বছর ঘুরতেই একই ছবির পুনরাবৃত্তি!
কোথাও রাস্তা জুড়ে বড় বড় গর্ত। কোথাও পিচ উঠে উঁকি দিচ্ছে ইট-খোয়া। কোথাও আবার গর্ত ঢাকতে চাপা দেওয়া সিমেন্টের চাঁই। এমনই অবস্থা হাওড়া ব্রিজ সংলগ্ন রাস্তাগুলির।
নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলিকে কোনও দিনই পাকাপোক্ত ভাবে সারানো হয় না। প্রতি বছরই তাপ্পি দেওয়া হয়। ফলে প্রতি বর্ষায় একই ছবি ফিরে আসে হাওড়া স্টেশন ও হাওড়া ব্রিজ সংলগ্ন সব রাস্তায়। অভিযোগ, ভাল ভাবে সারালে ফি বছর কয়েক কোটি টাকা নষ্ট হয় না। ফলে প্রশ্ন উঠেছে এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা মেরামতির মান নিয়ে।
হাওড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সেতু সংলগ্ন জিআর রোড, মুখরাম কানোরিয়া রোড, হাওড়া ব্রিজ আন্ডারপাস ও স্টেশনে যাওয়া-আসার রাস্তা সবই রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)।
হাওড়া সিটি পুলিশের ট্রাফিক দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘এই ধরণের ব্যস্ত রাস্তায় কেন ম্যাস্টিক অ্যাসফল্ট না করে প্রতি বছর বিটুমিন দিয়ে তাপ্পি দেওয়া হয় বোঝা যায় না।’’ ওই পুলিশকর্তা জানান, পুলিশের তরফে বর্ষার আগে রাস্তা খারাপের অভিযোগ কেএমডিএ-কে বার বার জানানো হয়েছে। কিন্তু সারানো হয়নি। আর তার জেরেই বর্তমানে হাওড়া ব্রিজ সংলগ্ন সমস্ত চত্বর ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। যত দিন যাচ্ছে যানবাহনের চাপে ভাঙন আরও বাড়ছে। বাড়ছে দুর্ঘটনাও। যানজট হয়ে দাঁড়িয়েছে নিত্য দিনের ঘটনা।
যদিও হাওড়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেএমডিএ-র এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার তপন তালুকদারের দাবি, ‘‘বর্ষার আগে ওই সব রাস্তা খুব একটা খারাপ হয়নি। পরবর্তীকালে কয়েক জায়গায় ছোট গর্ত হয়েছিল। সেগুলি সারাতে টেন্ডার হয়। অর্থও বরাদ্দ হয়। কিন্তু কাজ শুরুর সময়ে মারাত্মক ভাবে বর্ষা শুরু হওয়ায় মেরামত করা যায়নি।’’ তপনবাবু দাবি, রাস্তা মেরামতির যন্ত্রপাতি ও মালমশলা চলে এসেছে। কিন্তু বৃষ্টির জন্য শুরু করা যায়নি।
কিন্তু প্রতি বছর কেন এমন হয়? এ প্রশ্নের উত্তর অবশ্য সরাসরি দেননি কেএমডিএ-র সুপারিন্টেন্ডেট ইঞ্জিনিয়ার উদয়ন মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘সম্প্রতি হাওড়ার রাস্তার পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিলাম। প্রতি বছর ওই সব রাস্তায় কেন গর্ত হচ্ছে তার কারিগরি কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তবে কেএমডিএ-এর ইঞ্জিনিয়াদের একাংশের মতে, ব্রিজের সমস্ত রাস্তা এ ভাবে প্রতি বছর জোড়াতালি দিয়ে না সারিয়ে ম্যাস্টিক অ্যাসফল্ট দিয়ে তৈরি করা দরকার। এতে অবশ্য দেড়-দু’কোটি টাকা খরচ হবে। কিন্তু রাস্তা ৫-৬ বছর ভাল থাকবে।