E-Paper

শহরের তিনটি ইউনিটে সম্পত্তিকর বাবদ আদায় কমল

চলতি অর্থবর্ষ শেষ হতে মাত্র তিন মাস বাকি। অবসরপ্রাপ্ত পুরকর্মীরা তাঁদের প্রাপ্য থোক টাকা (গ্র্যাচুইটি, কমিউটেশন) পাচ্ছেন না গত এক বছর ধরে।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৫২
পুরসভার আয়ের বেশির ভাগ আসে সম্পত্তিকর থেকেই।

পুরসভার আয়ের বেশির ভাগ আসে সম্পত্তিকর থেকেই। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

চলতি অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত সম্পত্তিকর সংগ্রহের পরিমাণ গত অর্থবর্ষের তুলনায়
বাড়লেও তা আশানুরূপ নয়। বরং, কলকাতার দক্ষিণ শাখায় সম্পত্তিকর সংগ্রহের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় কমেছে প্রায় সাড়ে চার শতাংশ। সম্পত্তিকর সংগ্রহের পরিমাণ কমেছে টলি ট্যাক্স ডিপার্টমেন্ট (টিটিডি) এবং ১১ নম্বর বরো এলাকাতেও।

চলতি অর্থবর্ষ শেষ হতে মাত্র তিন মাস বাকি। অবসরপ্রাপ্ত পুরকর্মীরা তাঁদের প্রাপ্য থোক টাকা (গ্র্যাচুইটি, কমিউটেশন) পাচ্ছেন না গত এক বছর ধরে। কাজ করেও ঠিকাদারেরা গত তিন বছরের বিলের বকেয়া পাচ্ছেন না। পুরসভার আয়ের বেশির ভাগ আসে সম্পত্তিকর থেকেই। এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘চলতি বছরে সম্পত্তিকর বাবদ আদায় আশানুরূপ নয়। এ ভাবে চলতে থাকলে পুরসভার কোষাগারের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়বে। এর পরে কর্মীদের বেতন দেওয়া মুশকিল হয়ে যাবে।’’

পুরসভার কর রাজস্ব বিভাগ সূত্রের খবর, গত অর্থবর্ষে (২০২৩-২৪) ১ এপ্রিল থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সম্পত্তিকর বাবদ আদায় হয়েছিল ৯৭৯ কোটি ৭৬ লক্ষ ৯ হাজার ৪০৪ টাকা। চলতি অর্থবর্ষে (২০২৪-২৫) ওই সময়কালে সম্পত্তিকর সংগ্রহের পরিমাণ ৯৮৭ কোটি ৫০ লক্ষ ৭২ হাজার ৮৯৩ টাকা। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় এ বার সম্পত্তিকর বাবদ আদায় বেড়েছে মাত্র ৭ কোটি ৭৪ লক্ষ ৬৩ হাজার ৪৮৯ টাকা। লক্ষণীয়, শহরের দক্ষিণ অংশে (এসি সাউথ) গত অর্থবর্ষের এই সময়ে সম্পত্তিকর সংগ্রহের পরিমাণ ছিল ৪৩২ কোটি ২৫ লক্ষ ৩৬ হাজার ৭৮৮ টাকা। চলতি অর্থবর্ষে যা কমে হয়েছে ৪১৪ কোটি ৩৮ লক্ষ ২২ হাজার ২০৮ টাকা। অর্থাৎ, সম্পত্তিকর কমেছে প্রায় সাড়ে চার
শতাংশ। গড়িয়াহাটের টলি ট্যাক্স বিভাগে গত বছরের তুলনায় এ বার সম্পত্তিকর আদায় কমেছে প্রায় সাড়ে ছ’শতাংশ। ১ এপ্রিল থেকে ২৩ ডিসেম্বর সময়সীমায় গত অর্থবর্ষের তুলনায় এ বছর ওই বিভাগে সম্পত্তিকর আদায় কমেছে ৭ কোটি ৫৯ লক্ষ ৭ হাজার ৩৯৫ টাকা।

আবার ১১ নম্বর বরো এলাকায় গত বছরের তুলনায় এ বছর ৮৬ লক্ষ ২১ হাজার ১৩৩ টাকা
সম্পত্তিকর আদায় কমেছে। ২০২৪-এর মার্চে গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বেআইনি বাড়ি ভেঙে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সেই ঘটনার পরে বেআইনি নির্মাণ ঠেকাতে তৎপর হন পুর কর্তৃপক্ষ। বেআইনি নির্মাণ দেখলেই ভেঙে ফেলার নির্দেশাবলী দিয়ে ‘এসওপি’ তৈরি হয়। কিন্তু বাস্তবে গার্ডেনরিচে বেআইনি নির্মাণের রমরমা বেড়েছে বলে অভিযোগ।

পুরসভা সূত্রের খবর, গত অর্থর্ষের তুলনায় এ বছর গার্ডেনরিচে সম্পত্তিকর আদায়ের পরিমাণ বেড়েছে ৩৬.৩৪ শতাংশ। আবার ১২ নম্বর বরো এলাকায় গত বছরের তুলনায় এ বছর সম্পত্তিকর আদায় বেড়েছে মাত্র ০.৪৮ শতাংশ। বেহালা, অর্থাৎ এসএসইউ বা সাউথ সাবার্বান ইউনিটে সম্পত্তিকর আদায় বেড়েছে মাত্র ১১.৮০ শতাংশ। জোকা
ইউনিটে সম্পত্তিকর বেড়েছে ১৩.৯৩ শতাংশ।

পুরসভার কর রাজস্ব দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘বহু মানুষ অনাদায়ী মোটা অঙ্কের কর পুরসভাকে দিচ্ছেন না। এই টাকা পেলে শহরের দক্ষিণ শাখায় রাজস্বের পরিমাণ বাড়বে।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, সম্পত্তিকর আদায়ের পরিমাণ সন্তোষজনক না হওয়ায় চলতি মাসেই পুর কর্তৃপক্ষ কর রাজস্ব বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Tax Calcutta Municipal Corporation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy