Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Dengue

পুরসভার আধিকারিকের পদ খালি, ডেঙ্গি-আতঙ্কে ১১৫ নম্বর ওয়ার্ড

দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক না থাকার কারণেই এলাকায় পুরসভার কাজে খামতি থাকছে। আর তার ফলে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা।

তাই ডেঙ্গি-আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না।

তাই ডেঙ্গি-আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না। ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:০৯
Share: Save:

স্থানীয় বরোয় এগজিকিউটিভ হেল্‌থ অফিসার নেই। ভেক্টর কন্ট্রোল ইন-চার্জের পদও বহু দিন ধরে খালি। অভিযোগ, দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক না থাকার কারণেই এলাকায় পুরসভার কাজে খামতি থাকছে। আর তার ফলে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। তাই ডেঙ্গি-আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না কলকাতা পুরসভার ১৩ নম্বর বরোর অন্তর্গত ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের। যদিও স্থানীয় কাউন্সিলরের দাবি, মশাবাহিত রোগের প্রকোপ রুখতে সেখানে পুর স্বাস্থ্য দফতর যথেষ্ট সচেতন।

পুরসভা সূত্রের খবর, ওই ওয়ার্ডের ব্যানার্জিপাড়া, চ্যাটার্জিবাগান, নস্করপাড়ায় ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়েই চলেছে। মঙ্গলবার ব্যানার্জিপাড়ার একই পরিবারের তিন জনকে দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে। পুর স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত উত্তরের তুলনায় দক্ষিণ কলকাতায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। দক্ষিণ কলকাতার ৭৩, ৭৪, ৮১, ৮২, ৮৩, ৯৩, ৯৭, ৯৯, ১০৬ এবং ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। তবে তাদের মধ্যেও বেশি মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ১১৫ নম্বর ওয়ার্ড। ডেঙ্গি-উদ্বেগের কথা স্বীকার করে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর রত্না শূর বুধবার বলেন, ‘‘আমিও ডেঙ্গি আক্রান্তদের কয়েক জনকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। এলাকায় ডেঙ্গি বাড়তে থাকায় বাড়ি বাড়ি নজরদারি বাড়িয়েছে পুরসভা। অনেক বাড়ির ছাদের জমা জলে ডেঙ্গির বাহক এডিস ইজিপ্টাইয়ের লার্ভা মিলেছে। আমরা সকলকে সতর্ক থাকতে বলেছি।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, ১৩ নম্বর বরোয় দীর্ঘদিন ধরে এগজিকিউটিভ হেল্‌থ অফিসার নেই। ১৪ নম্বর বরোর এগজিকিউটিভ হেল্‌থ অফিসারই যৌথ ভাবে দু’টি বরোর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। আবার প্রতিটি বরোয় এক জন ভেক্টর কন্ট্রোল ইন-চার্জ (ভিসিআই) থাকার কথা থাকলেও ১৩ নম্বর বরোর ওই পদ দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা পড়ে রয়েছে। পুর স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশের অভিযোগ, দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক না থাকায় এলাকায় স্বাস্থ্য দফতরের কাজে খামতি থাকছে। ফলে এলাকায় বাড়ছে ডেঙ্গি। যদিও রত্নার দাবি, ‘‘ওয়ার্ডে পরিষেবামূলক কাজের কোনও সমস্যা হচ্ছে না। মশাবাহিত রোগের প্রকোপ রুখতে স্বাস্থ্য দফতর যথেষ্ট সচেতন।’’

ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে রবিবার রাতে মৃত্যু হয় শর্মিলা চট্টোপাধ্যায় নামে ব্যানার্জিপাড়ার বাসিন্দা এক প্রৌঢ়ার। পুরসভা সূত্রের খবর, ওই প্রৌঢ়ার ভাড়া বাড়ির আশপাশের সব ক’টি বাড়িতেই থাবা বসিয়েছে ডেঙ্গি। শর্মিলার প্রতিবেশী রাখি সিংহ বলেন, ‘‘আমার মা, দাদা, বৌদি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। নিজের বাড়ির দিকের আরও দু’জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। ভীষণ আতঙ্কে আছি।’’ চ্যাটার্জিবাগানের বাসিন্দা বাসুদেব সাহা জানাচ্ছেন, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে তাঁর কাকা দক্ষিণ কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। কিন্তু খরচের ধাক্কায় বাধ্য হয়ে তাঁকে এ দিনই সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। আর এক স্থানীয় বাসিন্দা তাপস দত্তের কথায়, ‘‘দুই মেয়ে-সহ আমার ডেঙ্গি হয়েছিল। মেয়েদের হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছিল। ওরা সদ্য হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছে। শারীরিক ভাবে এখনও আমরা ভীষণ দুর্বল।’’

ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা বরো চেয়ারপার্সন রত্না জানান, জ্বর নিয়ে পুর ক্লিনিকে ক্রমশ ভিড় বাড়ছে। সেখানে আসা সকলেরই ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গির পরীক্ষা করানো হচ্ছে। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, ‘‘১১৫ নম্বর ওয়ার্ডে পুর স্বাস্থ্য দফতর-সহ একাধিক দফতর প্রতিদিনই যৌথ অভিযান করছে। কোথাও জল জমে থাকলে নোটিস দেওয়া হচ্ছে। একাধিক বাড়িতে নোটিস পাঠানো হয়েছে। নাগরিকদের সতর্ক থাকা খুবই জরুরি। কোনও ভাবেই জল জমতে দেওয়া যাবে না। বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখুন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue KMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE