তার আগেও যে ভাবে শব্দবিধি লঙ্ঘিত হয়, তা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। বিষয়টি নিয়ে আগামী সপ্তাহেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হব।’’

Sound Pollution West Bengal Pollution Control Board Environment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy