সম্পত্তিকর নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে বিধাননগর পুরসভা।
সল্টলেকের সব থেকে অভিজাত পাড়া করুণাময়ী এলাকা। অথচ সেখানে বাড়ির মালিকদের সম্পত্তিকর তিন মাসে (কোয়ার্টারলি) মাত্র ৬-৮ টাকা। আবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন লাগোয়া পূর্বাচল এলাকায় সম্পত্তিকর ৮-১০ টাকা। অভিজাত এলাকায় এই কর কাঠামো নিয়ে পরিষেবা দিতে গিয়ে নাজেহাল দশা বিধাননগর পুরসভার। ফলে সম্পত্তিকর পুনর্মূল্যায়নে উদ্যোগী হয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
২০১৫ সালে বিধাননগর মিউনিসিপ্যালিটি থেকে কর্পোরেশনে পরিণত হয়। ওয়ার্ডের সংখ্যা ২৫ থেকে বেড়ে হয় ৪১। এক পুরকর্তা জানান, কর্পোরেশন হওয়ার পরে পুর পরিষেবা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু কর কাঠামোয় কোনও পরিবর্তন হয়নি। বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘‘সম্পত্তিকরের একটি বিল ছাপাতে যেখানে খরচ হচ্ছে ১৬ টাকা, সেখানে করুণাময়ীতে সম্পত্তিকর বাবদ আদায় হচ্ছে (তিন মাসে) ৬ টাকা। পুরসভার পক্ষ থেকে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে চিঠি দিয়ে সম্পত্তিকর পুনর্মূল্যায়নের জন্য বলা হয়েছে। সেই মতো কেন্দ্রীয় মূল্যায়ন পর্ষদকে দিয়ে কর নির্ধারণ করা হবে।’’ সব্যসাচীবাবু জানান, পুরসভাগুলি সরকারের অনুদানের টাকায় চলছে। তার থেকে রেহাই পেতে হলে স্বনির্ভর হতে হবে। সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই করের পুনর্মূল্যায়ন জরুরি।
এক পুরকর্তা জানান, বর্তমানে বিধাননগর পুরসভা তিন ধরনের কর নিচ্ছে। ২০১৫ সালে রাজারহাট-গোপালপুর এলাকা বিধাননগর পুরসভার অধীনে আসে। সেখানকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে ২০০৫ সালের হিসেবে কর নেওয়া হয়। আবার সল্টলেকের সাবেক ২৫টি ওয়ার্ডে সম্পত্তিকর নেওয়া হয় ১৯৭৭ সালের মূল্যায়ন অনুযায়ী। মহিষবাথান এলাকা পঞ্চায়েত থেকে পুরসভায় এলেও সেখানে পঞ্চায়েতের মূল্যায়ন অনুযায়ী কর নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু একই পুরসভায় তিন রকমের সম্পত্তিকর থাকতে পারে না। তাই নতুন করে মূল্যায়ন দরকার। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরও এ বিষয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিধাননগর পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০০ সালে সল্টলেকের একটি সংগঠন বর্ধিত সম্পত্তিকর নেওয়া হচ্ছে বলে একটি মামলা করে। সেই মামলার নিষ্পত্তির আগে নতুন করে করের মূল্যায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই মামলাকারীদের সঙ্গে কথা বলে মামলা তোলার বিষয়ে প্রস্তুতি চলছে পুরসভায়। সেন্ট্রাল ভ্যালুয়েশন বোর্ডের তরফেও জানা গিয়েছে, মামলা উঠে গেলেই পুনর্মূল্যায়ন সম্ভব।
বিধাননগর পুরসভার এক পদস্থ কর্তার কথায়, সল্টলেকের ২৫টি ওয়ার্ডে ‘হোল্ডিং’ রয়েছে প্রায় ২৫ হাজার। ৪১টি ওয়ার্ড নিয়ে মোট ‘হোল্ডিং’-এর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে প্রায় দেড় লক্ষ। বর্তমানে সম্পত্তিকর বাবদ পুরসভার আয় হচ্ছে ২০ কোটি টাকা। পুনর্মূল্যায়ন করা হলে আয় বেড়ে হবে প্রায় ৮০ কোটি টাকা।