Advertisement
E-Paper

বাসের আকাল, ট্রেনে বিভ্রাট, ভোগান্তি চরমে

গাড়ি চালকদের উপরে পুলিশি জুলুম বন্ধ-সহ বিভিন্ন দাবিতে এ দিন বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনগুলি দেশ জুড়ে পরিবহণ ধমর্ঘটের ডাক দিয়েছিল। সিটুর ডাকা পরিবহণ ধর্মঘটের প্রভাব পড়ে ধূলাগড় থেকে সাঁতরাগাছি হয়ে শিয়ালদহ রুটের বাসগুলির উপরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৮ ০২:২৫
নিরুপায়: গন্তব্যে পৌঁছতে ঝুঁকি নিয়েই ওঠা মালবাহী গাড়িতে। মঙ্গলবার, হাওড়া স্টেশনে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

নিরুপায়: গন্তব্যে পৌঁছতে ঝুঁকি নিয়েই ওঠা মালবাহী গাড়িতে। মঙ্গলবার, হাওড়া স্টেশনে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

একদিকে বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনের ডাকা পরিবহণ ধর্মঘটের জেরে বাসের আকাল, অন্য দিকে পূর্ব রেলের বেলুড় স্টেশনের কাছে ওভারহেড লাইনের তার ছিঁড়ে বিপত্তি— এই জোড়া ফলায় মঙ্গলবার হাওড়ায় চরম ভোগান্তি হল সাধারণ মানুষের। রেল সূত্রে খবর, সোমবারও তাদের হাই ভোল্টেজ তারে বিদ্যুৎ সংযোগ বারবার বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়ে সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত দক্ষিণ পূর্ব রেলে ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়েছিল।

গাড়ি চালকদের উপরে পুলিশি জুলুম বন্ধ-সহ বিভিন্ন দাবিতে এ দিন বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনগুলি দেশ জুড়ে পরিবহণ ধমর্ঘটের ডাক দিয়েছিল। সিটুর ডাকা পরিবহণ ধর্মঘটের প্রভাব পড়ে ধূলাগড় থেকে সাঁতরাগাছি হয়ে শিয়ালদহ রুটের বাসগুলির উপরে। কোনা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে চলা এমন প্রায় আড়াইশো বাস ধর্মঘটে সামিল হওয়ায় সকাল থেকেই সমস্যা শুরু হয়। সাঁতরাগাছি বাস অপারেটর্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গোপাল ঘোষ বলেন, ‘‘পরিবহণ কর্মচারীরা যে পুলিশের জুলুমের প্রতিবাদ করছেন তা এই ধর্মঘট প্রমাণ করে দিয়েছে।’’

এই ধর্মঘটের জেরে দিনের শুরুতেই সাঁতরাগাছি স্টেশনে ট্রেন থেকে নামার পরে বাস না পেয়ে চরম সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা। অভিযোগ, সরকারি বাস থাকলেও, তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় কম। উপায়ান্তর না দেখে নিত্যযাত্রীদের অনেকেই সাঁতরাগাছি স্টেশন থেকে লরি, বড় গাড়ি ভাড়া করে গন্তব্যে পৌঁছনোর চেষ্টা করেন। যাত্রীদের অভিযোগ, এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কিছু বেসরকারি পরিবহণ সাঁতরাগাছি থেকে শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছতে দশ-পনেরো গুণ ভাড়া হেঁকেছে। বাস না পেয়ে সাঁতরাগাছি স্টেশনের উল্টোদিকে কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে দাঁড়িয়েছিলেন সমর্পিতা সিকদার। তিনি বলেন, ‘‘প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি। এত ভিড় যে একটা বাসেও উঠতে পারেনি। একটা বাস যাও বা পেয়েছিলাম কন্ডাক্টর শিয়ালদহ যেতে ৫০ টাকা ভাড়া চাইলেন।’’

সড়ক পথে এই দুর্ভোগ চলাকালীনই বেলুড় স্টেশনের ২ নম্বর লাইনে আপ তারকেশ্বর লোকাল ছাড়ার পরেই ওভারহেড তার ছিঁড়ে প্যান্টোগ্রাফ ভেঙে যায় বলে রেল সূত্রে খবর। ফলে ট্রেন চলাচলও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। হাওড়া-বর্ধমান শাখার আপ লাইনে এই ঘটনার রেশ গিয়ে পড়ে ডাউন লাইনেও। কিছুক্ষণের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখাতেও। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ৮টা ৫৪ নাগাদ তার ছিঁড়ে প্যান্টোগ্রাফ ভাঙার পরেই আপ লাইনের সব ট্রেনকে ডাউন লাইন দিয়ে চালাতে গিয়ে ডাউন লাইনের ট্রেনগুলিকে বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। যে ট্রেনগুলি হাওড়া থেকে ছাড়ার কথা তারা প্ল্যাটফর্ম না পেয়ে দীর্ঘক্ষণ স্টেশনের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে।

প্ল্যাটফর্ম ফাঁকা না থাকায় দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ট্রেনগুলিকে সাঁতরাগাছিতে থামিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে নেমেও সড়ক পথে কলকাতায় পৌঁছতে গিয়ে বাস না পেয়ে নাভিশ্বাস উঠে যায় অফিস যাত্রী থেকে শুরু করে স্কুল ও কলেজের পড়ুয়াদের। পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিনের ঘটনার জেরে ৩২টি লোকাল ট্রেন বাতিল করতে হয়। ওভারহেড তার মেরামতির পরে দুপুর ১টা থেকে ট্রেন চলাচল ফের শুরু হয়। তবে পরিষেবা স্বাভাবিক হতে রাত হয়ে যায়। পূর্ব রেলের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রচণ্ড বৃষ্টির জন্য মেরামতির কাজে সমস্যা হয়েছে। তাই এত দেরি হয়েছে। তবে ট্রেন বন্ধ হয়নি। দেরিতে চলেছে।’’

Strike Bus Train
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy